ঝিনাইদহে লাইসেন্স নবায়ন নেই ১৬৯ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের

মানবজমিন ঝিনাইদহ প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

ঝিনাইদহ জেলার ১৬৯টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর কয়েক বছর যাবত কোনো লাইসেন্স নবায়ন নেই। ঝিনাইদহ সদর ও ৫টি উপজেলার ক্লিনিক ও প্যাথলজি মালিকগণ লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে মাসের পর মাস ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা পর্যায়ের ক্লিনিকগুলোতে অহরহ অপচিকিৎসা হচ্ছে। ডাক্তারের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু ঘটছে। ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসার উন্নত পরিবেশ নেই। নেই সর্বক্ষণ চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্স। ১০ বেডের পরিবর্তে শয্যা বাড়িয়ে ৫০/৬০ জন করে রোগী ভর্তি করা হয়। নীতিমালা ভঙ্গ করার পরও এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ঘুষ দিয়ে নতুন লাইসেন্স পাচ্ছে। আবার অনেকে পুরনো লাইসেন্সও নবায়ন করছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হরিণাকুণ্ডু ও মহেশপুরে চার ক্লিনিকে পাঁচজন প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তার ফলাফল এখনো দৃশ্যমান হয়নি। তবে ডাক্তারের বিরুদ্ধে ডাক্তার নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি কতটুকু শাস্তি নিশ্চিত করবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস থেকে তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় মোট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টরের সংখ্যা ১৭০টি। এর মধ্যে ক্লিনিক রয়েছে ৮১টি। সূত্র মতে কোটচাঁদপুরের একটি ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন আছে। বাকি ১৬৯টি ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন নেই। এ ছাড়া ৮৯টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একটারও লাইসেন্স ২০১৮ সাল থেকে নবায়ন করা হয়নি। সবগুলোর লাইসেন্স নবায়ণ প্রক্রিয়াধীন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের নওশের আলী, নজরুল ইসলাম, ইসরাইল হোসেন ও নজরুল ইসলাম (২) ক্লিনিকের এই ফাইলগুলো দেখভাল করেন। অভিযোগ উঠেছে অর্থের বিনিময়ে তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে চিকিৎসার জন্য অনুপযুক্ত এসব ক্লিনিকের কাগজপত্র ঠিক করে বহাল রাখার পক্ষে রিপোর্ট দেন। ক্লিনিকের ফাইল ধরে কাজ করলে ভাল উপার্জন হয় বলেও সিভিল সার্জন অফিসে কথিত আছে। সরজমিন সদর উপজেলার ডাকবাংলা, বৈডাঙ্গা, সাধুহাটী, বরোবাজার, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, শৈলকুপা, হরিণাকুণ্ডু, মহেশপুরের নেপারমোড় ও খালিশপুরের ক্লিনিকগুলোতে সর্বক্ষণ ডাক্তার থাকে না। ক্লিনিক মালিক, ছেলে. স্ত্রী ও মেয়েরাই কোনো কোনো ক্লিনিকের স্টাফ সেজে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপারেশন থিয়েটারে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নাই ও রোগীর শয্যারুমে দুর্গন্ধ নোংরা পরিবেশ বিরাজ করে। নেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনো নার্স। যেকারণে বেশির ভাগ রোগী বিপদে পড়লে নার্সদের দ্বারা তেমন কোনো সহায়তা পান না। ফলে প্রায়ই এসব ক্লিনিকে ছোটখাট অপারেশনেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সিভিল সার্জন অফিসে গিয়ে কয়েকটি ক্লিনিকের ফাইল ঘেটে দেখা গেছে, শর্তপূরণ করে তাদের কাগজপত্র খুবই মজবুতভাবে তৈরি করা হয়েছে। অথচ তাদের ক্লিনিকের পরিবেশ সিভিল সার্জন অফিসের ঐ ফাইলের কাগজপত্রের সঙ্গে কোনো মিল নাই। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম এ ব্যাপারে জানান, জেলার কোনো ক্লিনিকের এখন লাইসেন্স নেই। সব নবায়নের জন্য অপেক্ষমান। তিনি বলেন, এখন অনলাইনে সরাসরি আবেদন নেয়া হচ্ছে। ঢাকা থেকে যে সব ক্লিনিকের রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে আমরা সেগুলো প্রেরণ করছি। তিনি বলেন, ২৩শে আগস্টের মধ্যে সবার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ণ করা না হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়া হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও