খুলনার শিল্পাঞ্চলে নিথর নীরবতা
সরকারি পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্তে নীরব হয়ে পড়েছে খুলনার শিল্পাঞ্চল। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দেওয়া মিল বন্ধের ঘোষণায় সাধারণ শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। অনিশ্চিত ভবিষ্যত এবং সামনের দিনগুলোতে পরিবার নিয়ে কীভাবে বাঁচবেন এটাই এখন তাদের ভাবনার বিষয়। যদিও সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে শ্রমিকরা কোনোভাবে ঠকবেন না। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, ‘সরকার বিজেএমসি পরিচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে পাটকল শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন, কারও দুশ্চিন্তার কারণ নেই।’
তবে মিল বন্ধের ঘোষণায় কোনও শ্রমিক খুশি হতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক মো. সরোয়ার। তিনি বলেন, চাকরির আর দুই মাস বাকি ছিল। কিন্তু মিল বন্ধ করে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক ঘোষণায় খুশি হতে পারছি না। কারণ সরকার ঘোষণা দিলেও টাকা পাওয়ার বিষয়টি অনেক কঠিন। সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে টাকা দেওয়াতো আর শ্রমিকের হাতে টাকা আসা না।
মিল বন্ধের ঘোষণায় শ্রমিক পরিবারগুলো কঠিন অবস্থায় পড়েছে বলে জানান ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক মো. মিন্টু। তিনি বলেন, চাকরি হারিয়ে কেউ খুশি হতে পারে না। আমাদের মজুরি অনিয়মিত থাকলেও শিল্পাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বাকিতে পণ্য সামগ্রী দিতেন। তবে চাকরি না থাকায় এখন ওই সব ব্যবসায়ীরাও উদারতাকে সংকুচিত করে নিয়েছেন। আমরা আনন্দ সেদিনই করবো, যেদিন সরকার তার ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিকদের বকেয়া সম্পূর্ণ পরিশোধ ও যোগ্য শ্রমিকদের নতুনভাবে নিয়োগ দিয়ে পাটকলগুলো ফের চালু করবে।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের অপর শ্রমিক মতিয়ার রহমান বলেন, আমরা এখন আর সড়কে গিয়ে উচ্ছ্বাস করতে পারি না। ছেলে-মেয়ের মুখের দিকে তাকাতেও এখন লজ্জা হয়। টাকা না থাকায় তাদেরকে নিয়মিত খাবারও দিতে পারছি না।