কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বাংলাদেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ও আমদানি : একটি পর্যালোচনা

কালের কণ্ঠ প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২০, ১৭:০১

বাংলাদেশের জনসাধারণের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর অন্যতম অপরিহার্য ও জনপ্রিয় খাদ্য উপকরণ হলো পেঁয়াজ। পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্যে পেঁয়াজ একটি মৌলিক উপকরণ; এবং প্রায় সব রান্নায়ই মসলা হিসেবে ব্যবহূত হয়। পেঁয়াজে আমিষ, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সালফার ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং রোগ প্রতিরোধী নানা ঔষধি গুণের কারণে সারা বিশ্বেই এর বিস্তর চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই কমবেশি পেঁয়াজের আবাদ হলেও বিশ্বের মোট উত্পাদনে চীন (২৫ শতাংশ) ও ভারত (২৩ শতাংশ) প্রায় অর্ধেক জোগান দিয়ে থাকে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে পেঁয়াজের উৎপাদন যেমন ক্রমান্বয়ে বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে এর আমদানিনির্ভরতা। পরিসংখ্যানে কিছুটা গরমিল থাকলেও গত চার-পাঁচ বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন ১৭-১৮ লাখ মেট্রিক টনে মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে (বিবিএস, ২০১৭, ২০১৯)। বিপরীতে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে গত পাঁচ বছরে আমদানির পরিমাণ প্রায় আড়াই গুণ বেড়েছে।

বাংলাদেশে পেঁয়াজের আবাদ, উৎপাদন ও ফলন
বিগত ১০ বছরের পেঁয়াজের উৎপাদনচিত্র থেকে দেখা যায়, ২০০৮-০৯ সালে ১.০৮ লাখ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে উৎপাদন পাওয়া গিয়েছিল ৭.৩৫ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ হেক্টরপ্রতি ফলন হয়েছিল ৬.৮১ টন। পরবর্তী ১০ বছরে আবাদি জমি ও উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে ১.৭৮ লাখ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন পাওয়া গেছে ১৭.৩৮ লাখ টন। অর্থাৎ ১০ বছরে চাষাধীন জমির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ এবং উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে ১৩৬ শতাংশ বা ২.৩৬ গুণ। মূলত নতুন জাত ও উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহারের দ্বারা হেক্টরপ্রতি ফলন বৃদ্ধির কারণে এই বর্ধিত উৎপাদন পাওয়া গেছে। এই সময়কালে হেক্টরপ্রতি ফলন ৬.৮১ টন থেকে বেড়ে ৯.৭৬ টন হয়েছে।

বিগত বছরগুলোতে পেঁয়াজের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়লেও তা অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে যেখানে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে ১.৩৪৭ লাখ টন, সেখানে ২০১৭-১৮ সালে আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০.৬৪৩ লাখ টন। অর্থাৎ ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ২.৩৬ গুণ আর আমদানি বেড়েছে ৭.৯ গুণ। ২০১৪-১৫ সাল থেকে গত চার বছরে উৎপাদনের পরিমাণ স্থিতিশীল (১৭-১৮ লাখ টন) থাকলেও আমদানির পরিমাণ সোয়া চার লাখ টন থেকে বেড়ে সাড়ে ১০ লাখ টন হয়েছে। ২০১৪-১৫ সালে দেশে পেঁয়াজের জোগান (অভ্যন্তরীণ উৎপাদন + আমদানি) যেখানে ২১.২৭৪ লাখ টন ছিল, সেখানে চার বছরের ব্যবধানে ২০১৭-১৮ সালে তা বেড়ে ২৮.০২৩ লাখ টন হয়েছে। অর্থাত্ পেঁয়াজের জোগান বেড়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ।

পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা
পেঁয়াজের জোগান বৃদ্ধির এই প্রবণতাকে চাহিদা বৃদ্ধির ফল বলে গণ্য করা যেতে পারে। হাউসহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে ২০১৬ প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০১০ সালে মাথাপিছু দৈনিক পেঁয়াজের ভোগ ছিল ২২ গ্রাম, যা ২০১৬ সালে ৩১.০৪ গ্রামে উন্নীত হয় (বিবিএস, ২০১৯)। অর্থাত্ বার্ষিক মাথাপিছু ১.৫১ গ্রাম হারে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে। সেই হিসাবে ২০১৭-১৮ সালে পেঁয়াজের মাথাপিছু দৈনিক চাহিদা দাঁড়ায় (৩১.০৪+১.৫২×২=) ৩৪.০৮ গ্রাম। ২০১৭-১৮ সালের জনসংখ্যা দ্বারা গুণ করে ভোগের জন্য পেঁয়াজের মোট বার্ষিক চাহিদা পাওয়া যায় (৩৪.০৬×১৬.৫০×৩৬৫/১০০০=) ২০.৫১ লাখ টন। তা ছাড়া পেঁয়াজের বীজ উত্পাদন এবং মুড়িকাটা পেঁয়াজ উত্পাদনের জন্য পেঁয়াজের ব্যবহার রয়েছে। বাংলাদেশে মোট ১.৭১ লাখ হেক্টর (পেঁয়াজ আবাদের জমির ৮২ শতাংশ) জমি আবাদের জন্য প্রয়োজনীয় চারা উত্পাদনে যে বীজের প্রয়োজন হয় তার জন্য পেঁয়াজ কন্দ লাগে ০.০৪৩ লাখ টন। আবার ০.৩১২ লাখ হেক্টর (পেঁয়াজ আবাদের জমির ১৫ শতাংশ) জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উত্পাদনের জন্য পেঁয়াজ কন্দের প্রয়োজন হয় ০.৪৬৮ লাখ টন (হেক্টরপ্রতি ১.৫ টন হিসাবে)। এর বাইরে পেঁয়াজের আরেকটি ব্যবহার হলো প্রসেসিংশিল্প ও ঔষধশিল্প, বিশেষ করে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার। বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, এ ক্ষেত্রেও প্রায় ১ লাখ টন পেঁয়াজের ব্যবহার রয়েছে। তাহলে সব মিলিয়ে পেঁয়াজের বার্ষিক নিট চাহিদা দাঁড়ায় ২২.০২১ লাখ টন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও