কোভিড-নন কোভিড ভাগ করা আত্মঘাতী: চীনা বিশেষজ্ঞ দল
বাংলাদেশ সফর শেষে ১০ সদস্যের চীনা বিশেষজ্ঞ দল তাদের সুপারিশে বলেছে, লক্ষণ ও উপসর্গহীন রোগী বেশি হলে কোভিড-নন কোভিড রোগীদের ভাগ করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
সফরকালে তারা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, কোভিড-১৯ নিয়ে গঠিত বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করে। এ সময় তারা কমিটিগুলোর কাছ থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়েছে এবং তাদের পরামর্শ দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি চীনা বিশেষজ্ঞ দল। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি পরিদর্শন ও করোনা রোধে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে গত ৮ জুন ঢাকায় আসে ১০ সদস্যের চীনা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলটি এবং ২২ জুন দেশে ফিরে যায় তারা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক শাহনীলা ফেরদৌসী জানান, করোনা টেস্টের সংখ্যা কীভাবে বাড়ানো যায়, এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দল বলেছে-তারা তাদের দেশে দিনে ১০ লাখ টেস্ট করতো। ২৪ ঘণ্টা ল্যাব চালু থাকতো। তাদের অনেক ল্যাব ছিল। তবে এ সংক্রান্ত বিশদ প্রতিবেদন তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে পাঠাবে।’
অধ্যাপক শাহনীলা ফেরদৌসী বলেন, ‘ইনফেকশন প্রিভেনশন, মানসিক স্বাস্থ্য কীভাবে ম্যানেজ হয়েছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে তারা কথা বলেছেন। আমাদের পক্ষ থেকে যেসব জানতে চাওয়া হয়েছে, সেসব বিষয়ে তারা মতামত দিয়েছেন।’
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চীনের বিশেষজ্ঞ দল দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। বিভাগীয় পরিচালক, সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভিন্ন শাখার পরিচালকসহ কোভিড-১৯ নিয়ে গঠিত বিভিন্ন কমিটি, চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন, বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে তারা বৈঠক করেছেন। চীনা বিশেষজ্ঞরা এসব প্রতিষ্ঠান ও কমিটির কথা শুনেছেন, প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তারা কী কী দেখেছেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য কী কী পরামর্শ থাকবে, তা নিয়ে খুব শিগগিরই একটি প্রতিবেদন তারা পাঠাবেন।
চীনা বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে এরকম দুটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ বিষয়ক সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. রিজওয়ানুল করিম। তিনি বলেন, ‘চীনে তারা টেস্ট ফ্যাসিলিটিজ বা রিস্ক প্রায়োরিটি কীভাবে ভাগ করে কাজ করেছেন, কীভাবে জোনিং সিস্টেম করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেছেন— উহান বা হুবেই প্রদেশগুলো সম্পূর্ণ পৃথক ব্যবস্থায় কাজ করে। তাই সেখানে লকডাউনসহ এ সম্পর্কিত সব পরিকল্পনা করা যত সহজ, সেটা বাংলাদেশে সহজ নয়।’