করোনা সংক্রমণ: শেষ ৫০ হাজার মাত্র ১৬ দিনে
বিশ্বের ১৮তম দেশ হিসেবে এক লাখ করোনা শনাক্তকারী দেশগুলোর তালিকায় প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশে প্রথম ৫০ হাজার শনাক্ত করতে ৮৭ দিন লাগলেও পরের ৫০ হাজারে ব্যয় করেছে ১৬ দিন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এরপর প্রথম শতক পূর্ণ করতেই লেগে যায় ৩০ দিন। এরপর গতি কিছুটা বাড়তে থাকে। সংক্রমণের এই ধাক্কায় ৩৮ দিনের মাথায় এক হাজার এবং ৫৮ দিনের মাথায় ১০ হাজার পার করে বাংলাদেশ।
তবে প্রথম ১০ হাজার করতে ৫৮ দিন লাগলেও পরের ১০ হাজার শনাক্ত হয় মাত্র ১১ দিনেই। এরপর সময়ে আরও কমে আসে। ৭ দিন, ৬ দিন ও ৫ দিনে ১০ হাজার করে শনাক্ত হতে থাকে। আর শেষ ১০ হাজার পার হয়েছে মাত্র তিন দিনে। তবে জনস্বাস্থ্যবিদেরা মনে করছেন, পরীক্ষা বাড়লে আরও কম সময়ে বেশি ব্যক্তির করোনা শনাক্ত করা সম্ভব।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, লাখ পেরোনোর পর অধিকাংশ দেশেই বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। ১০ জন রোগী যতজনকে আক্রান্ত করতে পারবে, ৫০ জন তার চেয়ে অনেক বেশি পারবে। তাই আক্রান্ত বেড়ে গেলে বড় উল্লম্ফনের প্রবণতা তৈরি হয়।
লাখের পর বড় উল্লম্ফন!
সংক্রমণের বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত ১৮টি দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। ১৮তম দেশ হিসেবে এ তালিকায় আজ ঢুকেছে বাংলাদেশ। এর আগের দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ২২ লাখ, ব্রাজিল ৯ লাখ, রাশিয়া ৫ লাখ, ভারত ৩.৬৬ লাখ পার করেছে। শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে দিনে সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার ৯৩০ জন শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ এপ্রিল। এখনো দিনে ২০ থেকে ২৫ হাজার করে শনাক্ত হচ্ছে। ইতালি, স্পেন, জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডায় করোনা এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে সংক্রমণ এখন বাড়ছে। শীর্ষ দেশগুলোর তথ্য বলছে, এক লাখ পার হওয়ার পর বড় উল্লম্ফন ঘটে সংক্রমণে। রাশিয়া ৮৯ দিনে প্রথম এক লাখ শনাক্ত করে। এরপর গড়ে প্রতি ১০ দিনে এক লাখ পার করতে থাকে দেশটি। আর ব্রাজিল প্রথম এক লাখ ছাড়ায় ৬৮ দিনে। এরপর ১১ দিনে আরও এক লাখে এবং ৬ দিনে পরের এক লাখ পার করে দেশটি। গত ২৭ মে থেকে প্রতি চার দিনে নতুন করে এক লাখ শনাক্ত হচ্ছে দেশটিতে।
এখন ভারতে দিনে ১০ হাজারের বেশি ও পাকিস্তানে ৭ হাজারের বেশি শনাক্ত হচ্ছে। ভারতে প্রথম এক লাখ পার হতে সময় লেগেছে ১১০ দিন। এরপর মাত্র ১৫ দিনেই আরও এক লাখ যুক্ত হয়। এরপর ১০ দিনে আরও এক লাখ। প্রবৃদ্ধির হার বলছে, এবার ৮ দিনেই এক লাখ পার করতে পারে দেশটি। আর পাকিস্তানে প্রথম এক লাখ হতে সময় লাগে ১০৩ দিন। পরের ৯ দিনেই ৫০ হাজার পার করেছে দেশটি।
এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরামর্শক রোগতত্ত্ববিধ মুশতাক হোসেন প্রথম আলোক বলেন, দেশে সংক্রমণের গতি এখনো মাঝারি পর্যায়ে আছে। হঠাৎ করে লাফ দিয়ে বাড়তে পারে। এখনো যদি প্রস্তাবিত লাল, হলুদ, সবুজ জোনপদ্ধতি কার্যকর করা যায়, তাহলে সংক্রমণ কমানো সম্ভব হবে। পূর্ব রাজাবাজারে যা হয়েছে, এটা প্রশংসনীয়।