আইসিটি খাতের অর্থায়নে একসঙ্গে কাজ করবে প্রাইম ব্যাংক-বেসিস
আইসিটি খাতের উদ্যোক্তাদের অর্থায়নসহ যাবতীয় ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
১৬ জুন ২০২০ একটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলেনের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেল আহমেদ এবং বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির আনুষ্ঠানিকভাবে এই অ্যালায়েন্সের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে দেশের সম্ভাবনাময় তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের দ্রুত সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বেসিস ও প্রাইম ব্যাংকের উদ্যোগে গঠিত এই সহজ অর্থায়ন সুবিধা আইসিটি ও আইটিইএস কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করবে। এ চুক্তি মোতাবেক বেসিসের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাইম ব্যাংক থেকে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন এবং অন্যান্য বিশেষায়িত ফাইন্যান্সিং সার্ভিস পাবে। এর ফলে আইসিটি ও আইটিই এস খাত আরও প্রবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারবে।
এই চুক্তির ফলে আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলো ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল (সিসি, ওডি ও ডিমান্ড লোন), ফিক্সড অ্যাসেট ক্রয় ও ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচারের জন্য টার্ম লোন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সল্যুশন (এলসি, এলএটিআর, আইডিবিপি), ব্যাংক গ্যারান্টি, ওয়ার্ক অর্ডার ইত্যাদি অর্থায়ন সুবিধা পাবে। ডিপোজিট সুবিধা ও ই-ট্রানজেকশনের জন্য ইন্টারনেট ব্যাংকিং - অ্যালটিচুড- সার্ভিস পাবে। লোনের জন্য দুই বছরের ব্যবসার অভিজ্ঞতা ও বেসিসের সুপারিশ পত্রের প্রয়োজন হবে। বেসিসের সদস্যবৃন্দ যাতে ঘরে বা বাসায় বসেই অনায়াশে লোনের আবেদনসহ যাবতীয় ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারে সেজন্য প্রাইম ব্যাংক রিলেশনশিপ ম্যানেজার নিয়োগ করেছে। প্রচলিত ক্রেডিট নীতিমালা ও মর্টগেজ সংক্রান্ত কারণে আইসিটি কোম্পানিগুলোর ব্যাংক লোন পেতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এই অ্যালায়েন্সের ফলে দেশের অসংখ্য আইসিটি কোম্পানি সহজে অর্থায়ন সুবিধা পাবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকস এমপি বলেন, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। আমরা করোনা ভাইরাসের কারণে বাধ্য হয়ে ডিজিটাল প্লাটফরম ব্যবহার করছি। এভাবেই আমাদের দৈনন্দিন সকল কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এভাবেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তিনি বর্তমান সংকটকালীন সময়ে আইসিটি কোম্পানীগুলোর জন্য ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যে গৃহিত এ প্রয়াসকে স্বাগত জানান।তিনি বেসিস ও আইসিটি ডিভিশন যৌথভাবে আইডিয়া, মডেল, অর্থ, টেকনোলজি এবং কোলাবরেশন এই ৫টি বিষয় নিয়ে নিয়ে কাজ করছি।
এই অ্যালায়েন্স সম্পর্কে প্রাইম ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেল আহমেদ বলেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেবার লক্ষ্যে প্রাইম ব্যাংক একাত্ব হয়ে কাজ করছে। দেশের অর্থনীতিকে বদলে দেয়ার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে দেশের সম্ভাবনাময় তথ্য প্রযুক্তি খাত। গত দুই দশকের অভাবনীয় প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে আগামী কয়েক বছরে এই খাত দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে আমি মনে করেন। উদীয়মান তথ্য প্রযুক্তি খাতের এই অগ্রযাত্রায় সাথে থাকতে প্রাইম ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই পার্টনারশিপ সম্পর্কে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, গত ২ দশকেরও বেশি সময় ধরে বেসিস দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে এবং সদস্যদের কলাণে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করে আসছে। আমরা জানি যে, বর্তমানে করোনাজনিত সংকটকালিন সময়ে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠানসমূহ মারাত্বক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। উপরন্তু সরকার ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনাও নানারকম জটিলতার কারণে পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারছে না। এরকম বিরূপ পরিস্থিতিতে র্বেসিস সদস্যদের জন্য প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড এগিয়ে এসেছে এজন্য প্রাইম ব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই। আমি আশাবাদী যে, এ চুক্তির মাধ্যমে বেসিস সদস্যবৃন্দ অনেকাংশে উপকৃত হবে।
তিনি বেসিস সদস্যদের প্রাইম ব্যাংক থেকে ভবিষ্যতে এ ধারাবাহিকতাকে আমরা অব্যাহত রাখার প্রয়াস চালিয়ে যাব। দেশের ৩০টির মতো ব্যাংক স্থানীয়ভাবে তৈরি কোর ব্যাংকিং সলিউশন্স ব্যবহার করে উল্লেখ করে তিনি ব্যাংকগুলোকে স্থানীয়ভাবে তৈরি সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পের প্রতি আস্থা এনে এ শিল্পকে বড় করতে আহ্বান জানান।