চলতি মাসেই লন্ডন যেতে পারেন খালেদা
উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডন পাঠানোর জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বিএনপি। পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন মহলে দেন-দরবারসহ বিভিন্নভাবে চেষ্টা তদবির চালানো হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষের দিকে, অথবা আগামী মাসের শুরুতেই তাকে লন্ডন পাঠানো হবে বলেও রাজনৈতিক পাড়ায় গুঞ্জন উঠেছে। জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে বিদেশ পাঠানোর আবেদন করে এরইমধ্যে সরকারের বিভিন্ন মহলে তা পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, পরিবারের সদস্য ছাড়াও এ বিষয়ে দলীয় এমপিরাও সরকারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহলের ব্যক্তিদের কাছে তদবির শুরু করছেন।
এই লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার সহযোগী ফাতেমার জন্য ভিসা প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা সরকারের সবুজ সংকেতের। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার বিষয়ে সরকার শুরু থেকেই আন্তরিক থাকলেও নানা রাজনৈতিক সমীকরণ মেলাতে গিয়ে বিলম্ব করেছে বিএনপি। দলটি না পেরেছে আন্দোলনের মাধ্যমে রাজপথ উত্তপ্ত করে দলের চেয়ারপারসনকে মুক্ত করতে, না পেরেছে আইনি প্রক্রিয়ায় সামনে এগোতে। ফলে বিএনপি'র দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিচার-বিশ্লেষণ শেষে সরকার মানবিক দিক থেকে চিন্তা করে খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছেন।
এখন আবার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সরকারের মনোভাব ইতিবাচক কিন্তু বাঁধ সেধেছে বিএনপি'র ঢাকা আর লন্ডনের দ্বিমুখী সিদ্ধান্ত। কেননা এখানে বিএনপির রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির হিসাব আছে। যেটা বিএনপি চেয়ারপারসন নিজেও জানেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা জানান, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও জামিনের শর্তের বিষয়টি মাথায় রেখেই চিকিৎসার জন্য তার লন্ডন যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে নানারকম আলোচনা হচ্ছে। তিনি বলেন, বেগম জিয়া তো শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেয়েছেন। তাই তার যোগাযোগ শর্ত বজায় রেখেই হচ্ছে।
তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন, এটাতো স্বাভাবিক। কারণ তারেক রহমান তার বড় ছেলে এবং তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাই তিনি শুধু চিকিৎসার জন্য নয় রাজনৈতিক ইস্যুতেও লন্ডন যেতে পারেন। বিএনপিপন্থী কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং বুদ্ধিজীবীরাও সরকারের কাছে তার বিদেশ যাত্রা নিয়েও সুপারিশ করেছেন বলেও জানা গেছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান বেগম খালেদা জিয়া।
পরে দুদকের আপিলে এই মামলার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। এছাড়াও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং চলতি বছরেরই ২৫ মার্চ করোনা পরিস্থিতির কারণে শর্তসাপেক্ষে নির্বাহী আদেশে জামিনে মুক্ত হন বিএনপি চেয়ারপারসন।