কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বাংলাদেশে কেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শহর এলাকায় সীমাবদ্ধ?

বিবিসি বাংলা (ইংল্যান্ড) প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২০, ১০:২৮

ঢাকার বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, বরিশালের হিজলার বাসিন্দা সুমি আক্তার মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে পরিবারের জন্যে বাড়ি গিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরেই লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় তারা সেখানেই আটকে পড়েন। কিছুদিন পরে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস করাতে শুরু করে।

"ঢাকার বাসায় ওয়াইফাই আছে। কিন্তু আমি যেখানে ছিলাম, সেখানে ব্রডব্যান্ডের কোন লাইন নেই। মোবাইল ইন্টারনেট খানিক পাওয়া যায়, কিন্তু সেটার খরচ অনেক, দেখতে না দেখতেই শেষ হয়ে যায়। কী যে সমস্যায় পড়েছিলাম!" বলছেন সুমি আক্তার।

বরগুনার পাথরঘাটার বাসিন্দা আফসানা আক্তার জানাচ্ছেন, তিনি অনলাইনে কিছু কাজ শিখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের পুরো উপজেলায় ব্রডব্যান্ডের কোন সংযোগ নেই। কোন সাইবার ক্যাফে নেই। ফেসবুকিং, অনলাইনে ইমেইল পাঠানো- যা কিছু তাকে মোবাইল ইন্টারনেটের ওপর ভরসা করতে হয়।

বাংলাদেশের সরকার বেশ কয়েক বছর ধরে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এজন্য বেশ কিছু প্রকল্পও নেয়া হয়েছে।

অনেক জেলা শহরে ইন্টারনেট অবকাঠামো পৌঁছেছে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু এখনো দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী এই আধুনিক সুবিধার বাইরেই রয়ে গেছে।

করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর যারা বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করার চেষ্টা করেছেন, তারা এবার এই সমস্যাটি খুব ভালোভাবে টের পেয়েছেন। যারা ঢাকায় বা বড় শহরে ছিলেন, তাদের সমস্যা কম হলেও গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের পোহাতে হয়েছে চরম সমস্যা।

ব্রডব্যান্ডে এক কোটির কম গ্রাহক

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনের মার্চ ২০২০ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আইএসপি ও পিএসটিএন ভিত্তিক গ্রাহক রয়েছে ৮০ লাখের কিছু বেশি। এর বাইরে ওয়াইম্যাক্স ব্যবহার করেন খুব অল্প কিছু গ্রাহক।

আর মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন সাড়ে নয় কোটির বেশি মানুষ।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব মো. এমদাদুল হক বিবিসি বাংলাকে জানাচ্ছেন, এই সাধারণ ছুটি চলার সময় বাংলাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবহারের হার দেড়শো গিগাবাইটের মতো বেড়েছে। বর্তমানে ১৬০০ জিবিপিএসের মতো ব্যবহার হচ্ছে।

"বিভিন্ন অফিসে, সফটওয়্যার কোম্পানিতে যে ইন্টারনেট ব্যবহার হতো, সাধারণ ছুটির কারণে সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। আবার মানুষজন বাড়িতে থাকায় সেখানে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। ব্রডব্যান্ড রয়েছে, মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহারও বেড়েছে।"

ইন্টারনেট সেবাদাতা কোম্পানিগুলো বলছে, ব্যান্ডউইথ সংগ্রহ থেকে গ্রাহকের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছাতে অন্তত ১৬টি উপাদান ব্যবহৃত হয়। তাই কেবল ব্যান্ডউইথের মূল্য কমালেই হবে না, বরং ট্রান্সমিশনের খরচও কমাতে হবে।

দেশের বেশিরভাগ এলাকায় নেই ব্রডব্যান্ড

বাংলাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের বিস্তার ঘটাতে ২০১১ সালে ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সেবা ন্যাশনওয়াইড টেলিকম্যুনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) দেয়ার জন্য বেসরকারি দুইটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়া হয়।

তবে এখনো দেশের সর্বত্র অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করতে পারেনি এসব কোম্পানি। এগুলো হলো ফাইবার অ্যাট হোম এবং সামিট কমিউনিকেশনস লিমিডেট। তবে গত বছর বাহন লিমিটেড নামের আরেকটি কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।

সরকারি দুইটি কোম্পানি বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং পাওয়ার গ্রিডে সেবা তাদের আওতাধীন এলাকার ভেতরে সীমাবদ্ধ। বেসরকারি যে দুইটি কোম্পানি রয়েছে, তারা বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করলেও এখনো বেশিরভাগ এলাকাই তাদের আওতায় আনতে পারেনি। বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডকে (বিটিসিএল) লাইসেন্স দেয়া হলেও খুব একটা কাজ করতে দেয়া যায়নি।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব মো. এমদাদুল হক বলছেন, ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সেবার বিস্তারের অভাবের কারণেই সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বিস্তৃত হচ্ছে না।

"ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের স্বল্পতার কারণে প্রত্যন্ত এলাকায় আমরা ব্রডব্যান্ড সেবা খুব একটা নিয়ে যেতে পারিনি। কারণ ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের খরচ এতো বেশি, সেখানে নিয়ে যখন গ্রাহক পর্যায়ে দেয়া হবে, তখন খরচ অনেক বেশি পড়ে যায়। যার কারণে এখনো শহর এলাকাতে ৮০ শতাংশ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহৃত হচ্ছে," তিনি বলছেন।

তবে প্রধান দুইটি এনটিটিএন কোম্পানির একটি, ফাইবার অ্যাট হোমের চীফ টেকনোলজি অফিসার সুমন আহমেদ সাবির বিবিসিকে বলছেন, "আমাদের সেবা কিন্তু অনেক স্থানে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ে চলে গেছে।"

"চ্যালেঞ্জের জায়গা হলো, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এখনো শহর এলাকায় সীমাবদ্ধ। একেবারে ইউনিয়ন বা প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড এখনো যায়নি, সেজন্য কিছু সময় লাগবে।"

"কারণ এই ব্রডব্যান্ডের জন্য যে ধরণের ইউজার বেজ থাকা দরকার, মাসিক আয় দরকার, সেই অর্থনৈতিক জায়গাটা এখনো তৈরি হয়নি। কিন্তু অবকাঠামো অলমোস্ট ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে," তিনি বলছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও