গণস্বাস্থ্যের কিটের চূড়ান্ত ফলাফল আগামী সপ্তাহে
গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের চূড়ান্ত ফলাফল আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে আশা করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া। প্রথম আলোকে তিনি মুঠোফোনে বলেন, অধ্যাপক শাহিনা তাবাসসুমের নেতৃত্বাধীন পারফরম্যান্স কমিটির সঙ্গে এ বিষয়ে তাঁর কথা হয়েছে। এর ভিত্তিতেই তিনি এটা বলতে পারছেন। এই কমিটির রিপোর্টই শেষ কথা। এটা আর অন্য কোনো কমিটিতে যাবে না।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমানও প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ইতিবাচক রিপোর্ট পাওয়ামাত্রই নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পেলেই হবে না, তাঁদের দরকার হবে কিট তৈরির কাঁচামালসহ নানা সামগ্রী অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সংগ্রহ করার সুযোগ।
এদিকে গত মঙ্গলবার আগের ‘মানিকজোড়’ পরিকল্পনা থেকে আপাতত সরে এসেছে গণস্বাস্থ্য। চলতি প্রক্রিয়াতেই রক্তনির্ভর অ্যান্টিবডি টেস্ট ও লালানির্ভর অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখন আশা করা হচ্ছে, আগে আসবে অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট। পরে আসবে অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট। কারণ, সম্মিলিত মনিটরিং টিম (উক্ত পারফরম্যান্স কমিটি এবং গণস্বাস্থ্যের প্রধান কিট উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল ও ড. মোহাম্মাদ রায়েদ জমিরউদ্দিন সমন্বয়ে গঠিত) দেখেছে, লালার নমুনা সংগ্রহে জটিলতা হচ্ছে। তাই অ্যান্টিজেন টেস্ট ভুল হচ্ছে। এখন রক্ত নিয়ে শুধু অ্যান্টিবডি টেস্ট হবে।
অ্যান্টিবডি কিট কীভাবে করোনা চিনবে
গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট শুধু করোনা শনাক্ত উপযোগী করেই তৈরি করা হয়েছে। অ্যান্টিবডি সাধারণত উপসর্গ দেখা দেওয়ার ৬/৭ দিন পর থেকে দেখা দিতে শুরু করে।
কিট প্রকল্পের অন্যতম গবেষক ড. নিহাদ আদনান প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমত উপসর্গযুক্ত কোনো ব্যক্তির যদি অ্যান্টিবডি টেস্টের ফল পজিটিভ আসে, তাহলে তার অর্থ হবে অতি সম্প্রতি তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাঁর শরীরে করোনা প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি শুরু হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, উপসর্গযুক্ত কোনো ব্যক্তির টেস্টে নেগেটিভ আসার অর্থ হবে, ওই ব্যক্তি হয়তোবা অতি সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন এবং করোনোর অন্য শনাক্তকারী কিট আরটি পিসিআর (রিয়েল টাইম রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমারিজ চেইন রিঅ্যাকশন) অথবা অ্যান্টিজেন টেস্ট করাবেন। সেই টেস্টে পজিটিভ এলে তিনি এক সপ্তাহ পরে আবার অ্যান্টিবডি টেস্ট করাবেন। তখন তিনি দেখবেন, তাঁর দেহে করোনা প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়েছে কি না।
তৃতীয়ত, যদি কোনো ব্যক্তির করোনা উপসর্গ না থাকে, তিনি যদি অ্যান্টিবডি টেস্ট করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর টেস্ট পজিটিভ হওয়ার অর্থ হবে, সেই ব্যক্তির শরীরে করোনা প্রতিরোধী ক্ষমতা রয়েছে। এবং তিনি কিছুদিন আগেই আক্রান্ত হয়েছিলেন।
চতুর্থত, উপসর্গ না থাকা কারও টেস্টের ফল নেগেটিভ আসার অর্থ হবে, তিনি আগে আক্রান্ত হননি। তবে ভবিষ্যতে আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ রয়ে গেছে।