ফিলিপাইনে ‘মাদকযুদ্ধে’ হত্যার দায় নেই বললেই চলে: জাতিসংঘ
ফিলিপাইনে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে পুলিশের হাতে কেউ নিহত হলে তার জন্য তেমন কোনো জবাবদিহিতার মুখে পড়তে হয় না। এসব ক্ষেত্রে দুতার্তে সরকার ‘প্রায় দায়মুক্তি’ দিয়েই রেখেছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের একটি প্রিয় স্লোগান ও প্রধান নীতি। এর ফলে ২০১৬ সালে দুতার্তে ক্ষমতায় আসার পর থেকে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। খবর আল জাজিরার।
২০১৬ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রদ্রিগো ফিলিপাইনে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। মাদকের কারবারীদের বিরুদ্ধে রীতিমতো ‘যুদ্ধঘোষণা’ই করেন তিনি। পুলিশকে দেওয়া তার নির্দেশ ও উচ্চস্তরের বক্তব্যে হত্যার জন্য রীতিমতো উস্কানি কিংবা ‘হত্যার অনুমতি’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ কোথাও অনুসন্ধান চালাবে মনে করলে সে জন্য পূর্বানুমতির দরকার হয় না। ইচ্ছে করলেই তারা যেখানে খুশি সেখানে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে অভিযান কিংবা যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে। সেক্ষেত্রে বাধার মুখোমুখি হলে তারা ‘আত্মরক্ষা’র জন্য গুলি চালাতে পারে।
অবশ্য এমন নয় যে, তাদের হত্যার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এতটা ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে, তারা হত্যা করলে সে জন্য খুব বেশি প্রশ্নেরও মুখে পড়তে হয় না। ২০১৭ সালে রাজধানী ম্যানিলার ১৭ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী কিয়ান দেলোস সান্তোসকে হত্যার জন্য তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। অবশ্য সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকাশ্য জনরোষ জন্ম দেওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছিল। শুধু যে বড়রাই পুলিশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তা নয়। প্রতিবেদনে ৫ মাসের এক শিশুসহ ৭৩ জন শিশুকে হত্যার কথাও উল্লেখ করা হয়।