ভয়াবহ এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারায় লাখো মানুষ
মানব জাতির ইতিহাসের শুরু থেকেই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রাচীন যুগের অনেক দুর্যোগে মানুষের মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা ইতিহাস থেকে জানা যায়নি। উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, আনুমানিক ১৫০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ স্ট্রোগলিতে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ এবং সুনামির ফলে পুরো মিনোয়ান সভ্যতা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। এই ভয়াবহ দুর্যোগে কত মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল তার কোনো তথ্য ইতিহাসে নেই। তবে প্রাচীনকালে ঘটে যাওয়া অন্যান্য অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা না জানা গেলেও ইতিহাসবিদরা কমপক্ষে অনুমান করতে পেরেছেন।
তেমনই কয়েকটি বিপর্যয় সৃষ্টিকারী প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে আজকের লেখা। আলেপ্পার ভূমিকম্প (আনুমানিক ১১৩৮ সাল) ১১৩৮ সালে সিরিয়ার আলেপ্পা নগরীতে একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছিল। পুরো আলেপ্পা নগরী মুহূর্তের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। সেসময় এই দুর্যোগে মৃতের সংখ্যার কোনো সঠিক সংখ্যার ইতিহাস ছিল না। পরবর্তী সময়ে ইতিহাসবিদরা অনুমান করেছেন, আলেপ্পার ভূমিকম্পে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল। হাইতির ভূমিকম্প (২০১০ সাল) ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি হাইতি একটি ভয়াবহ ভূমিকম্পের শিকার হয়।
সাত মাত্রার এই ভূমিকম্পে প্রথমিকভাবে দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানির তথ্য জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ২০১১ সালে হাইতির সরকার এই ভূমিকম্পে তিন লাখ ১৬ হাজার মানুষের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করেছিল। ভারত মাহসাগরের ভূমিকম্প এবং সুনামি (২০০৪ সাল) সুমাত্রার পশ্চিম উপকূলের সমুদ্র তলে ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর নয় দশমিক তিন মাত্রার একটি মহাবিপর্যয় সৃষ্টিকারী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। ভূমিকম্পের ফলে ভয়াবহ সুনামি সৃষ্টি হয়েছিল। এই ভূমিকম্প এবং সুনামির জন্য ১৪টি পৃথক দেশে মানুষ মৃত্যুবরণ করে। সুনামির কারণে কিছু স্থানে প্রায় ৩০ মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল। সামগ্রিকভাবে মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় দুই লাখ ৩০ হাজার থেকে দুই লাখ ৮০ হাজারে।