![](https://media.priyo.com/img/500x/https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/600x315x1xxxxx1/uploads/media/2020/05/28/ca6cf8ebec9500c120d9b88568401956-5ecf7502880c3.jpg?jadewits_media_id=1535594)
ছন্দপতনের ঈদ ও নয়া স্বাভাবিকতা
ঈদ শেষ। এ বছরের মতো। এবারের ঈদ বস্তুত ছিল রোদনভরা। শেষ ইফতারের পর ছিল না চাঁদ দেখার উচ্ছ্বাস। পাওয়া যায়নি চাঁদ দেখার আনন্দে ফোটানো বাজির আওয়াজ। এমনকি প্রতিবারের মতো রমজানের রোজার শেষে খুশির সওগাত নিয়ে নজরুল হাজির থাকলেও দোলা দেয়নি কাউকে। পাওয়া যায়নি চাঁদরাতের সেই উচ্ছল ঢাকাকে। বরং সন্ধ্যা নামতেই নিঝুমপুরীতে পরিণত হয়েছিল রাজধানী। এবারের ঈদকে বলা যেতে পারে ছন্দপতনের ঈদ। সকালে মসজিদে যাওয়ার তাড়া ছিল না। ছিল না কোলাকুলি, করমর্দন আর নতুন পোশাক পরার তাগিদ। ম্রিয়মাণ উৎসব কেটেছে সবার।
এ দৃশ্য বোধ করি সারা বিশ্বেরই। রোজা কোথা দিয়ে চলে গেল, সেটা টের পাওয়া যায়নি। ঈদও তাই আলাদা করে কোনো খুশির বার্তা বয়ে আনেনি। সব দেশের রোজায় থাকে কিছু সিগনেচার বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশেরও। ইফতার পার্টি একটা পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু এবার সেটা হতে পারেনি। একদিক থেকে অবশ্য মঙ্গল হয়েছে। কারণ অনেক অপচয় বন্ধ হয়েছে। তবে রেস্তোরাঁগুলো ব্যবসা হারিয়েছে। বিভিন্ন এলাকার বিখ্যাত সব পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছে নগরবাসী আর রোজা হারিয়েছে চিরাচরিত আমেজ। আবার কয়েক বছর হলো ঢাকায় শুরু হয়েছিল সাহরি পার্টি। বন্ধু বা পরিচিতজনদের জমায়েতে শেষ রাত গুলজার হতো। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তের রেস্তোরাঁগুলোও হয়ে উঠত সরগরম। এবার সে সুযোগ মেলেনি। তাতে কেবল আনন্দ বিনষ্ট নয়, ব্যবসাও যে নষ্ট হয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ঢাকার কিছু এলাকার শপিং ট্রেন্ডও বদলে যেতে দেখা যাচ্ছিল গত কয়েক বছরে। ইফতারের পর তারাবিহ পড়ে রাতের খাবার সেরে শপিং করতে বেরোতেন অনেকে, সপরিবারে।
এই সময় ছিল নিশাচর নগরবাসীর নৈশ কেনাকাটা। এবারের ঈদ শপিংয়ে পরিচিত দৃশ্য একেবারেই ছিল না। সবকিছু বন্ধ থাকার পর ১০ মে থেকে সীমিত পরিসরে বিপণিবিতান ও দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হলেও বিপণিবিতানগুলোর বেশির ভাগই খোলেনি। ফলে দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোও তাদের সব শাখা খুলতে পারেনি। যেগুলো খুলেছিল, সেগুলোর সামনেও ছিল না গাড়ির লাইন। সুপার মলগুলো বন্ধ ছিল, ফলে দেখা মেলেনি মানুষের ঢল। অদ্ভুত এক নিরানন্দ, উদযাপনহীন ঈদ নিয়ে ভাবতে ভাবতে পুরোনো দিনের স্মৃতিরা ভিড় করে আসে। ঢাকায় শপিংয়ের কেন্দ্র বদল হয়েছে সময়ে সময়ে। একটা সময় কেবল নিউমার্কেটই ছিল ভরসা। সেখান থেকে মৌচাক মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা থেকে বসুন্ধরা সিটি শপিং মল হয়ে যমুনা ফিউচার পার্ক। সময়ের সঙ্গে অভিযোজিত হয়েছে নগরবাসী।