ঐক্যফ্রন্টকেই কার্যকর দেখতে চান খালেদা জিয়া
শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির দুই মাসের মাথায় দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর মুক্তির পর এবং দলের নেতাদের সাক্ষাতের পর দল এখন অনেকটাই চাঙা। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জানান, সরাসরি রাজনৈতিক বিষয়ে তাঁর কথা বলার ব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে। তবে শুরু থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে তাঁর ইতিবাচক মনোভাব ছিল এবং এখন তা আরও কার্যকর দেখতে চান খালেদা জিয়া।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন আরও একটি জোট রয়েছে। ২০–দলীয় জোট নামের এই জোটটি এখন প্রায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। জোটের প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নেই। জোটে এই দলটির কর্মকান্ড অনেকটাই সীমিত। আরেক শরিক বিজেপি জোট ছেড়েছে। ইসলামি ঐক্যজোটের মূল অংশটি বেরিয়ে গেছে জোট থেকে। এলডিপির সঙ্গেও জোটের সম্পর্ক তেমন ভালো নয়। বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিএনপির কাছে প্রধান সরকারবিরোধী রাজনৈতিক জোট হোক এটা খালেদা জিয়া চান। তা ছাড়া যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতে ইসলামী এই জোটে না থাকায় বাম ও অপেক্ষাকৃত লিবারেল দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির আলোচনা চালানোয় সুবিধা হয়।
মার্চের ২৫ তারিখে সরকারের এক নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য মুক্তি পান খালেদা জিয়া। করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশেও প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলছে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন সীমিত। অসুস্থতা ও ঝুঁকি বিবেচনায় খালেদা জিয়াও সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধ রেখেছিলেন। এরপর নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ১১ মে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করেন। ঈদের দিন সাক্ষাৎ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে। এ ছাড়া গতকাল নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে তাঁদের নেত্রীর মুক্তি হয়েছে। তাঁর সঙ্গে সহসাই যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও দলে খালেদা জিয়ার একটা প্রভাব তাঁরা অনুভব করতে পারছেন। দল অনেকটা চাঙা। শীর্ষ নেতাদের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রতি যে বার্তা তিনি দিচ্ছেন তাতে নেতারা সন্তুষ্ট।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলের নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই আছেন। তবে খালেদা জিয়া এখন মুক্ত, তাঁর প্রভাব দলে স্পষ্ট। এ ছাড়া মুক্তির শর্ত এবং আইনগত বিষয়েও তিনি সচেতন। সেভাবেই তিনি তাঁর অবস্থানে থাকবেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য ও জেএসডি মিলে গড়ে তোলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নির্বাচনের পর থেকে এই জোটের শরিকদলের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। কাদের সিদ্দিকীর দল জোট গঠনের পরে যোগ দিয়ে আবার নির্বাচনের পর বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ছেড়েও যায়। এ ছাড়া শুরু দিকে বিএনপির যেসব নেতা নিয়মিত জোটের বৈঠকে অংশ নিতেন তাঁরাও যাওয়া বন্ধ করেন।