‘হান্না বানাত আল বাদুউ ইয়াজীনা হান্নানা...’(আমরা বেদুইন কনে, কী অপূর্ব আমাদের হাতের মেহেদি) বেদুইন মেয়েদের গান। অনুবাদ: জায়েদ ফরিদ। গত শতকের মধ্য নব্বইয়ে গ্রাম কিংবা শহরগুলোতে বিয়ের আগে এখনকার মতো অনেকগুলো ঝাঁ চকচকে অনুষ্ঠান হতো না। সিনেমার সেট বানিয়ে ডিজে বাজানোর বেশুমার অভ্যস্ততা না থাকলেও তখন ছিল রোমান্টিক সিনেমা আর মেলোডিয়াস গানের যুগ। ছিল শাহরুখ-কাজল জুটির রমরমা, মৌসুমী-ওমর সানী আর সালমান শাহ- শাবনূরের ব্যাপক উসকানি।
সবকিছু ছাপিয়ে তখন মাইকে বাজত সেই গানটা, ইউটিউবে খুঁজে দেখলাম গানটা সাড়ে আট কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে। বধূ বেশে বসে থাকা কাজলের সামনে নাচতে নাচতে শাহরুখ গাইছিলেন, মেহেদি লাগাকে রাখ না— মেহেদি লাগিয়ে রেখ; ডোলি সাজাকে রাখ না— পালকি সাজিয়ে রেখ; তোমাকে নিতে আসবে তোমার স্বজন। বিয়ের আসরে সেট সাজিয়ে না হলেও এ দেশে গাওয়া হয় ‘হলদি বাটো/ মেন্দি বাটো/ বাটো ফুলের মৌ…।’ কত রকমভাবে যে এই গান গাওয়া হয় আমাদের সমাজে তার কোনো লেখাজোখা নেই। কলেজের দিনগুলোয় যখন আমরা মান-অভিমান ব্যাপারটা বুঝতে শিখেছি, তখন দেখলাম আমাদের বড় ক্লাসের বড় ভাইয়েরা গভীর রাতে দীর্ঘশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোনো এক অনন্তকে উদ্দেশ করে লেখা ব্যাপক দুঃখবোধের এক কবিতা শুনত, ‘অনন্ত, মেহেদি পাতা দেখেছো নিশ্চয়ই/ ওপরে সবুজ, ভেতরে রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত।/ নিজেকে আজকাল বড় বেশি/ মেহেদি পাতার মতো মনে হয় কেন?’
এ প্রশ্নের উত্তর সক্রিয় শ্রোতার কাছে থাকলেও আমাদের কাছে ছিল না। তারও কিছুদিন পর, যখন আমাদের বন্ধু ও বান্ধবীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করল, বিভিন্ন সংস্কৃতি আর পরিবেশে যাতায়াত শুরু হলো, কোনো কোনো পরিবারের গভীরে মিশে গিয়ে সংস্কৃতি আর যাপনের বোধ তৈরি হলো, তখন বোঝা গেল সুখ কিংবা কষ্ট দুই ধরনের অভিব্যক্তিই প্রকাশ করা যায় মেহেদির রঙে, তার গাঢ় আলপনায়। তবে কষ্টের চেয়ে সুখের প্রকাশই বেশি। কারণ মেহেদি রঙিন। আর রঙের সঙ্গে কষ্টবোধের হাজার হাজার বছরের আড়ি। হাজার বছরই বটে। খ্রিষ্টপূর্ব তিন হাজার বছরের বেশি সময় আগে সুসংহত হওয়া মিসরীয় সভ্যতার বিজ্ঞানের নমুনা হিসেবে আমাদের সামনে হাজির করা হয় মমিদের। সেসব মমির হাতের নখে পাওয়া গেছে মেহেদির উপস্থিতি।
তা থেকে অনুমান করা যায়, নখ রঙিন করার জন্য মেহেদি পাতার ব্যবহার পাঁচ হাজার বছর আগের ঘটনা। তাই মেহেদি পাতার বিশ্ব পরিভ্রমণের ইতিহাস যে যথেষ্ট সর্পিল এবং গোলক ধাঁধায় ভরপুর, সেটা বলাই বাহুল্য। একাধিক সূত্র বলছে, মেহেদি উত্তর আফ্রিকা, এশিয়া ও উত্তর অস্ট্রেলিয়ার ‘নেটিভ প্ল্যান্ট’। আর প্রাচীন মিসর, উত্তর আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলেরই প্রাচীন সভ্যতা। যা-ই হোক, এটি এশিয়া অঞ্চলেরও ‘নেটিভ’ উদ্ভিদ। কাজেই স্থানীয় জনগোষ্ঠীতে বিভিন্নভাবে এর ব্যবহার থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। মেহেদি ব্যবহার হয় বিভিন্ন রোগের ভেষজ চিকিৎসা আর রূপচর্চায়। ভেষজ চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ নেই।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.