পরিবহন শ্রমিকদের যে নেতারা চাঁদা তুলেছেন তারা আজ কোথায়: প্রশ্ন নিক্সন চৌধুরীর
বছরের পর বছর ধরে চাঁদা তুলেছেন পরিবহন শ্রমিকদের কাছ থেকে। প্রত্যেক দলেরই এমন নেতা রয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের নামে তোলা সেই টাকা কোথায়?'- প্রশ্নগুলো করেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন (নিক্সন চৌধুরী)। এ সময় তিনি মন্তব্য করেন, পরিবহন শ্রমিকদের সহায়তা করার বদলে এখন এই সব নেতারা আইসোলেশনে রয়েছেন।
শনিবার চ্যানেল আই 'তারকা কথন' অনুষ্ঠানে নিজ এলাকায় পরিবহন শ্রমিকদের সহায়তা প্রদানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এই কথাগুলো বলেন তিনি। এ সময় তিনি আরো বলেন, বড়বড় নেতারা টাকা তুলে নিয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকরা কল্যাণ ফান্ড থেকে সহায়তা পাচ্ছেন না। তাদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে। এ সময় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বেতন বকেয়া রাখার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা এক বছর ধরে এত বড় বড় ব্যবসা করছেন। আর একমাসে বেতন দিতে পারছেন না! তাহলের কিসের বড় বড় ব্যবসা করলেন।
আমি অনুরোধ করব, আপনারা এই গরীব ও অসহায় মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়ান। এতে তাদের দোয়া পাবেন। নিজ এলাকায় এই মহামারী চলাকালে গ্রহণ করা বেশ কার্যক্রমের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে নিক্সন চৌধুরী জানান, প্রাথমিক অবস্থায় হত দরিদ্রদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে অর্থ সহায়তা প্রদান করেছি। যেন তাদের কোন সমস্যা না হয়। পরবর্তীতে সরকারিভাবে ব্যাপক ভিত্তিতে ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম শুরু হলে আমরা এলাকার সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আলোচনা করি পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে। এ সময় বেশ কয়েকটি সেক্টরে ভাগ করে নেই আমাদের কার্যক্রম।' নিজ নির্বাচনী এলাকার পরিবহন শ্রমিক ও ইমামদের সহায়তার জন্য পৃথকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়টি জানিয়ে তিনি বলেন, আমার এলাকার তিন উপজেলায় তিনটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম ও জরুরি সেবা নম্বর প্রদান করা হয়েছে। সেখান থেকে এলাকার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে যারা অর্থ সংকট ও খাদ্য কষ্টে রয়েছেন তাদের কাছে জরুরি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে আলোচনার এক পর্যায়ে দেশের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখা প্রবাসীদের সরকারিভাবে সহায়তার অনুরোধ জানিয়ে নিক্সন চৌধুরী বলেন, প্রবাসী যে ভাইদের শ্রম দিয়ে আজ আমরা উন্নয়ন করেছি, তারা এখন লকডাউনে কষ্টে আছে।
বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে এই প্রবাসীদের খবর নিয়ে তাদের সহায়তা পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।' ঈদের পড়ে প্রবাসীদের পরিবারের কাছে গিয়ে, তাদের খোঁজ খবর নেবেন জানিয়ে তিনি বলেন, 'প্রয়োজন অনুসারে তাদের অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দেবো'। দেশের ডাক্তার, নার্স, প্রশাসন ও পুলিশের কাজকে একজন আধুনিক প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধার কাজ হিসেবে অভিহিত করে ফরিদপুর-৪ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন।
আমরা একটা যুদ্ধ মোকাবেলা করছি। আপনারা যারা এই সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তারা শহীদ হয়েছেন। তারা সবাই এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে যেই সম্মান আমরা পাই, আজকে যারা এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, তাদের সন্তানেরাও এক সময় এই সম্মান পাবেন।' বিভিন্ন টকশো বা অনুষ্ঠানে গিয়ে সরকারের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করা মানুষদের প্রতি ইঙ্গিত করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, 'এত অভাব, সহায়তা পৌঁছচ্ছে না'-এমন অভিযোগ করে সরকারের সমালোচনা করা হচ্ছে।