লোকসানের মুখে পিরোজপুরের পোল্ট্রি খামারিরা
লোকসানের মুখে পড়েছেন পিরোজপুরের পোল্ট্রি খামারিরা। জেলায় মোট ১৫৩০টি পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় এক হাজারটি রয়েছে বাণিজ্যিক লেয়ার ও ৫৩০টি রয়েছে সোনালি মুরগির (ডিম পাড়ার মুরগি) খামার। বর্তমানে মুরগির খাবারের অতিরিক্ত দাম ও করোনা মহামারির কারণে পরিবহন বন্ধ থাকায় ডিম অন্যত্র পাঠাতে না পারায় প্রাথমিকভাবে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি খামারিদের। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার নাজিরপুরে ২০৩টি লেয়ার ও ১৪৪টি সোনালি, মঠবাড়িয়ায় ৩৫টি লেয়ার ও ৬৩টি সোনালি, ভান্ডারিয়ায় ৪টি লেয়ার ও ৩৮টি সোনালি, কাউখালীতে ২০টি লেয়ার ও ৫টি সোনালি, ইন্দুরকানীতে ৩৮টি লেয়ার ও ২৯টি সোনালি, নেছারাবাদে ৬২৮টি লেয়ার ও ২৭০টি সোনালি এবং জেলার সদর উপজেলায় ৭০টি লেয়ার ও ৩০টি সোনালি মুরগির খামার রয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের পোল্ট্রি খামারি মলয় বেপারী জানান, তার খামারে প্রায় ২ হাজার মুরগি রয়েছে। প্রতি হাজার মুরগির বাচ্চা ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে।
আর এ খামার দেখাশোনার জন্য কাজ করছেন দুই জন কর্মচারী। তাদের প্রত্যেকের বেতন বাবদ মাসে ১৫ হাজার টাকা করে ৩০ হাজার টাকা দিতে হয়। তাছাড়া তাকেও নিয়মিত সময় দিতে হয়। প্রতিমাসে ২ হাজার মুরগির জন্য দৈনিক প্রায় ৫ বস্তা খাবার দিতে হয়। প্রতি বস্তা খাবারের দাম ১৮৫০ টাকা। এতে দৈনিক ৯২৫০ টাকা করে মাসে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার খাবার খরচ হয়, এছাড়া ১০ হাজার টাকার ওষুধ, ১ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিলসহ প্রতি মাসে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি আরও জানান, খামারের এসব মুরগি হাজার প্রতি দৈনিক ৮০০ থেকে ৮৫০টি ডিম দেয়। খামারে থাকা ২ হাজার মুরগি থেকে দৈনিক ১৬০০ থেকে ১৭০০ ডিম পান তিনি। আর মাসে পান গড়ে ৫০ হাজার ডিম।
এ সব ডিম প্রতিটি এখন সাড়ে ৪ টাকা থেকে ৫ টাকা দরে বিক্রি করেন। এতে তিনি প্রতি মাসে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পান। এ ডিম বিক্রির পরও প্রতিমাসে তার লোকসান হয় প্রায় ৭০ হাজার টাকা। একই কথা জানালেন স্থানীয় খামারি মো. আক্রাম আলী শেখ। তার খামারে ৩ হাজার ২০০ মুরগি রয়েছে। এতে প্রতিমাসে প্রায় সোয়া ১ লাখ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। তাছাড়া পরিবহন সমস্যায় নিয়মিত খাবারও পাচ্ছেন না। এ মুহূর্তে এ লোকসান থেকে বাঁচতে মুরগিগুলো মাংসের মুরগি হিসেবে বিক্রি করলে আপাতত বড় ধরনের লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে পারি।