গাছে কিছু ফল থাকুক পাখির জন্যই
আজ থেকে কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে নানান রকমের পাখির দেখা মিলত। দিন দিন পাখির সংখ্যা কমছে। পাখিই একমাত্র জীব, যা সরাসরি মানুষের উপকার করে থাকে। পাখির মিষ্টি মিষ্টি ডাক শুনতে না পেলে একটা ভোর কখনো স্নিগ্ধ হয় না। মানবমনে পাখির ডাক ও সৌন্দর্য এক অদ্ভুত দ্যোতনা সৃষ্টি করে। পাখির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যুগে যুগে কবি, সাহিত্যিকের কলমে কত সুন্দর সুন্দর কবিতা, গল্পের জন্ম হয়েছে, যেগুলো পড়ে মানুষ কতই না আনন্দে মজেছে। অথচ সেই পাখির খাদ্য নিয়ে আমরা কখনো মানবিক চিন্তাই করি না, উল্টো নির্বিচারে চলে পাখি নিধন।
আমাদের বাস্তুসংস্থানে পাখির অবদান অনস্বীকার্য। পাখি ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসল রক্ষা করে। বীজের বিস্তারে পাখি সরাসরি ভূমিকা রাখে। পাখি পাকা ফল খাওয়ার সময় বীজসহ খেয়ে ফেলে। পরে তা বিষ্ঠার সঙ্গে বীজ বের হয়ে যায়, সেখান থেকে জন্ম নেয় নতুন গাছ। প্রতিনিয়ত এভাবে অসংখ্য গাছের জন্ম হয়, যা নানা স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। সবুজায়নে পাখির অবদান সত্যিই মুগ্ধকর। চারপাশে তাকালে সেটি সহজে অনুমেয়। বাড়ির ভিটেমাটি, জঙ্গলময় স্থানে চোখ রাখুন, দেখতে পাবেন নতুন অনেক গাছ যেগুলো আপনার নিজের লাগানো নয়। ফুলের পরাগায়ণে পাখি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে পাখির সবচেয়ে গুরুত্ববহ কাজ হলো কীটপতঙ্গ নিধন। ফসলের অসংখ্য ক্ষতিকারক পোকা, পাখি খেয়ে ফেলে। ফলে ফসল প্রাকৃতিকভাবে রক্ষা পায়। শূন্যে উড়ে উড়ে বিচিত্র ভঙ্গিতে পাখি উড়ন্ত পোকা খায়, এ দৃশ্য সবারই পরিচিত।
পরিসংখ্যান বলে, ছোট একটি পাখি এক ঘণ্টায় ১ হাজার ২০০ পোকা খেয়ে ফেলতে পারে। আদতে পাখি ছাড়া মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে বাধ্য।