ব্যস্ততা নেই রূপগঞ্জের জামদানিপল্লির কারিগরদের
প্রতিবছর দুই ঈদকে কেন্দ্র ব্যস্ততা বাড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার জামদানিপল্লিতে। ঈদেই পুরো বছরের বেচাকেনা হয় এ পল্লিজুড়ে। তবে এবার করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ভিন্ন চিত্র এ পল্লির। কাজ নেই একেবারেই বেকার ও অলস সময় পার করছেন জামদানির কারিগররা। এর মধ্যে পরিবার নিয়ে অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জামদানি শব্দটি মূলত ফার্সি শব্দ। এর অর্থ জাম। জাম হচ্ছে পারস্য দেশীয় একশ্রেণীর উৎকৃষ্ট সুরা, আর দানি হচ্ছে বাটি বা পেয়ালা। অর্থাৎ উৎকৃষ্ট সুরা ধারণকারী পাত্র। জামদানির ঐতিহ্য প্রায় ২শ বছর আগের। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় সাদা কাপড়ের ওপর ফুলের ডিজাইন করা চড়া দামের জামদানি নেপাল, মুর্শিদাবাদ এলাকার নবাব ও বাদশাহরা ব্যবহার করতেন। সেই ২শ বছর আগে থেকেই বিখ্যাত রূপগঞ্জের জামদানি। সামনে ঈদ তবে এবার কর্মব্যস্ততা নেই রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া জামদানিপল্লির তাঁতীদের। জামদানি কারিগররা এখন আড্ডা ও ঘরে কাজ করে সময় পার করছেন। উৎসবকে সামনে রেখে প্রতিবছর চাহিদা বহুগুণে বাড়লেও এবার তা নেই। গত বছর ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩০ কোটি টাকার জামদানি দেশের বিভিন্ন বিপণিবিতান ও বিদেশে বেচাকেনা হয়েছে বলে জামদানি তাঁতীরা জানিয়েছেন।ফুলতেরছি, ছিটার তেরছি, ছিটার জাল, সুই জাল, হাঁটু ভাঙা তেরছি, ডালম তেরছি, পার্টিরজাল, পান তেরছি, গোলাপ ফুল, জুঁই ফুল, পোনা ফুল, শাপলা ফুল, গুটি ফুল, মদন পাইরসহ প্রায় শতাধিক নামের জামদানি বুনন হয় এই পল্লিতে। এগুলোর মধ্যে ছিটার জাল, সুই জাল ও পার্টির জাল জামদানির মূল্য সবচেয়ে বেশি। এসব জামদানি শাড়ির দাম পড়ে প্রতিটি প্রায় ৩০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর শাড়ি বুনতে সময় লাগে প্রায় ৩ থেকে ৬ মাস। এছাড়া ২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকারও জামদানি শাড়িও রয়েছে।