ব্রাদার্স ইন আর্মস: ইভেন্ট ইন্ডাস্ট্রির অসহায় মানুষের জন্য...
ব্রাদার্স ইন আর্মস- এটির ভাবানুবাদ করলে এমন দাঁড়ায়, ভাইয়ের জন্য ভাই। আরেকটু ব্যাখ্যা করলে এভাবেও বলা যায়, পিছিয়ে পড়া ভাইকে টেনে তোলা।মূলত এমন ভাবাবেগ নিয়ে এই করোনাকালে সামনে এলেন ছয়জন মানুষ। গড়ে তুললেন ‘ব্রাদার্স ইন আর্মস’ নামের একটি ভিন্ন ভাবনার প্ল্যাটফর্ম। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও মার্কেট অ্যাক্টিভেশনের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। যাদের বেশিরভাগই এখন কর্মহীন।‘ব্রাদার্স ইন আর্মস’ সেই মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে চায় অর্থ, খাদ্য আর চিকিৎসা সহায়তার মাধ্যমে। যার শুরুটা হয় ১১ মে সংগীতশিল্পী-চিত্রশিল্পী এবং ক্রিয়েটো অ্যাজেন্সির সিইও রাশিদ খানের ২০টি চিত্রকর্ম অন্তর্জালে তুলে। এই উদ্যোগের মূল উদ্যোক্তাও তিনি। তার ভাবনার সঙ্গে দ্রুতসময়ের মধ্যে যুক্ত হন এই অঙ্গনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আরও পাঁচজন। তারা হলেন হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল, পার্থ বড়ুয়া, তানভীর খান, মানস পাল ও রিয়াদ হাসান।উদ্যোগটি প্রসঙ্গে রাশিদ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের ইভেন্টস ও অ্যাক্টিভেশন ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ৫ লাখ মানুষ জড়িত। এরমধ্যে সিংগভাগই হচ্ছেন চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। লকডাউনের সূত্র ধরে যখন আমাদের এই কাজগুলো বন্ধ হয়ে গেল তখন সবার আগে মাথায় এলো সেই মানুষগুলোর কথা, যারা দিনের পর দিন আমাদের অসংখ্য ইভেন্ট নামিয়েছেন শ্রম-ঘাম আর মেধার বিনিময়ে। যারা আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন চুক্তির ভিত্তিতে। তো এই মানুষগুলোকে তো এখন বাঁচাতে হবে। তাদের হিসাব তো সে অর্থে অন্যরা করবে না। মূলত এই ভাবনা থেকেই উদ্যোগটি নিলাম। আশার কথা হলো, আমার এই ভাবনার সঙ্গে একমত হয়ে এগিয়ে এসেছেন অন্যরাও। এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’এটি তো এ পর্যন্ত বাস্তব, ‘ব্রাদার্স ইন আর্মস’ এর আগে এই ইভেন্ট ও অ্যাক্টিভেশন ইন্ডাস্ট্রির পেছনের মানুষগুলোর কথা আর কেউ ভাবেনি, এভাবে। সরকার হয়ে বেসরকারি উদ্যোগের সব ভাবাবেগ একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে, এখনও।তাই এই উদ্যোগের অন্যতম অংশীদার সংগীতশিল্পী আবিদুর রেজা জুয়েলের প্রত্যাশা- ঈদের আগেই এই অংশের অসহায় কিছু মানুষের মুখে একটু হলেও হাসি ফোটাতে পারবেন। তিনি জানান, ‘ব্রাদার্স ইন আর্মস’ এর ফেসবুক পেজে তোলা রাশিদ খানের ২০টি ছবির অধিকাংশই বিক্রি হয়ে গেছে। পাওয়া গেছে আশাতীত সমর্থন। যেগুলো কিনেছেন দেশের বাইরে থাকা মানুষরাও।জুয়েল জানান, মেলবোর্ন থেকে নাফিউল ইসলাম নামের একজন প্রবাসী ‘মিডনাইট ব্লুজ’ নামের চিত্রকর্মটি কিনেছেন সন্ধ্যায়। এই প্রতিবেদন তৈরির ফাঁকে বিক্রি হলো ‘এন এক্সকিউজ’ নামের ছবিটিও। তবে ক্রেতা ছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। সম্ভবত, তিনি নিজের প্রচারের চেয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতেই বেশি স্বচ্ছন্দ।বলে রাখা দরকার, এর আগেও রাশিদ খানের ৪টি একক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী হয়েছে। এটি হচ্ছে সেই হিসেবে পঞ্চম আয়োজন। যদিও অন্তর্জালে আর মানবতার পাশে দাঁড়াবার লক্ষ্যে এটাই তার প্রথম অভিজ্ঞতা। কেমন সাড়া পাচ্ছেন? জবাবে রাশিদ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘খুবই ভালো এক্সপেরিয়েন্স হচ্ছে। অসাধারণ সাড়া পাচ্ছি গোটা বিশ্ব থেকেই। তবে আমি এখানেই থামতে চাই না। এমন আরও অনেক আয়োজন মানুষের সামনে হাজির করবো সামনে। আমি সত্যিকার অর্থেই এই ইন্ডাস্ট্রির অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করতে চাই, এই মহামারিতে।’ ‘