আজ চৈত্রসংক্রান্তি
‘জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক, মুছে যাক গ্লানি’—এই প্রত্যাশার ভেতর আজ রাত পোহালেই কাল নতুন দিন। লকডাউন-ঘরবন্দি বাংলার পূর্ব দিগন্ত উদ্ভাসিত করে ভোরের নরম আলো রাঙিয়ে দেবে চরাচর, স্বপ্ন, প্রত্যাশা। করোনা ভাইরাসের ভয়াল আতঙ্কের মধ্যে সূচিত হবে নববর্ষ। হিন্দুদের চৈত্রসংক্রান্তি আজ। বাংলা সনের সবশেষ মাস চৈত্রের শেষ দিন। বাংলা সনের সমাপনী মাস চৈত্রের এ শেষ দিনটি সনাতন বাঙালির লৌকিক আচারের ‘চৈত্রসংক্রান্তি’। আজ ৩০ চৈত্র ১৪২৬। বাংলা সনে বছরের শেষ দিন। প্রকৃতির আকুল করা ফাগুন, চৈতালি হাওয়ায় উতল-উদাস করা যে বসন্ত তারও বিদায় আজ। বসন্ত মুখর হয়ে উঠেছিল তরুলতা, বিটপী আর বনস্পতিতে। এবারে ঋতুরাজ বসন্তের সিংহভাগ জুড়েই ছিল করোনার মৃত্যু-আতঙ্ক আর খরতাপ। তপ্ত দিনলিপিতে এবার বৃষ্টির শান্ত-শীতল পরশও জুটেছিল ছিটেফোঁটা। ঝড়ঝঞ্ঝাও বাদ যায়নি। এই এখন দিবসের আকাশ যেন আগুন ঢালছে। তবে মানুষ ঘরবন্দি থাকায় তার আঁচ পাচ্ছে কম। হিন্দু সম্প্রদায় বাংলা মাসের শেষ দিনে শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস ক্রিয়াকর্মে কাটান। আচার অনুযায়ী এ দিনে বিদায় উত্সব পালন করে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। দোকানপাট ধুয়েমুছে বিগত বছরের যত সব জঞ্জাল, অশুচিতাকে দূর করতে চায়। কারণ রাত পেরোলেই খোলা হয় ব্যাবসায়িক হিসাবনিকাশের নতুন খাতা। সে উত্সবের চিরচেনা নাম ‘হালখাতা’। তবে করোনার কারণে সব হালখাতা সব আয়োজন স্থবির, বন্ধ। বৈশাখকে বরণ করতে এ বছর আর কোনো আয়োজন চলছে না। বাংলা নববর্ষকে বরণের জন্য রমনা বটমূলে ছায়ানটের ‘এসো হে বৈশাখ’ অনুষ্ঠান হবে না।