করোনা ঝাঁকুনিতে লণ্ডভণ্ড ১ লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য, ক্ষতির মুখে বাংলাদেশ

নয়া দিগন্ত প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৯:৪২

করোনাভাইরাসের ঝাঁকুনিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যেকার এক লাখ ছয় হাজার কোটি টাকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রফতানি। নতুন করে এলসি তো খোলা হচ্ছেই না, পূর্বে এলসি করা পণ্যের জাহাজীকরণও বন্ধ। বন্ধ রয়েছে ব্যবসায়ী এবং কর্মরতদের আসা-যাওয়াও। অথচ বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় প্রতিটি পর্যায়েই যুক্ত রয়েছে চীন। রফতানিমুখী এবং স্থানীয় বাজারের জন্য পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানাগুলো কাঁচামালের জন্য অনেকাংশেই চীনের ওপর নির্ভরশীল। বতর্মানে বাংলাদেশের ১২টি প্রকল্পে ৯০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে চীন। এসব প্রকল্পে কাজ করছে দুই হাজারের বেশি চীনা বিশেষজ্ঞ। তাদের অনেকেই ছুটিতে গেছেন, বাকিরা পরিবার-পরিজনের কাছে যেতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। করোনাভাইরাসের কারণে একরকম নিথর হয়ে আছে বিশ্ব অর্থনীতি। এর বিস্তৃতি ও ব্যাপকতা আরও বাড়লে বাংলাদেশের অর্থনীতি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, করোনাভাইরাসে দেশটিতে এ পর্যন্ত আট শতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। বেশির ভাগ মৃত্যু ও নতুন সংক্রমণের ঘটনাই ঘটেছে হুবেই প্রদেশে, যার উহান শহরকে এ ভাইরাসের ‘উৎসস্থল’ বলা হচ্ছে। এ ছাড়া এ পর্যন্ত চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে হংকংয়ে একজন এবং ফিলিপাইনে একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে চীনের বেশ কয়েকটি শহর অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে কয়েক হাজার লোককে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছে। ট্রেন স্টেশন ও বিমানবন্দরের পাশাপাশি রাস্তাগুলোও বন্ধ করে দেয়ায় চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছে। প্রথমে এই প্রদেশেই ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছিল। প্রাদেশিক রাজধানী উহানের একটি সি-ফুড মার্কেট থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি বলে মনে করা হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে যে অবস্থা চলছে, বাংলাদেশকে তার অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে। বিশেষ করে কাঁচামালের অভাবে শিগগির অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। মূলধনী যন্ত্রপাতির অভাবে অনেক নতুন ফ্যাক্টরি চালু করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে চীনা নাগরিকদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ রয়েছে। অনেক প্রতিনিধি তাদের সফর বাতিল করেছেন। এতে কারিগরি কর্মকর্তারাও আসতে পারছেন না। এতে প্রস্তুতি শেষ হলেও কারিগরি কর্মকর্তার অভাবে অনেক শিল্পকারখানা চালু হতে পারবে না। ফলে পূরণ হবে না রফতানির ল্য। আটকে গেছে শত শত এলসি। এতে ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বাড়বে। পণ্য শিপমেন্টের অপেক্ষায় আছে বহু ব্যবসায়ী। উদ্যোক্তারা জানান, বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয় চীন থেকে। এর বাইরেও কাপড়, আদা, রসুন, বিভিন্ন প্রকারের খাদ্যসামগ্রী, মেশিনারি, খুচরা যন্ত্রাংশ, খেলনা, মোবাইল, বৈদ্যুতিক সামগ্রী মিলিয়ে শত শত আইটেমের পণ্য আমদানি করা হয় চীন থেকে। সবচেয়ে বড় বাণিজ্য হচ্ছে তৈরী পোশাক ও এর কাঁচামাল আমদানি। যা চীনের বাইরে প্রত্যাশা করাটাও অসম্ভব। চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সারা বিশ্বে। দেশটির ভেতরে এ সংক্রমণের প্রভাব এত তীব্র যে চীনের বেশির ভাগ অফিস ও ব্যাংক নববর্ষের ছুটির পর এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। চেষ্টা করেও সেখানে এলসি খুলতে পারছেন না বাংলাদেশী আমদানিকারকরা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও