হট্টগোলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের
ফের আদালতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হট্টগোল করলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি করেছেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, আমি কখনো ভাবিনি সুপ্রিম কোর্টের ভিতরে ঢুকে এভাবে আদালতের অবমাননা করবেন। তারা আদালতের চরম অবমাননা করেছেন। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। গতকাল খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হট্টগোল পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আওয়ামী আইনজীবী নেতা আব্দুল মতিন খসরু ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম আমিন উদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন আরো বলেন, আমরা তো ধৈর্য সহকারে অবস্থান করেছি আমাদের এই ধৈর্য দুর্বল মনে করবেন না। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী আইনজীবী নেতা আব্দুল মতিন খসরু বলেন, আজকে যে ঘটনা ঘটেছে, তা আপনারা সবাই দেখেছেন। বিষয়টা কী? সুপ্রিম কোর্টের মালিক এই দেশের মানুষ। দেশের মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আদালত আদেশ দিয়েছে, বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে মেডিকেল রিপোর্ট দাখিলের। বিএসএমএমইউ বলেছে, সবকিছু দেখে রিপোর্ট দেয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় প্রয়োজন। এটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে তারা আগুন হয়ে গেছে। আদালতে তারা যে ব্যবহার করেছে তা অভাবনীয়। সুপ্রিম কোর্টের পবিত্রতা, নিরপেক্ষতা, ভাবমূর্তি রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। তারা আদালতের কাজে বাঁধা দিয়ে আদালত অবমাননাজনক অপরাধ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন আব্দুল মতিন খসরু। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করতে চাই, এ ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হোক। না হলে ভবিষ্যতেও তারা এরকম ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ করবে।এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আওয়ামী আইনজীবীদের নেতা ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস বলেন, ভবিষ্যতে তারা এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনার অবতারণা করলে আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করবো তারা যেন সমুচিত ব্যবস্থা নেয়। আইনজীবীরাও সমুচিত জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে। ব্যারিস্টার তাপস বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আইন সবার ঊর্ধ্বে। যখনই এই আইন অঙ্গনকে কলুষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে আমরা তার দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছি। ভবিষ্যতেও জবাব দেয়া হবে। আইনের শাসন সর্ব ঊর্ধ্বে, সবাইকে আইনের আওতায় থাকতে হবে। তারা এজলাসে প্রধান বিচারপতিসহ পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে নজিরবিহীন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা আন্দোলন কক্ষে স্লোগান দিয়েছে। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে এবং বিচারের পরিবেশ নষ্ট করেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম আমিন উদ্দিন বলেন, আপনারা আজ (গতকাল) সকাল থেকে আদালতে ছিলেন। আমরাও আদালতে ছিলাম। আমি আজকে যেটি দেখলাম, আমার মনে হয় আমাদের যারা সিনিয়র আছেন, তারা কোনোদিন এ ধরনের ঘটনা দেখিনি। আমি আমার সুপ্রিম কোর্টেও ৩৪ বছরের প্র্যাকটিস জীবনে দেখিনি। এটি ন্যাক্কারজনক, নিন্দনীয় ঘটনা। এ আইনজীবী অভিযোগ করে বলেন, যারা এ ধরনের কাজ করলো তারা অধিকাংশ আইনজীবী না। তারা বহিরাগত। কালো কোর্ট, ব্যান্ড পরিয়ে তাদের নিয়ে আসা হয়েছে চিৎকার দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ কাজ করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বিপুল সংখ্যক আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।