বুলবুলের ঝাপটায় পশ্চিমবঙ্গে প্রাণ গেল ১১
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ঝাপটায় পশ্চিমবঙ্গে ১১ জনের প্রাণ গিয়েছে। অবশ্য সরকারিভাবে সাতজনের প্রাণহানির কথা জানানো হয়েছে। এখনো একটি ডুবে যাওয়া ট্রলারের ৮ জন মৎস্যজীবীর কোনো খোঁজ নেই। নিহতদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ৫ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ৩ জন এবং কলকাতায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন গাছ ভেঙে মারা গেছেন। বাড়ির দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছেন ২ জন এবং ২ জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। একজন মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে ট্রলার ডুবিতে। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, ৪.৬৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাড়ি ভেঙেছে প্রায় ৬০ হাজার। মারা গেছে বেশ কিছু গবাদিপশু। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েকটি নদীর বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর। হুগলিতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। বুলবুলের ঝাপটায় উত্তর ২৪ পরগনায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিঙ্গলগঞ্জ, দুই সন্দেশখালি, হাসনাবাদ ও বসিরহাট-১ ব্লক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর, ফ্রেজারগঞ্জ, বকখালি অঞ্চলেও ব্যাপক ধ্বংসের চিহ্ন দেখা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসক পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন, কাঁথি, রামনগর, খেজুরি ও নন্দীগ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল আকাশপথে পরিদর্শন করেছেন। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। বিপর্যয় মোকাবিলায় রোববারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উপকূলের জেলাগুলোতে সর্বত্র ধ্বংসের চিহ্ন। সর্বত্র গাছ ভেঙে পড়ে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক এলাকা এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বহু জায়গাতেই বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। ৬৬টি বিদ্যুতের সাব- স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০০০টি মোবাইল টাওয়ারও। চাষেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির জলে ভরে গেছে চাষের ক্ষেত। ভীষণ ক্ষতি হয়েছে ধান, পান ও আনাজের। অবশ্য চাষিরা বলেছেন, বাঁচোয়া বলতে এটুকুই যে, এবার আয়লার মতো বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢোকেনি খেতে।