দুই শিশু কন্যা হাউমাউ করে কাঁদছে। তাদের সামনেই হাত-পা বেঁধে বাবাকে দিগম্বর করে নির্যাতন করছেন এক ব্যক্তি। কন্যারা কাঁদলেই নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। শত শত মানুষ সেই দৃশ্য দেখছে। কিন্তু কেউ কোন প্রতিবাদ করছে না। এমনই একটি নৃংশস ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ঘটনাটি গত বছরের ডিসেম্বরে ভোলা জেলার কালমা ইউনিয়নে। নির্যাতিত ব্যক্তির নাম জসিম। তিনি বর্তমানে জেলে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালীরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছে। আর ভিডিওতে যিনি জসিমকে নির্যাতন করছেন তার নাম হাসান। গতকাল একাধিক মামলার আসামি হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হাসান কালমা ইউনিয়নের প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা রাজিব চৌধুরীর আশির্বাদপুষ্ট। এদিকে ঘটনা প্রায় বছর খানেক আগের হলেও নির্যাতিত জসিমের মেয়েরা ভয়ে কাউকে বলতে পারেনি। এমনকি ওই সময় ভোলাতে চিকিৎসাও করাতে পারেনি। দীর্ঘদিন পর সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় আবারও আতঙ্কে রয়েছে তারা। ইতিমধ্যে ভিটেমাটি ছাড়া করার হুমকিও দেয়া হয়েছে তাদের। জানা যায়, ওই নির্যাতনের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জসিমের দুই মেয়ে ১১ বছরের সোনিয়া ও তার ছোট বোন। তারা কাঁদলেই মৃত প্রায় বাবাকে ২টি করে বাড়ি দিচ্ছিলো হাসান। এ ভয়ে কাঁদতেও পারেনি। ভিডিওতে দেখা যায়, শিশু দু’টি কাঁদছে আর হাসান হাত-পা বাঁধা জসিমকে দিগম্বর করে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে। এদিকে এ ঘটনার পর কালমার প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার ভয়ে ভোলার হাসপাতালেও ভর্তি করাতে পারেনি মৃত প্রায় জসিমকে। মামার সাহায্য নিয়ে বাবাকে ঢাকার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করায় অসহায় সোনিয়া। ৬-৭ মাস চিকিৎসার পর ভোলায় ফিরে গেলে ৩ বার ইয়াবা মামলায় ফাঁসানো হয় তাকে। অভিযোগ রয়েছে, কালমা ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক রাজিব চৌধুরীর যোগসাজসে জসিম এখন ইয়াবার মামলায় জেলে আছেন। মানবজমিনকে কান্নাজড়িত কন্ঠে আতঙ্ক নিয়ে নির্যাতিত বাবার শিশু সন্তান সোনিয়া বলে, তাদের নাম প্রকাশ করলে এবার ভিটেমাটিও ছাড়তে হবে। শুধুমাত্র মাদক ব্যবসায় রাজি না হওয়ায় তার বাবার ওপর এমন লোমহর্ষক নির্যাতন চালানো হয় বলেও অভিযোগ সোনিয়ার। গতরাতে ভিডিও প্রকাশের পর এলাকার প্রবাভশালীদের হুমকির মুখে চরম শঙ্কায় রয়েছে তাদের পরিবার।এদিকে গতরাতে অভিযুক্ত কালমা ইউনিয়নের চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও ডাকাতি মামলার আসামি হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে লালমোহন থানার ওসি তদন্ত।ভিডিওতে দেখা গেছে, উপজেলার ডাওরী বাজারে একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিমকে দিগম্বর করে শতাধিক মানুষের সামনে নির্যাতন করা হচ্ছে। সেখানে তার দুই শিশু কন্যা সন্তানও ছিলো।জানা গেছে, জসিমকে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা বিক্রির জন্য নানাভাবে প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো হাসান ও তার গডফাদাররা। কিন্তু ওই প্রস্তাবে রাজি না হলে ডাওরী বাজারে জনসম্মুখে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন হাসান।লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবীর জানান, ভিডিওটি ২০১৮ সালের। হাসানকে রোববার রাতে ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তারের পর এ ভিডিওটি ছাড়া হয়। হাসানের বিরুদ্ধে মানবপাচার, চুরি, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.