চলতি মাসেই আসছেন স্পিন কোচ ভেট্টরি
বাংলাদেশ জাতীয় দলের শুধু ৪ কোচই নয়, ফিজিও-ও দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রোটিয়াদের ভিড়ে অবশ্য জায়গা করে নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের একজন। তিনি স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে যোগ দিবেন টাইগারদের শিবিরে। হ্যাঁ, কিউই লিজেন্ড স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টরি হয়েছেন সাকিব আল হাসানদের গুরু। তার সঙ্গে অনেক আগেই চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। চুক্তি অনুযায়ী ভেট্টরি চলতি মাসেই আসছেন বাংলাদেশে। বলার অপেক্ষা রাখে না ভারত সফরের আগে টাইগাররা পাশে পাচ্ছেন স্পিন কোচকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান। গতকাল আকরাম খান বলেন, ‘আমাদের অনুশীলন (ভারত সফরের জন্য) শুরু হবে এই মাসের ২৫ তারিখ থেকে। তার আগেই ভেট্টরি দেশে আসছে। এই সফরে দলে থাকবেন, কাজও শুরু করবেন।’ চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ভারত সফরে যাবে টাইগাররা। সেখানে বাংলাদেশ দল শুরুতেই খেলবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর শুরু হবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। মূলত ভারত সফরে স্পিন কোচ ভেট্টরিকে বেশি প্রয়োজন। যে কারণে তাকে স্পিন কোচ হিসেবে অনেক আগে নিয়োগ দিলেও চুক্তি অনুসারে ভারত সফরের আগেই তিনি কাজ শুরু করবেন।ভারত সফরের ক্যাম্প ২৫ অক্টোবরভারত সফর বাংলাদেশ দলের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরেই শুরু হচ্ছে টাইগারদের টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপের লড়াই। ইন্দোর ও কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দুটি টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত-বাংলাদেশ। খুব একটা সময় বাকি নেই। বিসিবিও প্রস্ততি নিতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে আকরাম খান বলেন, ‘আমাদের যে বিভাগগুলো আছে, এইচপি আছে, ক্রিকেট অপারেশন্স আছে বা ডেভলপমেন্ট আছে, সবাই মিলে আমরা একসাথে কাজ করি। এটা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একইসাথে ভারত সফরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা জানেন ভারত সেরা দল। ঘরের মাঠে তারা আরো শক্তিশালী। এটা আমাদের কঠিন সফর হবে এবং তার সাথে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবে। এটা মাথায় রেখেই কিন্তু আমরা দুইবার দল পাঠিয়েছি ভারতে। প্রস্তুতি ভালো ছিল। এ ছাড়া জাতীয় লীগ শুরু হচ্ছে ১০ তারিখ থেকে। তো এটা নিয়ে আমরা পরিকল্পনা করেছি যে ওরা এখানে দুই ফরমেটে খেলবে। টি টোয়েন্টি এবং টেস্ট। ২৫ তারিখ থেকে ক্যাম্প শুরু হবে আমাদের। এটা দেশের ক্রিকেটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’তিন ফরমেটেই ম্যাকেঞ্জিকে ব্যাটিং কোচ করার ইচ্ছাক্যাম্প শুরুর আগেই দলের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরমেটে কাজ করেন তিনি। তবে এবার টেস্ট সিরিজের আগেও কাজ করবেন। যদিও টেস্টের জন্য আলাদা ব্যাটিং কোচের আলোচনা চলছে বলেই জানিয়েছেন আকরাম। তিনি বলেন, ‘ম্যাকেঞ্জি টেস্ট সিরিজের আগেই আসবে। প্রথম টেস্টেই থাকবে। আমরা যেটি আলাপ আলোচনা করছি যে একই কোচ যদি লাল এবং সাদা- দুই বলেই থাকে সেটা দলের জন্য ভালো। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সে আপাতত প্রথম টেস্টে থাকবে, তবে দ্বিতীয় টেস্টে বলা যাচ্ছে না। আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করবো। ওর সঙ্গে চুক্তি শুধু টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডেতে, টেস্টে ওর সঙ্গে চুক্তি নেই আমাদের। টেস্টে ব্যাটিং কোচ নিয়োগে অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমরা আসলে ভালো কোচকে নিয়েই কাজ করার চেষ্টা করছি, কিন্তু খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা তো একটা সময় কোনো কোচই পাচ্ছিলাম না। এটার জন্য একটু সময় লাগবে। আর টেস্টের জন্য আমরা অনেক জায়গায় চেষ্টা করছি। সেটাও করে ফেলবো। তবে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি যে ম্যাকেঞ্জি যদি তিন ফরমেটে থাকে তাহলে আমাদের জন্য ভালো হবে। সে দক্ষিণ আফ্রিকায় তিন ফরমেটেরই কোচ ছিল। তবে যেহেতু তার পরিবারকে সময় দেয়া নিয়ে একটু সমস্যা হচ্ছে তাই এটি নিয়ে আমরা আলাপ করছি।’ দ্রুতই পাকিস্তান সফরের সিদ্ধান্ত ভারত সফর থেকে ফিরলে বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে আরো বড় এক চ্যালেঞ্জ। টাইগারদের খেলতে হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে। তাও এই সিরিজ হতে পারে পাকিস্তানের মাটিতেই। ২০০৯এ শ্রীলঙ্কা দলের উপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল পাকিস্তান সফর চলার সময়। এরপর থেকে সেখানে বন্ধ থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তবে সেই শ্রীলঙ্কা দলই ফের ১০ বছর পর গেছে পাকিস্তান সফরে। তাই পাকিস্তানও এখন টেস্ট খেলুড়ে অন্য দলগুলোকে নিজ দেশে সফরে নিতে উন্মুখ হয়ে আছে। তাই বাংলাদেশ দল এখনো নিরাপত্তা হুমকির মুখে সেখানে সফরে যাবে কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। এই বিষয়ে আকরাম খান বলেন, ‘পাকিস্তানে খেলার ব্যাপারে একটা কথা বলবো। আমাদের বোর্ড সভাপতি যেটা বলেন, যে নিরাপত্তা ইস্যুটা আমাদের কাছে বড় । এটাই আসল। এছাড়া সিদ্ধান্ত যে শুধু ক্রিকেট বোর্ডের তা না। আমরা কোথায় খেলবো, সিদ্ধান্তটা এখনও পুরোপুরি হয়নি। আমরা দুবাই খেলবো নাকি পাকিস্তানে, তা নির্ভর করছে ওদের উপরই। তো কথাবার্তা চলছে। হয়তো দশদিনের মধ্যেই সেটা ফাইনাল হবে। পরে তা আমাদের বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’