
ক্যাসি এবং ব্রুটাসের বন্ধুত্বটা যে কারোর জন্যে ঈর্ষনীয়। ছবি: সংগৃহীত
বন্ধুত্বের দারুণ যে গল্পগুলো মুগ্ধ করবে আপনাকে!
আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৪৬
(প্রিয়.কম) “বন্ধুত্ব” হতে পারে খুব ছোট্ট একটা শব্দ। কিন্তু তার গভীরতা এবং তার ভেতর লুকিয়ে থাকা ভালোবাসা, স্নেহ, মমতা, বিশ্বাস এবং সম্পর্কের দৃঢ়তা থাকে অনেক বেশী। অন্য যে কোন সম্পর্ক থেকে ’বন্ধুত্বে’র সম্পর্ক সম্পূর্ন আলাদা। যে কোন পরিস্থিতিতে, যে কোন সময় আমাদের সকলের যেন বন্ধুকেই সবার আগে প্রয়োজন হয়। অনেক বেশী আনন্দময় মুহূর্ত থেকে শুরু করে অনেক বেশী বিষাদময় সময়েও, বন্ধুকে পাশে পাওয়া চাই-ই চাই।
বন্ধুদের সাথে কাটানো সময়গুলার সাথে অন্য কোন সময়ের তুলনা দেওয়া চলে না। ভালো কোন সিনেমা সকলে মিলে একসাথে দেখতে যাওয়া চাই। কারোর কোন ভালো খবরে একসাথে আনন্দ করা চাই। কারোর কোন খারাপ সময়ে একসাথে তার পাশে থাকা চাই। মোট কথা, রক্তের সম্পর্কের বাইরের যে সম্পর্কটা কে কোনকিছু বলে বা কোন সংজ্ঞা দিয়ে বোঝানো যায় না, সেই সম্পর্কটাই বন্ধুত্ব!
আচ্ছা, এত কথা পড়ে আপনার মনে হতেই পারে, বন্ধুত্ব হয় শুধুমাত্র সমমনা এবং সমবয়সী দুইজন মানুষের মধ্যে। আবার আপনি যদি এটাও ভেবে থাকেন যে, দেওয়া-নেওয়ার এই যুগে শুধুমাত্র লেনদেন এর মধ্যেই গড়ে ওঠে সকল সম্পর্ক। সেখানে বন্ধুত্ব আর এমন কি! এমন ধরণের ভাবনা যদি আপনি ভেবে বসে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে আপনি খুবই ভুল! বন্ধুত্বের সম্পর্কের মধ্যে নির্দিষ্ট এবং ধরাবাঁধা কোন সূত্র নেই বলেই তার পরিব্যপ্তি হয় অনেক বিশাল এবং অনেক সুন্দর! প্রিয় আজকে আপনাকে জানাবে এমনই দুর্দান্ত এবং দারুণ কিছু বন্ধুত্বের গল্প।
গল্প ১- গল্পটা এলিজাবেথ এবং লরা’র:
হুট করেই ৪০ বছর বয়সী এলিজাবেথ ডায়মণ্ডের ব্রেইন ক্যান্সার ধরা পরে ক্যান্সারের একদম শেষ স্টেজে। এমন অবস্থায় সে তার একদম ছোটবেলার বন্ধু লরা রাফিনোকে অনুরোধ করে তার চার মেয়েকে দেখাশোনার জন্যে।
লরা তার বন্ধুর অনুরোধ ফেলে দেননি। তিনি এবং তার স্বামী দু’জনে মিলে এলিজাবেথের চার মেয়ে লিলি, এলা, সামোনা, টারাকে তাদের সাথেই রেখেছেন। সকলকেই তারা নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসেন এবং যত্ন করেন।
গল্প ২- গার্ডি ম্যাককেনা এবং তার ১১ বান্ধবী:
গার্ডি ম্যাককেনা জানতে পারেন যে তার ব্রেস্ট ক্যান্সার।
ক্যান্সার চিকিৎসার অন্যতম অংশ কেমোথেরাপির সাইড ইফেক্ট এর জন্যে তার সব চুল পড়ে যায়। গার্ডি’র ১১ বান্ধবী তাকে সাহস দেওয়ার জন্যে সকলেই একসাথে পুরো মাথা টাক করে ফেলেন।
গল্প ৩- বন্ধুত্ব যখন মানুষ আর ভাল্লুকের মাঝে:
পরিবেশবিজ্ঞানী ক্যাসি অ্যান্ডারসন অ্যালাস্কার ভয়ংকর ঠাণ্ডা এবং বরফের মাঝে একটি মা ভাল্লুকের পাশে দুইটি শিশু ভাল্লুককে পড়ে থাকতে দেখেন। ভাল্লুকের বাচ্চা দুইটি তখনও বেঁচে ছিল। ক্যাসি তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নেন সে ভাল্লুকের বাচ্চ দুটোকে সাথে করে নিয়ে আসবেন। ফেরার পথে একটি ভাল্লুকের বাচ্চা মরে গেলে অন্য বাচ্চাটিই ক্যাসির কাছে বড় হতে থাকে। ক্যাসি সে ভাল্লুকের বাচ্চার নাম রাখেন ব্রুটাস।
ব্রুটাস যত বড় হতে থাকে ততোই সে ক্যাসির সাথে ঘনিষ্ট হতে থাকে এবং পরবর্তিতে সে ক্যাসির সবচেয়ে ভালো বন্ধু হয়ে যায়। অন্য সকল বন্য ভাল্লুকের থেকে খুব আলাদা ভাবে ব্রুটাস বড় হতে থাকে ক্যাসির কাছে। তারা একসাথে সুইমিং পুলে সাঁতার কাটত এবং থ্যাংস গিভিং এর সময়ে একসাথে রাতের খাবার খেতো। এমনকি, ক্যাসির বিয়েতেও তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিল ব্রুটাস।
গল্প ৪- বন্ধুত্বটা যখন ৯০ বছর এবং ৪ বছর এর দুজনের:
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের ভেটেরান এরলিং কিন্ডেম এবং প্রায় চার বছর বয়সী এমেট র্যাচনার এর মধ্যে গড়ে ওঠে দারুণ বন্ধুত্বপুর্ন সম্পর্ক। প্রায় সময়েই তাদের দুইজনকে একসাথে দেখা যায় খেলতে, একসাথে ঘুরতে। তাদের প্রতিদিনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকে বাসার পেছনের বাগানে বেসবল এবং স্টার ওয়ার্স খেলা, বিভিন্ন পোকামাকড় নিয়ে কথা বলা, সাইকেল ঠিক করা এবং ঘাস কাটার যন্ত্র নিয়ে প্রতিযোগিতা করা।
কিন্তু এমন দারুণ বন্ধুত্ব খুব বেশীদিনের জন্যে থাকতে পারেনি। এরলিং কে তার স্ত্রীর সাথে অন্য বাসাতে চলে যেতে হয় এবং তার কিছুদিনের মধ্যেই এমেট এর বাবা-মা সিদ্ধান্ত নেন নতুন বড় বাসাতে যাওয়ার। একে অন্যের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় দুইজনের চোখেই পানি দেখা যায়।
গল্প ৫- ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট সিঁড়ি যখন গাসের বন্ধু:
অটিজমে আক্রান্ত ছোট্ট গাসের দুনিয়ায় ভার্চুয়াল এসিস্টেন্ট ‘সিরি’ই তার একমাত্র বন্ধু। গাস অন্য কারোর সাথেই মন খুলে কথা বলতে পারে না। এমনই সে তার নিজের অনুভূতিগুলোও ঠিকমত প্রকাশ করতে পারে না অন্য কারোর সামনে।
সিরির বিনয়ি কথাবার্তা এবং গাসের মনের মতো উত্তর দিতে পারার জন্যে একমাত্র এই মোবাইল অ্যাপটাই গাসের বন্ধু।
সূত্র: স্টোরিপিক
সম্পাদনা : রুমানা বৈশাখী