
ছবি সংগৃহীত
মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নিয়ে প্রশ্ন, ৪ মামলা - দৈনিক ইত্তেফাক
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:৩৯
ফাইল ছবি।
(প্রিয়.কম) চার কারণে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া ভেস্তে যেতে বসেছে। নতুন করে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ, মুক্তিযোদ্ধার ন্যূনতম বয়স ১৩ বছর করা, বিসিএস মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের বাছাই প্রক্রিয়ার বাইরে না রাখা এবং ক্ষেত্রবিশেষে স্থানীয়ভাবে যাচাই-বাছাই কমিটিতে অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম নিয়ে সারাদেশেই এই যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া কার্যত প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এ নিয়ে পৃথক চারটি মামলাও হয়েছে।
সোমবার ‘মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নিয়ে প্রশ্ন, ৪ মামলা’ শিরোনামে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের নতুন প্রক্রিয়া শুরুর আগে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর একটি গেজেট প্রকাশ করে। এতে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে: ১৩ বছর বয়সী কোনো ব্যক্তি যে বা যারা ভারতে প্রবেশ করে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তারা মুক্তিযোদ্ধা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যারা জনমত সংঘটিত করেছেন, যারা মুজিবনগর সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছেন তারাও মুক্তিযোদ্ধা। এ ছাড়া যেসব ব্যক্তির নাম ‘লাল মুক্তিবার্তা’য় এবং ভারতীয় তালিকায় রয়েছে তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃত এবং এসব তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের আর নতুন করে যাচাই-বাছাইয়ের দরকার হবে না। অর্থাত্ তাদেরকে যাচাই-বাছাইয়ের বাইরে রাখা হয়েছে। কিন্তু ১৯৭৩ সালে যেসব মুক্তিযোদ্ধাকে (বিসিএস মুক্তিযোদ্ধা অফিসার) পিএসসির সুপারিশে নিয়োগ করা হয়েছিল তাদেরকে যাচাই-বাছাইয়ের বাইরে রাখা হয়নি। ১৯৭২ সালের ২৩ জুন শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা পদে শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়োগের জন্য ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। বয়সসীমা ধরা হয়েছিল ২১ থেকে ৩০ বছর। যেসব মুক্তিযোদ্ধা এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন তাদেরকে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়। এখন এসব মুক্তিযোদ্ধার প্রশ্ন: তারা বঙ্গবন্ধুর সময়েই দালিলিক প্রমাণ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। এখন আবার কী জন্য তাদেরকে যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় আনা হচ্ছে?
বিষয়টি নিয়ে তারা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা), মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেও কোনো ফল পাননি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হলেও তা আমলে নেয়নি মন্ত্রণালয়। পরে বাধ্য হয়ে তারা হাইকোর্টে রিট করেছেন এবং হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের যাচাই-বাছাই স্থগিত করে দিয়েছে। আবার মুক্তিযোদ্ধার বয়স ন্যূনতম ১৩ বছর নির্ধারণের বিষয়েও আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত এই রকম বয়স নির্ধারণ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না সে বিষয়ে রুল জারি করেছে। এছাড়া যশোরের কেশবপুর উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যদিও এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই সেখানে যাচাই-বাছাই অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রিয় সংবাদ/বাদল/খোরশেদ