ছবি সংগৃহীত

একজন আর্টিস্টের মানসিকভাবে রিল্যাক্স থাকা জরুরি: জোভান

মিঠু হালদার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৬:২৬
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৬:২৬

ফারহান আহমেদ জোভান। ছবি: সংগৃহীত

(প্রিয়.কম) ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ ফারহান আহমেদ জোভান। অভিনয় করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘অক্ষর’ এ। ভালোবাসা দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উভয়কেই উপজীব্য করে এর গল্প সাজানো হয়েছে। এটি নির্মাণ করেছেন ভিকি জাহেদ। এর গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক নিজেই। সম্প্রতি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির শুটিং শেষ হয়েছে। এতে তার সহ-শিল্পী ছিলেন সাফা কবির। খুব শিগগিরই ইউটিউবে মুক্তি পাবে ছবিটি। চলচ্চিত্রটি এবং অভিনয়ের নানা দিক নিয়ে জোভান কথা বলেছিলেন প্রিয়.কম এর সাথে।

প্রিয়.কম: স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘অক্ষর’ হচ্ছে বিশুদ্ধ আবেগের গল্প। যে আবেগ মানুষকে সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে প্রিয়জনকে জয় করার সাহস যোগায়। আপনার কী মনে হয় সাধারণ দর্শকদের মাঝেও এই সাহস সঞ্চালিত হবে?

জোভান: এখন তো অনেক ধরনেরই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে। প্রত্যেকটার মধ্যে একটা করে ম্যাসেজ দেওয়ার চেষ্টা থাকে। আর ‘অক্ষর’ ছবিটিতেও এরকম একটি ম্যাসেজ থাকবে। তবে এখন সেই বিষয়ে কী বলা ঠিক হবে? কারণ আর কয়েকটা দিন পরেই তো দর্শক ইউটিউবে দেখতে পাবেন। তবে এটুকু বলতে পারি; এটা ম্যাসেজের চেয়েও বেশিকিছু।

প্রিয়.কম: আপনার চরিত্রটি কেমন ধরনের?

জোভান: আমার চরিত্রটি একজন গৃহশিক্ষকের। তবে মূল আকর্ষণটা হলো এটা নব্বইয়ের দশকের একটা গল্প। ওখানকার কস্টিউম, লুক বেশ ভিন্ন। আর ছেলেটা বই পড়তে বেশ ভালোবাসে। দুঃখের বিষয়, আমাকে চরিত্রের জন্য দাড়ি কেটে ফেলতে হয়েছে। এটা আমার জন্য কষ্টকর ছিল। কেমন জানি গাল খালি খালি লাগছিল।

প্রিয়.কম: চরিত্রটির জন্য প্রস্তুতি কেমন ছিল?

জোভান: চরিত্রের প্রস্তুতির জন্য সে সময়কালের মতো করে বড় কলারওয়ালা শার্ট বানাতে হয়েছে। তবে যেহেতু গল্পটা নব্বইয়ের দশকের সেহেতু পরিচালক দর্শকদের জন্য আরোপিত বেশিকিছু দেখাতে চাননি। ভিকি ভাইয়ের (পরিচালক ভিকি জাভেদ) ভালো সম্পর্কের খাতিরে তার উপর ভরসা করতে পারি। সেদিক থেকে আমি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের বাজারটা আলাদাভাবে তৈরি করতে চাই। এতে সাফার একটা ভালো ভূমিকা ছিল। আমি যতটুকু জানি সাফা এর আগে এমন ধরনের চরিত্রে কখনও অভিনয় করেনি।

ফারহান আহমেদ জোভান। ছবি: সংগৃহীত

প্রিয়.কম: সহশিল্পী সাফা কবিরের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

জোভান: সহশিল্পীর সাথে কাজের বোঝাপড়াটা, আসলে বলে কয়ে হয় না। আমি মনে করি অনস্ক্রিনের পাশাপাশি অফস্ক্রিনেও ভালো সম্পর্ক থাকা জরুরি। যেমন-মেকআপ রুমে বসে কাজটি নিয়ে একটু গল্প করা, কিংবা নিজেদের মধ্যে আড্ডার ছলে একটু আয়েশি ঢংয়ে কাজের বিষয়টি নিয়ে আসা। এমন করেই একে অপরের সাথে কাজের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিত এবং আমরা তা করেছি। এই যেমন মুভিটির কস্টিউম নিয়েও অনেক আলোচনা করেছি।

প্রিয়.কম: আপনার এই কাজটার (অক্ষর) ভিন্নতা কোথায়?

জোভান: ওই যে বললাম নব্বইয়ের দশকের একটি চরিত্রে আমাকে অভিনয় করতে হয়েছে। এ ধরনের চরিত্রে যদি আমাকে পরবর্তীতে অফার করা হয়, আমি আর এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করব না। আমি চেষ্টা করব একটু ভিন্ন কিছু করার। আমি এ কাজটি করার জন্য মায়ের কাছ থেকে সাজেশন নিয়েছি।

প্রিয়.কম: সমসাময়িককালে আপনাকে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে বেশ সরব দেখা যাচ্ছে, দর্শকরা কী আপনার অভিনয়ের জায়গাটাকে নির্দিষ্ট ছকে বেধে ফেলেছেন বলে মনে হয়?

জোভান: না। কারণ আমি একই ধরনের চরিত্রে কখনও অভিনয় করি না। যার কারণে আমি মনে করি না আমার ক্ষেত্রে বিষয়টা এমন ঘটবে। আর আমি খুব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করি। এটাও বড় একটা কারণ। আর আমি জানি যে কোন চরিত্রগুলোতে ভালো অভিনয় করতে পারব।

প্রিয়.কম: ইউটিউব তো বর্তমান স্মার্ট দুনিয়ার দর্শকদের বড় একটি মাধ্যম; তবে দর্শকরা ঠিক কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে আপনার ধারণা?

জোভান: ইউটিউবে দেখে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করার যথেষ্ট কারণ আছে। অল্প সময়ের এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র টিকেট কেটে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখতে খুব কম মানুষই আগ্রহ পায়। এর চেয়ে ইউটিউবে দেখেই তারা অধিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। আমার কাছে মনে হয় দিনের শেষে কাজের মানটাই বড় ব্যাপার।

ফারহান আহমেদ জোভান। ছবি: সংগৃহীত

প্রিয়.কম: এত কাজের মাঝেও নিজেকে সময় দেন কীভাবে?

জোভান: আমি মনে করি একজন আর্টিস্টের মানসিকভাবে রিল্যাক্স থাকা আর হোমওয়ার্ক করা ভীষণ জরুরি। একজন শিল্পী যদি মাসে ত্রিশদিন কাজ করে তার পারফমেন্স ভালো হবে না। এজন্য আমি যেটা করি প্রত্যেক ২-৩ মাস পর বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাই। বন্ধুদের সাথে ঘুরলে আমি মানসিক একটা শান্তি পাই।

প্রিয়.কম: এখন  ব্যস্ততা কী নিয়ে?

জোভান: এর মধ্যে বাংলালিংকের একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। কাল আবার এর ফটোশুট হবে। বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক নাটক বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হচ্ছে। নতুন কয়েকটি শুরু করব। তবে এবার সিরিয়ালটা কম করব। নতুন কয়েকটি একক নাটকে কাজ করব।

প্রিয়.কম: অভিনয় ক্যারিয়ারের সামনের সময়গুলো আপনি ঠিক কেমন দেখতে চান?

জোভান: আসলে আমি যদি পরিচালকদের চাহিদা অনুযায়ী সেভাবে সাপোর্ট দিতে না পারি তারাও একটা সময় আমাকে মূল্যায়ন করবেন না। এটা আমি জানি। কারণ সবাই নতুনত্ব দেখতে চায়। দর্শকেরা তো রয়েছেনই। একটা চরিত্র থেকে অন্য আরেকটি চরিত্র ধারণ করা কঠিন বিষয়। তাই আমাকে দায়িত্ব নিয়েই কাজটি করতে হয়। পরিচালক আমাকে অভিনয়ের টেকনিক্যাল জায়গাগুলো ধরিয়ে দিতে পারেন কিন্তু অন্যসব বিষয়ে তো আমার নিজেকে নিজেরই পরিচালনা করতে হবে। তাই ভালো কিছু করার চেষ্টা করছি।

প্রিয়.কম: প্রিয়কে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

জোভান: প্রিয়.কমকেও।

সম্পাদনা: ফারজানা রিংকী