কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবিটি প্রতীকী, ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

কেটারিং ব্যবসার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের ৮ কৌশল

রুমানা বৈশাখী
বিভাগীয় প্রধান (প্রিয় লাইফ)
প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০১৯, ২১:০৮
আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৯, ২১:০৮

(প্রিয়.কম) আজকাল শহর অঞ্চলে কেটারিং ব্যবসা অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই খাবার রান্না করে সাপ্লাই দেওয়ার কাজটি বাড়িতে বসেই করে থাকেন। কেবল নারীরা নন, অনেক পুরুষও এখন কেটারিং ব্যবসায় জড়িত। অনেকেরই উপার্জনের একমাত্র উৎস এখন কেটারিং ব্যবসা। তা ছাড়া এ ব্যবসায় লাভের পরিমাণও বেশ অধিক রেস্টুরেন্ট ব্যবসার তুলনায়।

কেটারিং ব্যবসার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে চান? জানিয়ে দিচ্ছি এমন আটটি টিপস, যা আপনাকে সাহায্য করবে খুব সহজেই নিজের একটি ব্যবসা শুরু করতে ও তার মাধ্যমে অধিক পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে।

১। ব্যবসা শুরুর আগে স্থান নির্বাচন খুবই জরুরি। এলাকা এ ক্ষেত্রে অনেক বড় একটি ব্যাপার। উচ্চমধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত এলাকায় ডেলিভারি দিতে পারলে অর্ডার বেশি পাবেন এবং মুনাফাও অধিক হবে। যদি বাড়ির বাইরে পৃথক স্থান নির্বাচন করেন কেটারিংয়ের জন্যে, তাহলে অবশ্যই লোকেশন বুঝে নিন। যেসব বাড়িতে গ্যাস আছে, এমন স্থান নির্বাচন করুন। আশপাশে বাজার ও পাইকারি মুদির দোকান থাকলে খুবই ভালো। অত্যধিক বিদ্যুৎবিভ্রাট হয় এমন স্থানে কেটারিং করতে গেলে ঝামেলার মুখোমুখি হবেন।

২। ব্যবসা শুরুর আগেই আপনার বাড়িওয়ালা বা কেটারিংয়ের স্থানের মালিকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে নিন। কেননা কেটারিং ব্যবসায় গ্যাস ও পানির ওপরে চাপ পড়ে, যা অনেক বাড়িওয়ালাই পছন্দ করেন না। তা ছাড়া প্রতিবেশীদেরও পছন্দ-অপছন্দের একটি ব্যাপার থাকে; কেননা সারাক্ষণ খাবারের গন্ধ কারোই ভালো লাগবে না। ব্যবসা কিছুদিন করার পর হুট করে বাসা ছাড়ার নোটিশ পেলে বিপাকে পড়বেন। তাই আগেই সব জানিয়ে নিন।

৩। ফেসবুকে নিজের পেজ ও গ্রুপ পরিচালনা করুন। এ ছাড়াও অন্যান্য ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোতে অ্যাড হয়ে যান। আজকাল বাস্তব জীবনের চেয়ে ফেসবুকে প্রচারণা করলেই কেটারিং ব্যবসায় অধিক অর্ডার পাওয়া যায়।

৪। বাবুর্চি বা কাজের মানুষের ওপরে নির্ভর করার চেয়ে অধিক বিড়ম্বনা আর হয় না। কেননা এরা যখন-তখন আপনাকে বিপাকে ফেলবে। তাই সফল কেটারিং ব্যবসা করতে চাইলে অবশ্যই মুল রান্নাটা নিজেই শিখে ফেলুন। হোম কেটারিং হলে গৃহকর্মী দিয়েই কাজ চলে যাবে, কিন্তু বড় মাপের কেটারিং হলে পেশাদার লোক রাখুন।

৫। গ্রাহকের সঙ্গে সৎ থাকুন, বাড়িতে তৈরি খাবারকে বাড়ির মতোই থাকতে দিন। অনেকেই ঘরে তৈরি খাবারে রেস্তরাঁর স্বাদ আনতে টেস্টিং সল্ট বা এই জাতীয় উপাদান ব্যবহার করেন। এই কাজটি করবেন না। মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের খোঁজেই কিন্তু গ্রাহক ঘরে তৈরি খাবার নিচ্ছেন। গ্রাহককে সময় দিন, তিনি কী চাইছেন তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জেনে নিন। খেয়াল রাখবেন, একেক মানুষের রুচি একেক রকম। তাই গ্রাহকের পছন্দ জেনে নিয়ে সেই অনুযায়ী খাবার দেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে ব্যবসায় অধিক প্রসার পাবেন।

৬। প্যাকেজিং খুব সুন্দর করার চেষ্টা করুন। এমনভাবে খাবার প্যাক করবেন, যেন যেতে যেতে খাবারের কোনো ক্ষতি না হয়। খাবারটি সুন্দরভাবে না পেলে গ্রাহকের প্রত্যাশা পূরণ হবে না, তিনি আর অর্ডার করবেন না।

৭। আজকাল খাবার ডেলিভারি করে এমন অনেক কোম্পানি আছে। তবে হ্যাঁ, এসব কোম্পানির ডেলিভারি চার্জ একটু বেশি বা অনেক ডেলিভারিম্যানের আচরণ ভালো হয় না। সম্ভব হলে নিজের একজন ডেলিভারিম্যান নিয়োগ দিন, ব্যবসায় প্রসার হলে আস্তে আস্তে লোকবল বাড়ানো যাবে। ডেলিভারিম্যানকে রেস্তরাঁর ওয়েটারদের মতোই সুন্দর ব্যবহারের ট্রেনিং দিন। এতে ব্যবসা ভালো হবে।

৮। হোমশেফ, ফুড পিয়ন ইত্যাদি নামে অসংখ্য কোম্পানি আজকাল তৈরি হয়েছে, যারা কিনা হোমশেফদের কাছ থেকে খাবার সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসা করে থাকে। বিনিময়ে তাদেরকে দিতে হয় মুনাফার একটি অংশ। এসব কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। তারাই আপনাকে অর্ডার সংগ্রহ করে দেবে ও খাবারটি ডেলিভারি করবে।

মনে রাখতে হবে, ভালোভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্যে চাই সততা ও নিষ্ঠা। অসৎ ব্যবসা করে বা আলসেমি করে খুব বেশিদিন কিছুই চালিয়ে যেতে পারবেন না।

প্রিয় লাইফ/আর বি/আজাদ চৌধুরী