কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

চিন্ময় রায়। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেতা চিন্ময় রায় আর নেই

শামীমা সীমা
সহ সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৩:৪৭
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৩:৪৭

(প্রিয়.কম) বাংলা চলচ্চিত্রের আরেক অধ্যায়ের যেন সমাপ্তি ঘটল। প্রয়াত হলেন অভিনেতা চিন্ময় রায়। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। প্রবীণ এ অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

গতবছরের জুন মাসে ছাদ থেকে পড়ে আহত হওয়ার পর থেকেই অসুস্থ ছিলেন ‘বসন্ত বিলাপ’ অভিনেতা। নানা রোগে ভুগে অবশেষে গতকাল রাতের খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ বোধ করার কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন চিন্ময় রায়।

বেশকিছু দিন ধরেই সিনেমা জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন চিন্ময়। অনেকদিন আগেই মারা গেছেন চিন্ময়ের স্ত্রী। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাকে খুব বেশি আর সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা যায়নি। বছর খানেক আগে নিজের ফ্ল্যাটের সামনে থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তার পায়ে ও মাথায় গুরুতর চোট লাগে। সেই আঘাত থেকে পরের দিকে সেপটিসেমিয়া হয়ে যায় তার। সেপটিসেমিয়ার জেরেই চিন্ময় রায়ের মৃত্যু বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

চিন্ময় রায়। ছবি: সংগৃহীত

তার মৃত্যুর খবর জানান তার দীর্ঘদিনের ম্যানেজার প্রসেনজিৎ। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ মারা গেছেন চিন্ময়দা। ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার পর থেকেই অসম্ভব শারীরিক কষ্টে ভুগছিলেন তিনি। আমি তার শেষ বয়সের সঙ্গী ছিলাম। দীর্ঘ ৮ বছর তার সঙ্গে ছিলাম। তার শেষ জীবনের দুঃখ কষ্টের সঙ্গী আমি।’

তার এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। মেয়ে থাকেন চেন্নাইতে। তিনি কলকাতায় আসার পরই চিন্ময়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

১৯৪০ সালের ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশের কুমিল্লায় জন্ম তার। প্রথমে ছোট ভূমিকায় অভিনয় শুরু করলেও পরে তিনি টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা পাকা করে নেন। মূলত কমিক চরিত্রে দেখা যেত চিন্ময় রায়কে। তপন সিং পরিচালিত ‘গল্প হলেও সত্যি’ সিনেমায় তার অভিনয় বিশেষ দাগ কেটে যায়। বড়পর্দায় টেনিদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চিন্ময় রায় তার কৌতুকাভিনয়ের জন্য বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ৷

‘মৌচাক’, ‘হাটেবাজারে’, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ননী গোপালের বিয়ে’, ‘ঠগিনী’র মতো অসংখ্য বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন। পরিচালনা করার খুব ইচ্ছে ছিল তার। শেষ জীবনে ছবি পরিচালনা করার কথা ভাবতেন। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে সল্টলেকে তার শ্রাবণী আবাসনের বাড়িতে পৌঁছান স্থানীয় মন্ত্রী সুজিত বসু।

তথাকথিত সাদামাটা চেহারা সত্ত্বেও নিজের অভিনয় প্রতিভায় রূপালি পর্দায় নায়কদের পাশে রীতিমতো নজর কেড়েছেন চিন্ময় রায়। নবদ্বীপ হালদার, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় বা তুলসী চক্রবর্তীর মতো কিংবদন্তি অভিনেতাদের পর বাংলা সিনেমায় কমেডিয়ানের ভূমিকায় রবি ঘোষ বা অনুপ কুমারের সঙ্গে পাল্লাও দিয়েছেন সমান তালে। তার প্রয়াণ বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। আজ সোমবার তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র: ইকোনোমিক টাইমস

প্রিয় বিনোদন/রুহুল