ছবিটি প্রতীকী, ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

শত কষ্টের মাঝেও হাসি মুখে থাকবেন কীভাবে?

রুমানা বৈশাখী
বিভাগীয় প্রধান (প্রিয় লাইফ)
প্রকাশিত: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:৪১
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:৪১

(প্রিয়.কম) আমাদের চারপাশেই কিছু মানুষ আছেন, যারা কিনা যেকোনো অবস্থাতেই হাসিমুখে থাকতে পারেন। তাদেরকে দেখে আমরা ভাবি- ‘একজন মানুষ এতটা সুখী হয় কীভাবে?’ ভাবনাটি ভুল। কেননা, এমন মানুষেরা কেবল সুখী হলেই হাসেন না। বরং তারা শিখে নেন যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার বিদ্যা। যেকোনো অবস্থা থেকেই ভালো কিছু খুঁজে নেয়াটা তারা জানেন বলেই ভেঙ্গে পড়েন না কখনো। শত কষ্টের মাঝেও তারা হাসতে পারেন, ভালো থাকতে পারেন, অন্যকেও ভালো রাখতে পারেন। কিন্তু কীভাবে?

আজকের ফিচারে থাকছে পাঁচটি চমৎকার কৌশল, যেগুলো আপনাকে শেখাবে জীবনের পথের যেকোনো দুঃখ মোকাবিলা করতে।

মেনে নিন

আমরা মানি কিংবা না মানি, এটাই কিন্তু সত্য। জীবন কখনো অনন্তকালের সুখ যেমন হতে পারে না, তেমনি অনন্তকালের দুঃখও নয়। সুখের দিন পেরিয়ে গেলে যেমন দুঃখ আসবেই, তেমনি দুঃখের দিনের পর অবধারিত থাকে সুখ। প্রয়োজন কেবল ধৈর্য ধারণ করা। দুঃখের দিনে বেশি ভেঙ্গে পড়লে সুখের দিনগুলোকেও কিন্তু চিনতে পারবেন না আপনি। তাই অপেক্ষা করুন। নিজেকে ধৈর্য ধারণ করার শিক্ষা দিন।

বাস্তবতা বুঝে নিন

একটি কষ্ট যখন উপস্থিত হয়, আমরা তৎক্ষণাৎ প্রচন্ড ভেঙ্গে পড়ি। হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হয়ে যাই, হারিয়ে ফেলি হাসি ও আনন্দ। কিন্তু বাস্তবতা কি জানেন? বাস্তবতা হচ্ছে এই যে প্রাথমিক অবস্থায় পরিস্থিতি যতটা খারাপ মনে হয়, আদতে ততটা খারাপও থাকে না। সমস্যা যেমন জগতে আছে, সমাধানও আছে। কষ্ট যেমন আছে, নিরাময়ও আছে। আর এটাই হচ্ছে জীবনের সবচাইতে বড় বাস্তবতা। নিজের কষ্টের দাওয়াই খুঁজতে শুরু করুন, কষ্ট আপনা আপনি কমতে শুরু করবে।

আপন মানুষ খুঁজে নিন

আমাদের সকলেরই খুব একান্ত কিছু আপন মানুষ থাকে। যাদের সাথে আমরা সব কথাই বলতে পারি, সব দুঃখ ভাগ করে নিতে পারি। কষ্টের সময়ে এই আপন মানুষগুলোর সাহায্য নিন। তাদেরকে আঁকড়ে ধরুন, তাদের কাছে একটু বেশি সময় চেয়ে নিন। আপন মানুষদের সাহায্য চাইলে, তাদের সাথে মনের কথা বললে কেউ ছোট হয়ে যায় না।

তালিকা করুন

সবসময়ে মন বিষণ্ণ থাকে, ভাবেন আপনার চাইতে দুঃখী কেউ জগতে নেই? এই ধারণাটি একদম ভুল। একটি সাদা কাগজ নিন। এক পাশে তালিকা করুন আপনার দুঃখের কারণগুলির। ঠিক পাশেই তালিকা করুন আপনার জীবনের প্রাপ্তিগুলির। দেখবেন, কষ্টের চাইতে প্রাপ্তির তালিকা অনেক দীর্ঘ। এই তালিকাটি রোজ দেখুন আর নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে জগতে অনেক মানুষের চাইতে কত বেশি ভাগ্যবান আপনি।

এমনিতেই হাসুন

হাসিমুখে থাকার জন্য চরম সুখী হবার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন কেবল একটু ইচ্ছার। জীবনে কষ্ট থাকলেই সারাক্ষণ কাঁদতে হবে, এমনটা কে বলেছে? কেউ বলেনি। তাই আপনার জীবনে কষ্ট আছে বলেই আপনাকেও কাঁদতে হবে না। রোজকার জীবনে হাসি মুখে থাকার চর্চা করুন। নিজের সামনে হাসুন, অন্যের সামনেও হাসুন। প্রথম প্রথম কষ্ট হবে, কিন্তু একটা সময়ে এই হাসিই আপনার বেদনা কমিয়ে আনবে।

উপভোগ করুন জীবনের মুহূর্তগুলি

দিন যাপনে নানা রকমের ছোট ছোট মুহূর্ত থাকে, যা আলোকিত করে দিতে পারে মন। সামান্য একটি ফুলের সৌন্দর্য, একটি ভালো গান, একটি ভালো বই, ভালো খাবার বা সিনেমা দেখা, কোথাও শান্তিতে বসে থাকা কিছুক্ষণ, শিশুদের মুখ ইত্যাদি সবই মন ভালো করে। আর সবচাইতে চমৎকার ব্যাপারটি হচ্ছে এসব দেখতে বা উপভোগ করতে বিশেষ কোনো কষ্ট করতে হয় না। খুব খেয়াল করে তাকালে দেখবেন যে আপনার চারিদিকেই আনন্দিত হবার অসংখ্য ছোট ছোট কারণ উপস্থিত। এই ছোট কারণগুলিকে একত্রিত করে বেঁচে থাকুন, বড় দুঃখের ওপর থেকে ফোকাস সরে যাবে।
একটিই জীবন। বাঁচুন আনন্দে, বাঁচুন হাসিমুখে।

প্রিয় লাইফ/আর বি/রুহুল