কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ফাইল ছবি

কবে মেয়র পাবে ঢাকা উত্তর

মোক্তাদির হোসেন প্রান্তিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৫৪
আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৫৪

(প্রিয়.কম) লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর মারা যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। যথানিয়মে এর একদিন পর ঢাকা উত্তরের মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, শূন্য হওয়া পদে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে উপনির্বাচন আর হয়নি। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে একটি বছর। এক বছর পর সেই স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে উপনির্বাচন হতে এখন আর কোনো বাধা রইল না। 

১৬ জানুয়ারি, বুধবার দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের শূন্যপদে উপনির্বাচনে স্থগিতাদেশ ও রুল খারিজ করেছে হাইকোর্ট।

মেয়র পদ শূন্য হওয়ার পর ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট করেন দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। একজন হলেন ভাটারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, অপরজন বেরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম।

রিটের একটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার সচিব ও উত্তর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে বিবাদী করা হয়েছে। আরেকটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব ও নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে। আতাউর রহমানের পক্ষে হাইকোর্টে শুনানি করেন মোস্তাফিজুর রহমান খান ও আহসান হাবিব ভূঁইয়া। জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী ও মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন সেলিম।  রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান।

আইনজীবীরা জানান, ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করার কথা ছিল। কিন্তু তখন পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। যিনি প্রার্থী হবেন তিনি জানতেন না তিনি ভোটার কিনা। তা ছাড়া মনোনয়নপত্রে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর থাকতে হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশ না হলে এটা সম্ভব হচ্ছিল না। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৫ (৩) উপধারা অনুযায়ী ‘মেয়রের পদসহ করপোরেশনের শতকরা ৭৫ ভাগ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইলে এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইলে, করপোরেশন, এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’

এদিকে ২০২০ সালের মে মাসে শেষ হচ্ছে এই সিটির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পাঁচ বছরের মেয়াদ। ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র পদে উপ-নির্বাচন ও দুই (ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ) সিটিতে নতুন যুক্ত হওয়া ৩৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে উপ-নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। পাশাপাশি কমিশন জানিয়েছিল, একই দিনে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন অঞ্চলে যুক্ত হওয়া ৩৬টি নতুন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদেও নির্বাচন হবে। কিন্তু ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন ও সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচন ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে। উচ্চ আদালতের এমন আদেশের পরে প্রভিশনাল লিভ পিটিশন করেনি। রায়ের সত্যায়িত কপি পাওয়ার আগেই (প্রভিশনাল লিভ পিটিশন) এ আবেদন করতে হয়। ২৪ জানুয়ারি রায়ের কপি পাওয়ার পরে কমিশন সভায় আইনি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। পরে আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিল ৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন রিটকারীপক্ষ সময়ের আবেদন জানালে আদালত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি ইসির পক্ষে সময়ের আবেদন করা হলে আপিল বিভাগ সময় দেয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে নির্বাচন প্রশ্নে দেওয়া রুল দ্রুত সময়ের মধ্যে হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। ওই নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে ইসির করা পৃথক তিনটি লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেওয়া হয়।

নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই করার জন্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলামকে মনোনীত করেছিল আওয়ামী লীগ। অপরদিকে বিএনপি মনোনীত করেছিল তাবিথ আউয়ালকে। যিনি আনিসুল হকের সঙ্গেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

রিটকারীদের যুক্তি, উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ড ধরলে কাউন্সিলরের সংখ্যা পঁচাত্তর শতাংশ হয় না। কারণ নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে নির্বাচনই হয়নি। সে হিসাবে মেয়র পদ গঠিত হচ্ছে না। তা ছাড়া সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে যারা কাউন্সিলর হবেন, তারা পুরো পাঁচ বছর থাকবেন না কেন, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হয় ওই রিটে।

প্রিয় সংবাদ/রিমন