কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

চেহারা দেখে মানুষের ভেতরটা বোঝা সহজ নয়। ছবি: প্রিয়.কম

আপনি একজন সাইকোপ্যাথের সাথে প্রেম করছেন না তো?

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ২২:৩০
আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ২২:৩০

(প্রিয়.কম) বিকৃত মানসিকতার মানুষ বা সাইকোপ্যাথের সাথে প্রেম? তা তো শুধু হরর সিনেমায় দেখা যায়! কিন্তু আসলেই কী তাই? আসলে কিন্তু প্রতি ১০০ জনের মাঝে একজন মানুষ সাইকোপ্যাথ হতে পারেন। তারমানে, আপনার ভালোবাসার মানুষটিও সাইকোপ্যাথ হওয়ার একটি সম্ভাব্যতা রয়েছে। বুঝবেন কী করে তিনি সাইকোপ্যাথ? চেহারা দেখে তো আর ভেতরটা বোঝা যায় না!

হরর সিনেমা দেখে আমাদের ধারনা হয়ে গেছে সাইকোপ্যাথ মানেই তার চেহারা ক্রূর, আচরণ রুক্ষ ও সে পেশায় খুনি। আসলে বেশিরভাগ সাইকোপ্যাথ আসলে সন্ত্রাসী নয়। বরং তারা সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করেন। এ কারনে সাইকোপ্যাথ বোঝার উপায় কম। তবে কিছু গবেষণা রয়েছে এ বিষয়ে।

সাইকোপ্যাথদের শনাক্ত করা নিয়ে কিছু মতভেদ আছে। তবে সব বিশেষজ্ঞই স্বীকার করেন, সাইকোপ্যাথরা সমাজবিমুখী হয়, তাদের সহমর্মিতা, অনুশোচনা কম হয়, তারা মারমুখী স্বভাবের হয় ও হুটহাট সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের অবশ্য কিছু ভালো গুণও থাকে। যেমন তারা মানুষের ব্যাপারে ছোট ছোট বৈশিষ্ট্য খেয়াল করে ও কথোপকথনে সাবলীল হয়। তারা পেশাগত ক্ষেত্রেও সফল হয়।

  • সাইকোপ্যাথের সাথে প্রেম করতে গেলে সবার আগে যে বিষয়টিতে খটকা লাগবে তা হলো প্যাথোলজিক্যাল লাইং বা মিথ্যাচার। তারা সঙ্গীর সামনে ভালো সাজার সমূহ চেষ্টা করে ও তার উদ্দেশ্যে ঝুড়ি ঝুড়ি মিথা বলে থাকে। তবে তা ধরতে পারা সহজ নয় কারণ তারা অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে মিথ্যা উপস্থাপন করে।
  • নিজেকে নিয়ে খুবই গর্ব বোধ করে সাইকোপ্যাথরা। সঙ্গীকে অনেক সময়েই ছোট করে দেখার প্রবণতা দেখা যায় তাদের মাঝে। এমনকি প্রেমিক বা প্রেমিকাকে নিয়ন্ত্রন করার উদ্দেশ্যে তার আত্মবিশ্বাস ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা চালাতে পারে সে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘গ্যাসলাইটিং’। তারা সাধারণত এই কাজটি সহজে করতে পারে কারণ তারা প্রেমিক/প্রেমিকাকে খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করে। সঙ্গীকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে প্রচণ্ড রাগারাগিও করে তারা। এমনকি নিজের ফায়দা ওঠাতে অনুনয়ের আশ্রয়ও নেয় তারা।
  • গবেষণা থেকে দেখা যায়, সাইকোপ্যাথদের মস্তিস্ক এমনই, যে তারা সহজে অনুশোচনায় ভোগে না। এতে মানসিকভাবে বেশি আহত হয় তার প্রেমিক বা প্রেমিকা। এমনকি, সে যত বড় সাইকোপ্যাথ, তার মাঝে সম্পরকে প্রতারণা করা ও প্রেমিক/প্রেমিকাকে লুকিয়ে অন্য সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা বেশি হয়।
  • সাইকোপ্যাথরা অন্যের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে পারে না বললেই চলে। এ কারনেও তাদের সাথে সম্পর্কে থাকা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। গবেষণায় দেখা যায়, তাদের মাঝে আসলে সহমর্মিতা আছে, কিন্তু তারা এই অনুভুতিটাকে এড়িয়ে চলে। এটাও দেখা যায়, তারা আসলে জানে তারা প্রেমিক/প্রেমিকাকে কষ্ট দিচ্ছে, তারপরেও কাজটি করে তারা। সাইকোপ্যাথদের মাঝে সোশিওপ্যাথি ও নার্সিসিজমের বৈশিষ্ট্যও দেখা যায়, এসব কারণেই তারা প্রেমে প্রতারণা করে অহরহ।
  • গবেষণায় দেখা যায়, সাইকোপ্যাথের সাথে প্রেম করতে গিয়ে পুরুষ ও নারী ভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। নারীরা সাইকোপ্যাথ প্রেমিকের আচরণে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন ও একটা সময় তাকে ছেড়ে চলে যান। অন্যদিকে পুরুষরা সাইকোপ্যাথ প্রেমিকার সাথে যত সময় কাটান, ততই ভয়ে থাকেন যে প্রেমিকা তাকে ছেড়ে চলে যাবে।
  • সাইকোপ্যাথের সাথে সম্পর্ক ছেদ করতে পারলে অনেকসময়েই দেখা যায় সে দুঃখিত হয়। কিন্তু সে দুঃখিত হয় শুধুমাত্র এই কারনে, যে প্রেমিক/প্রেমিকাকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ হারালো সে। এছাড়া তার সাথে সাধারণত সম্পর্কে ফিরে যাওয়ার চেষ্টাও ব্যর্থ হয়, কারণ তারা নিজের ঘাড়ে দোষ নিতে রাজি হয় না।মাঝে মাঝে নতুন ‘ভিকটিম’ খুঁজে না পেলে তারা প্রাক্তন প্রেমিক বা প্রেমিকার কাছে ফিরে আসে, কারণ সাইকোপ্যাথরা পরজীবী ধরণের জীবনযাপন করে। সে নিজে সঙ্গীর কোনো কাজে না আসলেও সঙ্গীর থেকে দাবি করে ষোলোআনা।

এ সব থেকে বোঝা যায় যে, সাইকোপ্যাথদের সাথে সম্পর্কে থাকাটা খুব সহজ নয়। এরপরেও অনেকে সাইকোপ্যাথদের নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো মেনে নিয়েই তাদের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে থাকে।

সুত্র: আইএফএলসায়েন্স

প্রিয় লাইফ/ আর বি