কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

শের বাহাদুর তামাং। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে নেপালি ছাত্রীদের ‘বিক্রি হতে হয়’, মন্তব্য করে পদ খোয়ালেন মন্ত্রী

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৪ জুলাই ২০১৮, ১৮:৫৬
আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮, ১৮:৫৬

(প্রিয়.কম) বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে পড়তে যাওয়া নেপালি নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার পর চাপের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী শের বাহাদুর তামাং।

রাজধানী কাঠমান্ডুতে এক সংবাদ সম্মেলনে তামাং স্বীকার করেন, নারীদের ব্যাপারে খুব স্পর্শকাতর বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেছিলেন। তার ওই মন্তব্যের ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের কাছে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

গত ২০ জুলাই এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী শের বাহাদুর তামাং বলেছিলেন, ‘মেডিকেলের ওপর যারা বাংলাদেশে লেখাপড়া করতে যায়, সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্যে তাদেরকে সেখানে নিজেদেরকে বিক্রি করতে হয়।’

তার এই মন্তব্য নেপালে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে বাংলাদেশে পড়তে যাওয়া নেপালি শিক্ষার্থীরা মন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান।

নেপালি শিক্ষার্থীরা বলেন, কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই মন্ত্রী তাদের ব্যাপারে মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন।

ড. রোজি মানান্ধার নামের এক চিকিৎসক, যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে নেপালে ফিরে গেছেন। তিনি বলেন, ‘তিনি (তামাং) কি কখনো বাংলাদেশে পড়তে যাওয়া নারী শিক্ষার্থীদের কাছে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলেন? আমরা সেখানে কত কষ্ট করে লেখাপড়া করি, তার তিনি কিছুই জানেন না, কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই তিনি এ কথা বলেছেন। কঠোর পরিশ্রম করেই আমি আমার সার্টিফিকেট পেয়েছি।’

ওই অনুষ্ঠানেই মন্ত্রী তামাং বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসা কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তিনি এ ধরনের অভিযোগের কথা শুনেছেন। অবশ্য তিনি এও বলেছিলেন যে, এসব অভিযোগের সত্যতা তিনি নিজে কখনো যাচাই করে দেখেননি।

কাঠমান্ডুর বিবিসির সংবাদদাতা সঞ্জয় দাখাল জানান, মন্ত্রী প্রথমে পদত্যাগ করতে চাননি। কিন্তু পরে তার দল ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের ভেতরেই তার ওপর প্রচণ্ড রকমের চাপ তৈরি হয়েছে। হয়তো এ কারণেই শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

মন্ত্রী তামাং-এর এই মন্তব্যের কারণে নেপালের সোসাল মিডিয়াতে তার তীব্র সমালোচনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অনেকেই লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ তুলে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

বিবিসির নেপালি বিভাগকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী তার এই মন্তব্যের জন্যে ক্ষমাও চেয়েছেন।

সিলেটের একটি মেডিকেল কলেজে পঞ্চম বর্ষে পড়ছেন এমন একজন শিক্ষার্থী সাব্বু পোখারেল বলেন, ‘নেপাল থেকে বাংলাদেশে পড়তে যাওয়া নারী শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের চাপের মধ্যে লেখাপড়া করে না। মন্ত্রীর এ কথা শোনার পর আমার বাবা-মা আমাকে ফোন করে এখানকার অবস্থা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখানকার অবস্থা মোটেও সে রকম কিছু নয়। বাংলাদেশে আমরা খুব নিরাপদে আছি।’

বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে প্রচুর বিদেশি শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। তাদের মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য অংশ নেপালি শিক্ষার্থী।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

প্রিয় সংবাদ/শান্ত