ছবি সংগৃহীত

রাতের বেলা শান্তিতে ঘুমাতে চান?

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০১৪, ১৯:১৬
আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৪, ১৯:১৬

ঘুম কম হচ্ছে? আজেবাজে চিন্তায় ঘুম হচ্ছে না? খুব সহজ একটা উপায় আছে ঘুমপাড়ানি মাসিপিসিকে ডেকে আনার। বালিশের নিচে/পাশে রাখা মোবাইল বা স্মার্টফোনটাকে বেডরুমের বাইরে রেখে আসুন। এর জন্যই আপনার ঘুম হচ্ছে না ঠিকমত। কারো কারো মাঝে অনিদ্রা রোগেরও উদ্ভব হয় এই ফোনের কারণে। এ কারণে শোবার ঘরটিকে রাখুন মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য সব ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে মুক্ত। জরিপে দেখা যায়, মোবাইল আছে এমন প্রতি দশ জন মানুষের মাঝে আট জনই মোবাইল বিছানায় নিয়ে ঘুমায়। আর তার মাঝে পাঁচ জন মোবাইলকে ব্যবহার করেন অ্যালার্ম ঘড়ি হিসেবে। কিন্তু এর কারণে ঘুমে যেমন সমস্যা হয়, তেমনি ঘুম থেকে ওঠার পর দুর্বল লাগে এবং মাথা ব্যথা করে অনেকেরই। এর পেছনে মূল দোষ হলো মোবাইল ফোনের স্ক্রিন থেকে আসা আলোর।

ঘুমের পেছনে আলোর দোষ কি? তা বোঝার জন্য আগে আমাদের বুঝতে হবে চোখের ওপর আলোর প্রভাব। দিনের বেলায় আলো আমাদের জন্য উপকারী হলেও ঘুমের সময় হলে চোখে আলোর প্রভাব খারাপ। রাতের বেলায় মোবাইলের উজ্জ্বল আলো আমাদের রেটিনাকে উদ্দীপিত করে। এর মাঝে নীল আলোর পরিমাণ অনেক বেশি থাক, যা রেটিনার ওপর অনেক বেশি প্রভাব রাখে। আমাদের শরীর তখন বিভ্রান্ত হয়ে ভাবে, তখন বুঝি রাত নয়, দিন। এ কারণে তখন আর আমাদের ঘুম হয় না। শরীরে মেলাটোনিন এবং কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য ওলটপালট হয়ে যায়। আপনি ঘুমানোর আগে ল্যাম্পের আলোয় বই পড়লে যত না ক্ষতি হবে, তার চাইতে মোবাইল/ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট ব্যবহার করে কাজ করতে গেলে অনেক বেশি ক্ষতি হবে। শুধু তাই নয়, ঘুমের সময়ে অল্প কিছুক্ষনের জন্যেও যদি আপনি এমন আলোর দিকে তাকান, তবে আপনার ঘুম নষ্ট হয়ে যাবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ঘুমের মাঝে মোবাইলে মেসেজ আসলে বা কল আসলে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং কিছু সময়ের জন্য হলেও ফোনের আলোর দিকে দৃষ্টি দিতে হয়। এটুকু সময়ই ঘুম নষ্ট করে দেবার জন্য যথেষ্ট। আর রাত্রে ঘুমের মাঝে যদি একবার আমরা জেগে যাই, তবে সম্ভাবনা প্রবল যে, আমরা সারা রাত আর ঘুমাতে পারব না। একবার কল আসলে বা মেসেজ আসলে আমরা সারা রাত উসখুস করতে থাকি, বারবার ফোন চেক করতে থাকি। এটা ঘুমের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
আরও একটা ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে আমাদের, তা হলো মোবাইলের সিগনালের থেকে মস্তিষ্কের ক্ষতি। এক ধরণের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের সাহায্যে আমাদের ফোন কাজ করে। এগুলো তেমন শক্তিশালী তরঙ্গ না হলেও ঘুমানোর সময়ে আমাদের মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপে এরা ব্যাঘাত ঘটাতেই পারে। গবেষণা থেকে জানা গেছে, মোবাইলের এই রেডিয়েশনের কারণে গভীর ঘুমের পর্যায়ে পৌঁছাতে দেরি হয় মানুষের। মোবাইল অথবা ওয়াই-ফাই এর রেডিয়েশনের কারণে মাথাব্যাথা, দুর্বলতা সহ বিভিন্ন ঘুমজনিত জটিলতা দেখা যায়। কিন্তু মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিলে বা বেডরুমের বাইরে রেখে আসলে তখন তাদের এসব সমস্যার উন্নতি হতে দেখা যায়। তাই ভালো করে ঘুমাতে চাইলে ফোন বন্ধ করে বেডরুমের বাইরে রেখে আসুন, আর নিশ্চিন্তে ঘুমান!