(প্রিয়.কম) ভালোবাসায় প্রতারিত হয়েছেন কখনো? খুব বিশ্বাস করে কাউকে নিজের জীবনের অধিকার সঁপে দিয়েছেন, আর তারপর একদিন জানতে পেরেছেন যে সেই মানুষটি অন্য কারো সঙ্গে প্রেমে ও যৌন সম্পর্কে লিপ্ত? হয়েছে কখনো আপনার সাথে এমন? কিংবা এখন হচ্ছে? সবক্ষেত্রে কাহিনীটা প্রায় একই রকম হয়। একটা মানুষ হলফ করে বারবার বলে যে সে আপনাকে ভালোবাসে। আপনার বিশ্বাস হয় না, কিছুতেই বিশ্বাস হয় না আপনার... পৃথিবীতে কেউ কাউকে এত ভালবাসতে পারে? কিন্তু সেই মানুষটা আপনাকে বিশ্বাস করায়। ক্রমশ একসময় স্থান করে নেয় আপনার মন-মস্তিষ্কে-জীবনে। তারপর একদিন যখন আপনি সত্যি সত্যি ভালোবেসে ফেলেন তাঁকে, আপনার গোটা অস্তিত্ব যখন কেবলমাত্র তার জন্য বরাদ্দ হয়, তখন আস্তে আস্তে বের হয় ভালোবাসার "সত্যিকারের" চেহারা।

ওয়াদা গুলো মিথ্যা হয়ে যায়, অনুভবগুলো বিবর্ণ হয়ে যায়, বিশ্বাস হয়ে দাঁড়ায় সবচাইতে মূল্যহীন বস্তু। একদিন আপনি আবিষ্কার করেন যে ঠিক যখন আপনি মানুষটাকে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরতেন, তার কিছুক্ষণ আগেই সে অন্য কারো সাথে যৌন সম্পর্কে করে এসেছে। রাতের পর রাত জেগে থাকতেন আপনি যে মানুষটির একটি ফোন বা মেসেজের অপেক্ষায়, সেই মানুষটি আপনাকে জাগিয়ে রেখে অন্য কারো সাথে ফোন সেক্স টাইপ কার্যকলাপে ব্যস্ত। আপনি হয়তো তার জন্য রাত জেগে বসে আছেন ফেসবুকে, আর সে তখন কারো সাথে নগ্ন ভিডিও চ্যাট করতে ব্যস্ত। আপনাকে বলছে ব্যস্ত আছি, কিন্তু সে ঠিকই কাজের বাহানায় ঘুরে বেড়াচ্ছে অন্য কাউকে নিয়ে। হ্যাঁ, বেশিরভাগ ভালোবাসায় প্রতারণা ঘটে তৃতীয় আরেকটি মানুষের জন্য। এবং সত্যি কথা বলতে কি, পৃথিবীতে কিছু মানুষই আছে এমন, যারা কিনা কখনো একজন মানুষ নিয়ে ভালো থাকতে পারে না। তাদের ভিন্ন ভিন্ন মানুষ চাই নিজের যৌন স্বাদ বদলের জন্য। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নিজের প্রতারক প্রেমিক বা প্রেমিকাকে যদি কোনভাবে হাতে-নাতে ধরেই ফেলেন, তাহলে কী করবেন?

মাথা ঠাণ্ডা রাখুন, বড় বড় নিঃশ্বাস নিন

প্রথমেই মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। এটা এই মুহূর্তে সবচাইতে কঠিন কাজ। কিন্তু রাখুন। বড় বড় নিঃশ্বাস নিন, প্রয়োজনে মুখ খুলে নিঃশ্বাস নিন। কিছু বলা করার আগে নিঃশ্বাস নিতে থাকুক। আস্তে আস্তে একটু শান্ত হয়ে আসবে মস্তিস্ক। হয়তো আপনার সামনেই সে বসে আছে অন্য কাউকে নিয়ে, বা মোবাইল/কম্পিউটারে আপনি আবিষ্কার করে ফেলেছেন তার প্রতারনার প্রমাণ। এমন অবস্থায় চিৎকার দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছা করে। তবে প্রথমেই এমনটা করবেন না। আগে নিজেকে একটু স্থির হতে দিন। একে শাস্তি দিতে চাইলে অবশ্যই শান্ত থাকুন।

প্রমাণ সংগ্রহ করুন

একটা অ্যাকশন নেয়ার আগে আপনার কাজ হচ্ছে প্রমাণগুলো রাখা। তাঁকে সামনা সামনি কারো সাথে দেখলে প্রথমেই ছবি তুলে ফেলুন। যদি মোবাইল ফোনে মেসেজ পান, সেগুলো চুপিসারে নিজের ফোনে ফরওয়ার্ড করুন। যদি ফেসবুকে কিছু পান তাহলে স্ক্রিন শট নিয়ে রাখুন। কিংবা যদি কারো কোথায় কিছু জানতে পারেন, চুপচাপ সেগুলো রেকর্ড করে রাখুন। এইসব নোংরা লোকজনকে শায়েস্তা অবশ্যই আপনি প্রমাণ ছাড়া করতে পারবেন না।

নিজেকে বাঁচাতে একটু চালাকি করুন

মানুষটির সাথে হয়তো আপনার ছবি বা স্মৃতিময় কিছু আছে। সেক্ষেত্রে সম্পর্ক ভাঙার আগে ছলে-বলে-কৌশলে সেগুলো সরিয়ে নিন তার কাছ থেকে। তারপর যা করার তা করুন।

প্রমাণ দেখিয়ে সরাসরি জিজ্ঞাসা করুন

এবার সময় তার প্রতারণা সম্পর্কে হাতে নাতে জিজ্ঞাস করার। জিজ্ঞাসা করুন, তার কী বলার আছে শুনুন। কিন্তু ভুল করেও তার কোন রকম ছলনার কোথায় বিশ্বাস করবেন না।

কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তির ব্যবস্থা করুন

হ্যাঁ, আপনি তাঁকে ভালোবেসেছিলেন। সত্যিকারের ভালোবাসা। কিন্তু প্রতারকদের কখনো বিনা সাজা দিয়ে ছেড়ে দিতে নেই। তাঁদেরকে শাস্তি দিন। কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি, যেন মানুষের সাথে প্রতারণা করার শখ মিটে যায় চিরকালের জন্য। আর হ্যাঁ, আপনি ছাড়াও অন্য যেসব মানুষদের সাথে সে প্রতারণা করছে তাঁদেরকে কৌশলে সব জানাবার ব্যবস্থা করুন। আপনার কারণে একটি মাত্র মানুষের জীবন রক্ষা পেলেও মন্দ কি! শেষ কথা, কিন্তু সবচাইতে ���ুরুত্বপূর্ণ কথা- নিজের খেয়াল রাখুন। যা হয়েছে সেখানে আপনার কোন দোষ ছিল না। তাই ভুল করেও নিজেকে দোষ দেবেন না।