ছবি সংগৃহীত

বরের পোশাক নিয়ে রামিম রাজের জরুরি পরামর্শ

Mahmud Ullah
লেখক
প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০১৬, ০৯:০২
আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৬, ০৯:০২

ছবি: শামসুল হক রিপন

(প্রিয়.কম) বিয়েএকজন মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই দিনকে ঘিরে থাকে সবার নানা আয়োজন। তবে বিয়ের পোশাক নিয়ে এদেশে মেয়েরা যেভাবে সচেতন থাকে সেইভাবে ছেলেরা সচেতন থাকে না। কিন্তু ফ্যাশন ট্রেন্ড চেঞ্জ হচ্ছে। এখন সবাই সচেতন।তাই জীবনের এই জরুরী মুহুর্তের পোশাক নিয়েই আজকের আয়োজন। বরের বিয়ের পোশাক নিয়ে প্রিয়.কমের ফ্যাশন পাঠকদের জন্য পরামর্শ শেয়ার করছেন বর্তমান সময়ের ব্যস্ত ফ্যাশন ডিজাইনার ও কউটরিয়ার রামীম রাজ। 

রামীম রাজ: বিয়ের সময় যখন এসে যায়, দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রেই ব্যস্ততার কারণে বিয়ের সঠিক পোশাক অনেকে বাছাই করতে পারে না। মূলত সময়ের অভাবে কোন পোশাকটা পরবে, তা পারফেক্ট হয়না। কিন্তু এখন প্রতিযোগিতার যুগে সবাই প্লানিং করেই সব কাজ করে। তাহলে কেন বিয়ের পোশাকের ব্যাপারে সচেতন হবে না সবাই।

গায়ে হলুদ: বিয়েতে পোশাক যেহেতু অনেক ইম্পোর্টেন্ট তাই পোশাকের বিষয়ে সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে নেয়াই ভাল। সেদিন কনে কি ড্রেস পরবে, কালার কি থাকবে সেই বিষয়টি জেনেও তার সঙ্গে পোশাকের বিষয়টি সেটেল করে নিতে পারে।

এখনকার সময়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান একসঙ্গে হয়। দুপক্ষই এক স্টেজে বসে গায়ে হলুদ দেয়। কনে শাড়ি পরবে না লেহেঙ্গা সেই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বর পাঞ্জাবী বা ফতুয়া পরে নিতে পারে। অনেকে এসব পোশাক রেডিমেট কেনে। রেডিমেট পোশাক আবার অনেক সময় ফিট হয়না। তাই আগে থেকেই এসব বিষয় খেয়াল রাখা উচিত। 

এখন অনেক ডিজাইনারদের ভাল পাঞ্জাবী, শেরোয়ানী পাওয়া যায়, তাই ১৫/২০ দিন আগে থেকে ভেবে ড্রেস নেয়া উচিৎ। 

অনুষ্ঠানটা ইনডোর না আউটডোরে হবে তার উপর নির্ভর করে পোশাকের রঙ। সবাই এক রকম না। কেউ লম্বা, কেউ শর্ট, কেউ ফর্সা কেউ কালো। তাই শরীরের গড়ন ও স্কিন টোনের উপর বেস করে পোশাক নির্বাচন করা উচিত। 

যেহেতু গায়ে হলুদের স্টেজ অনেক কালারফুল হয়, তাই বরের পোশাকটা অনেক ইম্পোর্টেন্ট। স্টেজ বা এর লাইটের কালারটা কি হবে তা ভেবেই ড্রেসের কালার চুজ করা উচিত। 

বরের ফ্রেন্ডসরা অনেকে এক কালার পোশাক পরতে চায়, তাই বরের পোশাক ভিন্ন হওয়া উচিদ্ কেউ সিল্ক বা সুতি পাঞ্জাবী পরে। তবে ছবি তোলার জন্য গায়ে হলুদে সিল্কের পোশাক না পরাই ভাল। চাইলে পাঞ্জাবীর সঙ্গে কেউ কোটি পরতে পারে। শীতের সময় শাল, দোপাট্টা দিয়ে নাগরা পরলে ভাল লাগবে। 

বিয়ে: সবার আগে অনুষ্ঠানটি কোথায় হবে ইনডোর না আউটডোর তা বিবেচনায় রাখা উচিত। অনুষ্ঠানটি দিনে হবে না রাতে তাও ভেবে শেরোয়ানীর রঙ নির্বাচন করা উচিত। 

শেরোয়ানী অনেক রঙ্রে হয়, আমাদের দেশে সাধারনত চলে বাদামী, মেরুন, লাইট ক্রিম, হালকা সাদা। এর সঙ্গে অনেকেই চুড়িদার পরে। কেউ চাইলে কনট্রাস্ট করে চুড়িদার পরতে পারে। নিচের পায়জামাটা অনেক রকমের হয়, কেউ চুড়িদার, কেউ ট্রাউজার স্টাইল, কেউ যোধপুর স্টাইলের পায়জামা পরতে পারে। এর সঙ্গে দোপাট্টাও ভাল মানাবে। দোপাট্টা ও পাগড়ি এক কালার হলে ভাল লাগে। 

বিয়ের অনুষ্ঠানে যেহেতু কনে পক্ষের লোকজন ও নিজের আত্বীয়স্বজন সবাই বরের দিকে খেয়াল রাখে, তাই এই দিনে বরকে খুব সাবধানে পোশাক নির্বাচন করতে হয়। 

অনুষ্ঠানটি যদি রাতের হয় তাহলে একটু ডার্ক ও গ্লোসি শেরোয়ানী পরা বাঞ্জনীয়। এখানে শেরোয়ানীর জন্য ভারী কাপড় বলতে বেনারশী বা রাজশাহী যে ফেব্রিক্স পাওয়া যায় তা পারফেক্ট না। একটু হালকা। তাই ানেকে ইন্ডিয়ান ফেব্রিক্স যেমন কাতান, হ্যান্ডলুম, ব্রোকেট, আর্ট সিল্ক বেজ কাপড় পছন্দ করেন। 

এখন যেহেতু শীতকাল তাই সিঙ্গেলের শেরোয়ানী চেয়ে ডাবল শেরোয়ানী ভাল লাগবে।

রিসিপশন: আবার আগের মতোই, প্রোগ্রামটা কোথায় হচ্ছে, ইনডোর না আউটডোর এটা সবার আগে বিবেচনায় রাখেতে হবে। এখানে কনে কি পরছে তাও ইর্ম্পোট্যান্ট। এসময় অনেকেই ফরমাল লুক চান। আবার অনেকেই ট্রেডিশনাল লুক চান। এটা ডিপেন্ড করে কনে কি পরছে। তাই চাইলে জেম্সবন্ড টেক্সেডো পরতে পারেন। সেকেন্ড দিন আসকান বা ইন্দো ওয়েস্টার্ন পরতে পারেন। এগুলো অনেকটা শেরোয়ানীর মতো। চাইলে কেউ ফরমাল কোটও পরতে পারেন।

রিসিপসনে যারা ফর্মাল গেটআপে নিজেকে দেখতে চান তাদের সবার আগে শার্টের দিকে সবার নজর দেয়া উচিত। এটা আসলে ডিপেন্ড করে যে সে কি চাচ্ছে। শার্ট কটন হলে ভাল হয়। শার্ট হওয়া উচিত প্লেইন লাইট কালার হয়াইট, গ্রে, ক্রীম, স্কাই কালারের শাটই ভাল লাগে। 

ফরমাল স্যূট বা টেক্সেডো যাই পরুক না কেন তা যেন খুব বেশি গ্লোসি বা চকচকে না হয়। স্যূটের রঙ হওয়া উচত চারকোল গ্রে, ব্লাক, ব্লু, গ্রে রঙয়ের। এছাড়া ইন্টারনাল চেক হতে পারে হালকা। কোট বা জ্যাকেটগুলো সাধারণত টু বাটনের ভাল লাগে। স্যূট হতে হবে শার্প এন্ড ওয়েল ফিটেড। বরের জন্য কাস্টোম মেইড বা টেইলর মেইড স্যূট হওয়া বাঞ্জনীয়। েমোট কথা সে যাই পরুক তা যেন মানানসই হয়। 

টাই: সফট কালারের টাই ভাল লাগবে। গোল্ডেন বা লাইট মেরুন হলে ভাল হয়। এছঅড়া অনেকেই ব্লাক বা ফিরোজা কালারের টাইও অনেকে পরতে পারেন। 

জুতো ও বেল্ট যেন ম্যাচ করে সেদিকটাও খেয়াল রাখা জরুরি। নেভি ব্লু স্যূট হয়ে লাইট ক্যামেল কালারের সু ভাল মানাবে। কেউ ব্রেসলেট পরতে চাইলে তা সিলভার বেজড পরতে পারেন। 

এগুলো ছাড়াও কেউ যদি ইজি গোয়িং ড্রেস পরতে চান তাহলে ওয়েস্ট কোট দিয়ে পাঞ্জাবী পরতে পারেন। এটা অনেক আরামদায়ক।