ছবি সংগৃহীত

পানিফলের নানান গুণ

nusrat jahan champ
লেখক
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩, ০৪:৫৭
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩, ০৪:৫৭

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের অতি পরিচিত একটি ফল হলো পানিফল। শুধু গ্রামে নয়, শহরের বাজারে বা ফুটপাতের ফল ব্যবসায়ীদের কাছেও দেখা মেলে এই ফলের। সবুজ রঙের, দেখতে অদ্ভুত এই ফলগুলো স্থান করে নিতে পারেনি বড় ফলের দোকানে। পানিফলের আরেকটি নাম শিংড়া। ফলগুলিতে শিংয়ের মতো খাঁজকাটা থাকে বলেই এরকম নামকরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কোথাও কোথাও একে পানি সিংগাড়া নামেও ডাকা হয়।

পানিফলের বৈজ্ঞানিক নাম Trapa natans। এর ইংরেজি নাম water chestnut। পানিফল স্থানভেদে water caltrop, buffalo nut, devil pod নামেও পরিচিত। পানিফলের আদি নিবাস ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকা হলেও এর প্রথম দেখা পাওয়া যায় উত্তর আমেরিকায়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রেরই বেশ কিছু জায়গায় পানিফলের গাছকে আগাছা হিসেবে গণ্য করা হয়! জানা যায় যে প্রায় ৩০০০ বছর পূর্বে চীনে পানিফলের চাষ হতো। পানিফল একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। এর শেকড় থাকে পানির নিচে মাটিতে এবং পাতা পানির উপরে ভাসতে থাকে। এক একটি গাছ প্রায় ৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পানিফলের চার পাপড়ির ছোট ছোট ফুলগুলো খুবই মনোমুগ্ধকর! ফলচাষ শুরু হয় ভাদ্র-আশ্বিন মাসে এবং ফল সংগ্রহ করা হয় অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে। ফল কচি অবস্থায় লাল, পরে সবুজ এবং পরিপক্ব হলে কালো রং ধারণ করে। ফল ১২ বছর পর্যন্ত অংকুরোদগম সক্ষম থাকে। তবে সাধারণত ২ বছরের মধ্যে অংকুরোদগম হয়ে যায়। পানিফল কাঁচা এবং সেদ্ধ দুভাবেই খাওয়া যায়। পুরু খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের শাঁসটি খেতে হয়। চীনের বেশ কিছু বিশেষ খাবার তৈরিতে পানিফল ব্যবহার করা হয়।
পানিফলের রয়েছে ব্যাপক পুষ্টিগুণ যা শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ, শরীর গঠন, রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। পানিফলের প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে - খাদ্যশক্তি- ৬৫ কিলোক্যালরি জলীয় অংশ- ৮৪.৯ গ্রাম খনিজ পদার্থ- ০.৯ গ্রাম খাদ্যআঁশ- ১.৬ গ্রাম আমিষ- ২.৫ গ্রাম চর্বি- ০.৯ গ্রাম শর্করা- ১১.৭ গ্রাম ক্যালসিয়াম- ১০ মিলিগ্রাম আয়রন- ০.৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি১- ০.১৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি২- ০.০৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি- ১৫ মিলিগ্রাম পানিফলের শুধু খাদ্যগুণ নয়, রয়েছে ঔষধি গুণও! যেমন -
  • -পানিফলের শাঁস শুকিয়ে রুটি বানিয়ে খেলে অ্যালার্জি ও হাত-পা ফোলা রোগ কমে যায়।
  • -উদরাময় ও তলপেটের ব্যথায় পানিফল খুবই উপকারী।
  • -বিছা বা পোকা কামড় দিলে আহত স্থানে পানিফল পিষে লাগালে ব্যথা দ্রুত সেরে যায়।