
ছবি সংগৃহীত
এমপি রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৬, ০৭:৪৭
ফাইল ছবি
(প্রিয়.কম) টাঙ্গাইল- ৩ আসনের (ঘাটাইল) সরকার দলীয় এমপি আমানুর রহমান খান রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের আমলি আদালত টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে ১০ আসামির বিরুদ্ধে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
গ্রেফতারি পরোয়ানাভূক্ত আসামিরা হলেন-আমানুর রহমান খান রানা, সহিদুর রহমান খান মুক্তি, জাহিদুর রহমান খান কাকন, সানিয়াত খান বাপ্পা, কবির হোসেন, সাবেক কমিশনার মাসুদ মিয়া, আলমঙ্গীর হোসেন চাঁনে, নাসির উদ্দিন নুরু, সানোয়ার হোসেন ও দাঁত ভাঙ্গা বাবু।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে এমপি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে গোয়েন্দা পুলিশ।
চার্জশিট গ্রহণের শুনানিতে মামলার বাদী নিহত ফারুকের আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ এই হত্যা মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ ও পলাতক ৯ আসামিকে গ্রেফতারের আর্জি জানান।
আদালত শুনানি শেষে এমপি রানা ও তার তিন ভাইসহ ৯ আসামিকে গ্রেফতারের পরোয়ানা জারি করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি শহরের কলেজপাড়ার এমপি রানার অফিসকক্ষে তাদেরই পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক সন্ত্রাসী ও রানার সশস্ত্র ক্যাডাররা ফারুক আহমেদকে গুলি করে হত্যা করে। এ হত্যার নেপথ্যে এমপি রানার ৪ ভাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে দীর্ঘ তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
ফারুক আহমেদ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ডিবি পুলিশ গত বছর ১১ আগস্ট আনিসুল ইসলাম রাজা ও ২৪ আগস্ট মোহাম্মদ আলী নামের দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে। কয়েক দফা রিমান্ড শেষে ২৭ আগস্ট রাজা ও ৫ সেপ্টম্বর মোহাম্মদ আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলে, এমপি রানাসহ ৪ ভাইয়ের নির্দেশেই ফারুককে সে ও তার সঙ্গীরা গুলি করে হত্যা করে।
শহরের কলেজপাড়ার এমপি রানার মালিকানাধীন গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে হত্যাকাণ্ডের দেড় মাস আগে ফারুক আহমেদকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ঘটনার দিবাগত রাতে এমপি রানা রাজাকে দায়িত্ব দেয় ফারুক আহমেদকে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে গ্লোবাল সেন্টারে ডেকে আনার জন্য। ডেকে আনতে যাওয়ার পথেই ফারুক আহমেদের সঙ্গে রাজার দেখা হয়। রাজা তখন নিজের রিকশা ছেড়ে ফারুক আহমেদের রিকশায় ওঠেন এবং তাকে গ্লোবাল সেন্টারে নিয়ে যান।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা আদালতকে বলেন যে, ফারুক আহমেদ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। একই পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন এমপি রানার ছোট ভাই পৌর মেয়র শহীদুর রহমান খান মুক্তি। ফলে খান পরিবারের এ ৪ ভাই ফারুক আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছিলেন। কিন্তু তাদের কথার তীব্র প্রতিবাদ ও সাধারণ সম্পাদকের পদে অনড় থাকার কারণেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে এমপি রানা ও তার ভাইয়েরা। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি ফারুককে হত্যা করে এমপি রানা ও তার ভাইয়েরা।
ঘটনার ৩ দিন পর ২১ জানুয়ারি ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই সময় মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। মামলাটি পরে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। ডিবির তদন্তে এমপি রানা ও তার ভাইদের নাম বেরিয়ে আসে।
বর্তমানে এমপি রানা ও তার তিন ভাইসহ আসামিরা আত্মগোপনে আছেন।