ছবি সংগৃহীত

একজন ভালো বক্তা হয়ে ওঠার কিছু সহজ কৌশল (পর্ব-২)

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫, ০৩:১৭
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫, ০৩:১৭

ফটোসোর্স:www.speakingyoursuccess.com

(প্রিয়.কম )- সাহসী বক্তারা বিশ্বাসযোগ্য যুক্তি তর্কের মাধ্যমেই নিজের বক্তব্য পেশ করেন। তবে এর জন্য তাঁকে অনেক জ্ঞান অর্জন করতে হয়। মজার কোন গল্প বা ঘটনা, বিশিষ্ট কারো উক্তি এবং উদাহরণ দিতে হয়। এর ফলে আপনার বক্তব্যের বিষয় বস্তু অনেক সমৃদ্ধ হবে এবং আপনার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিবে বহুগুণ। কিভাবে একজন ভালো বক্তা হওয়া যায় সেই বিষয়ে আমরা আমাদের আগের পর্বটিতে কয়েকটি বিষয় জেনেছি, যেমন-  দর্শক শ্রোতাদের হাঁসানোর চেষ্টা করতে হবে, আগ্রহী মানুষের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন এবং আপনার আবেগের প্রকাশ করুন ভিন্ন ভাবে। আজ আমরা একজন ভালো বক্তা হওয়ার জন্য আরো যে গুণগুলো অর্জন করা প্রয়োজন সেগুলো জেনে নেই চলুন।   

১। অনুশীলন, অনুশীলন এবং অনুশীলন  

অনুশীলনই আপনাকে সবচেয়ে ভালো সার্বজনীন বক্তা হতে সাহায্য করবে। নিজের বক্তব্যের খুঁটিনাটি সব বিষয় ভালো ভাবে জানা থাকলে আপনার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। এইজন্য আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্র্যাকটিস করুন এবং ভাবুন যে অনেক দর্শকের সামনে আপনি বক্তব্য দিচ্ছেন। নিজের রেকর্ড করা কণ্ঠস্বর শুনতে কারোরই ভালো লাগেনা। এমনকি বিখ্যাত অভিনেতারাও বড় স্ক্রিনে নিজেকে দেখতে পছন্দ করেনা, তাঁদের কাছে অদ্ভুত লাগে। যখন আপনি বিশ্রী অনুভব করবেন তখন আপনি স্পষ্ট ভাবে কথা বলছেন কিনা সেইদিকে মনোযোগ দিন এবং আপনার স্বরভঙ্গির দিকে আপনার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। সকল গায়ক, অভিনেতা ও পারফর্মাররাই বলে থাকেন যে, যখন তাঁরা দর্শক সারিতে নিজের পরিবারের বা বন্ধু বান্ধবকে দেখতে পায় তখন তাঁরা লজ্জা পায় এবং নার্ভাস অনুভব করে। আপনাকে যেন এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য নিজের অনুশীলন সম্পন্ন হওয়ার পরে আপনার কিছু কাছের বন্ধুকে ডেকে শুনাতে পারেন।

২। ভুলের জন্য প্রস্তুত থাকুন

আপনি যখন কোন ভুল করবেন তখন আপনি যদি দ্বিধান্বিত হয়ে যান তাহলে সেটা মোটেই ভালো নয়। এতে আপনার মুখ রক্তিমাভ হবে এবং ঘামতে শুরু করবেন এবং তখন আপনি হয়তো এমন কোন কথা বলে ফেলবেন যাতে দর্শক শ্রোতারাও অস্বস্তিতে পড়বে। এই রকম পরিস্থিতির জন্য আপনাকে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে হবে। ভুল মানুষের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। মানুষ ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক। মুখস্ত বুলি আওড়ালেই একজন ভালো বক্তা হওয়া যায়না। যখন আপনি জনসম্মুখে বক্তৃতা দিতে পছন্দ করবেন তখন আপনার ছোট খাট ভুলগুলো স্বভাবজাত মনে হবে। যদি আপনার অঙ্গ ভঙ্গিতে কোন ভুল থাকে তাহলে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন এতে আপনার সামর্থ্য ও আত্মবিশ্বাস দুটোই বৃদ্ধি পাবে।

টিপস:

·         মানুষের সাথে কথা বললে আপনি নিজে সমৃদ্ধ হবেন। এর ফলে আপনার যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে, সম্পর্কের উন্নতি হবে, নতুন ব্যাবসা বা চাকরির প্রস্তাব পাবেন এবং সামাজিক মাধ্যমের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাবে।

·         প্রেজেন্টেশনের ক্ষেত্রে স্পষ্ট ও উজ্জ্বল ছবি, গ্রাফিক্স ও ভিডিও যুক্ত করুন যা দর্শককে চুম্বকের মত আকৃষ্ট করে রাখবে। যার ফলে আপনি কিছুটা চাপমুক্ত থাকতে পারবেন।

·         দৃপ্ততা ও অস্বস্তি একে অপরের বিপরীত। অস্বস্তি বাঁধার সৃষ্টি করে আর দৃপ্ত পদক্ষেপ বাঁধা দূর করে। তাই শুরু করুন দৃপ্ততার সাথে।

·         আপনার প্রিয় কোন বক্তাকে অনুসরণের চেষ্টা করুন।

·         প্রশংসা ও নিন্দা উভয়টাই গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে।

·      বুদ্ধিমান বক্তারা অপ্রয়োজনীয় কথা বাদ দিয়ে সংযত হয়ে কথা বলেন। আপনার নিজের ও শ্রোতার সময়ের মূল্য দিন।

·         আত্মবিশ্বাস ভেতর থেকে আসে এটা কেউ তৈরি করে দিতে পারেনা। আপনি যতক্ষণ না নিজে এর জন্য পদক্ষেপ নিবেন ততক্ষন আত্মবিশ্বাস তৈরি হবেনা।

·         নিজের উপর আস্থা রাখুন।

·         নিজের বক্তব্য ভিডিও করে রাখুন এবং দেখুন, এতে আপনি আপনার ভুলগুলো ধড়তে পারবেন।

·         বক্তব্য উপস্থাপনের দিন আনকোরা পোশাক না পড়ে আপনার পছন্দের আরামদায়ক পোশাকটিই পড়ুন।

·         বক্তব্য উপস্থাপনের আগে কোন উৎসাহ ব্যঞ্জক গান শুনুন যা আপনার ভয়কে দূর করতে সাহায্য করবে।

·         শ্রোতা কি ভাবছে এটা না ভেবে আপনার বিষয়বস্তুর উপর নজর দিন।         

যেহেতু আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের চেয়ে আলাদা তাই ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করুন এবং শুধুমাত্র একটা পদ্ধতি অবলম্বন করেই আপনি এই সমস্যা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারবেন না। আপনাকে সবগুলো বিষয়েরই চর্চা করতে হবে যার মাধ্যমে আপনি প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যেও একজন রক স্টারের মতোই সফল হতে পারবেন।

আগের পর্বটি পড়ুন এখানে - ভালো বক্তা হওয়ার কিছু কৌশল (পর্ব-১)

লিখেছেন

সাবেরা খাতুন

ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ

প্রিয়.কম