
ছবি সংগৃহীত
ইসলাম কী সাম্প্রদায়িক নাকি অসাম্প্রদায়িক ধর্ম!
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৫, ০৮:৫৭
সাম্প্রদায়িকতা শব্দটির সঙ্গে আমরা কম-বেশি সবাই পরিচিত। পরিচিত এর ভয়াবহতা সম্পর্কেও। ধর্মীয়, জাতিগত বা আঞ্চলিক সংকীর্ণতাকেই বলে সাম্প্রদায়িকতা। সাম্প্র্রদায়িকতার খারাপ বৈশিষ্ট্য হলো, অন্য ধর্ম, জাতি বা অঞ্চলের ব্যাপারে অসহিষ্ণু হওয়া। ইসলাম সাম্প্রদায়িকতাকে কোনো অবস্থাতেই সমর্থন করে না। মদিনার সনদ যার সুন্দরতম উদাহরণ। এই সনদের মাধ্যমে ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক ও মুসলমানদের সমন্বয়ে একটি সাধারণ জাতি গঠিত হয়। যাতে সবার নাগরিক অধিকার ছিল সমান। সনদে উল্লেখ ছিল, প্রত্যেক সম্প্র্রদায় নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে, কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করবে না। কোনো সম্প্র্রদায় বাইরের শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে সবাই সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করবে। এভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মুসলিম-অমুসলিমদের সমন্বয়ে মদিনায় একটি স্থিতিশীল ও সাম্প্র্রদায়িক সম্প্র্রীতিপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকে বলেন, ইসলাম সাম্প্র্রদায়িক ধর্ম। এ অভিযোগ ঠিক নয়। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো ব্যক্তি বা কারো কারো কর্মকান্ডের জন্য সামগ্রিকভাবে ইসলামকে সাম্প্র্রদায়িক বলা উচিত নয়। ইসলাম ব্যক্তি, জাতি, গোষ্ঠী ও ধর্ম সব ধরনের সাম্প্রদায়িকতার ঘোরতর বিরোধী। এ কথা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে, হজরত শোরাকা ইবনে মালিক ইবনে জুশুম [রা.] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] একদা আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। অতঃপর বললেন, তোমাদের মধ্য সেই ব্যক্তিই উত্তম যে নিজ গোত্রের অন্যায়-অপরাধকে দমন করে ততক্ষণ পর্যন্ত সে অপরাধ না করে। মিশকাত অন্য আরেক হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, হজরত জুবায়ের ইবনে মুতঈম [রা.] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি স্বজনপ্রীতি ও সাম্প্র্রদায়িকতার দিকে লোকজনকে আহ্বান করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। যে ব্যক্তি নিছক সাম্প্র্রদায়িকতার কারণে যুদ্ধ করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। আর যে ব্যক্তি স্বজনপ্রীতির ওপর মৃত্যুবরণ করে সেও আমাদের দলভুক্ত নয়। মিশকাত উল্লিখিত হাদিসের আলোকে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, শান্তির ধর্ম ইসলামে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। কেউ যদি ইসলামের নাম ভাঙিয়ে সাম্প্র্রদায়িকতার ঘটনা ঘটায় এবং স্বজনপ্রীতি করেন তাহলে বুঝতে হবে, সে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করছে। এমন লোকদের সম্পর্কে জানামাত্র তাদের সংশ্রব ত্যাগ করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সর্বাÍক প্রতিরোধ গড়তে হবে। এটাই ঈমানের দাবি। মাওলানা মিরাজ রহমান