ছবি সংগৃহীত

অ্যালার্জির লক্ষণ, প্রকারভেদ ও প্রতিকার

nusrat jahan champ
লেখক
প্রকাশিত: ০২ মে ২০১৩, ১৭:০২
আপডেট: ০২ মে ২০১৩, ১৭:০২

অ্যালার্জিকে এখন মোটামুটি একটি সাধারণ রোগ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। বংশগতি, দূষণ, খাবার ইত্যাদি অনেক কারণে অ্যালার্জির প্রকোপ বেড়ে গিয়েছে অনেক। অ্যালার্জি হলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারই আরেক নাম। আমাদের শরীরে যখন কোনো বহিরাগত উপদান প্রবেশ করে, তখন শরীর তা সহ্য করতে না পেরে যে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাকেই অ্যালার্জি বলে। অ্যালার্জি নানা ধরনের হতে পারে। যেমন - *ডাস্ট অ্যালার্জি : ঘরের কোনা, বইপত্র, তোশক, বালিশ, পুরোনো কাপড় বা পুরোনো যে কোনো জিনিসে যে ধুলোর আস্তরণ পড়ে থাকে সেখান থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। *কসমেটিক অ্যালার্জি : বিভিন্ন কসমেটিকস যেমন ডিওডোরেন্ট, শ্যাম্পু, লোশন, মেকআপ ইত্যাদি থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। *এগজিমা : সাধারণত ত্বক কোনো কিছু সহ্য করতে না পারলে ইরিটেশন বা র্যাশ থেকে এগজিমা হতে পারে। *সান অ্যালার্জি : সূর্যের আলো সহ্য না হলে সান অ্যালার্জি হতে পারে। *ফুড অ্যালার্জি : অনেক সময় খাবার থেকে যেমন ডিম, দুধ, ময়দা, সি-ফুড ইত্যাদি থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। *ল্যাটেক্স অ্যালার্জি : রাবার বা ইলাস্টিক থেকে অনেক সময় অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণ : অ্যালার্জি হলে নানা ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন - *বারবার হাঁচি হওয়া, সর্দি লাগতে পারে। *চোখ থেকে পানি পড়া, চোখ চুলকানো, লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি অ্যালার্জির লক্ষণ। *দিনের নির্দিষ্ট সময় নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া। *পেটের নানা গণ্ডগোল দেখা দেওয়া। বিশেষ করে ডায়রিয়া হওয়া। *নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। *শরীরে দানা, গোটা, চাকা ইত্যাদি বের হওয়া। *জ্বর আসা, বমি বমি লাগা। *গলা, জিভ শুকিয়ে আসা, গলা খুশখুশ করা। অনেক সময় লক্ষণ দেখেও বোঝা যায় না যে সেটা অ্যালার্জি কিনা। কারণ অনেক সময় বদহজম হলেও ডায়রিয়া, বমি বমি লাগা, মাথাব্যথা করা, কাজে উত্‍সাহ না পাওয়া ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বদহজম হলে নানা ধরনের খাবার খেলে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। কিন্তু অ্যালার্জিতে নির্দিষ্ট কিছু খাবারে সমস্যা হয়। এছাড়া কোনো খাবারে অ্যালার্জি হলে সাধারণত ২ ঘণ্টার মধ্যে নানা রকমের প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, যেখানে বদহজম হলে আরো একটু বেশি সময় নেয়। আবার অতিরিক্ত গরমেও নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে। তবে অ্যালার্জি হলে শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি শরীরে ইরিটেশন বা ডায়রিয়া হয়। যদি লক্ষণ দেখে বুঝতে না পারেন যে অ্যালার্জি হয়েছে কি না, তাহলে কিছু বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখুন - *কী কারণে লক্ষণগুলো দেখা দেয়। বছরের নির্দিষ্ট কোনো সময়ে বা নির্দিষ্ট কিছু খেলে সমস্যা হয় কি না খেয়াল করুন। *শরীরের কোন অংশে এই প্রতিক্রিয়াগুলো হয়। *এই প্রতিক্রিয়াগুলোর জন্য আপনি কতখানি অসুস্থ হয়ে পড়েন। *বাড়ি পরিষ্কার করার সময়, রোদে গেলে বা সকালের দিকে বারবার হাঁচি হয় কি না। *কী ধরনের খাবার খেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। *কোনো বিশেষ প্রাণী কাছে আসলে সমস্যা হয় কি না। আপনার লক্ষ্য করা বিষয়গুলো লিখে রাখুন এবং ডাক্তারকে জানান। এতে ডাক্তারের সমস্যা বুঝতে সুবিধা হবে। অ্যালার্জির ধরন নির্ণয় করা হয় রক্ত পরীক্ষা ও ত্বক পরীক্ষার মাধ্যমে। ত্বক পরীক্ষারও রয়েছে নানা পদ্ধতি। যেমন স্কিন প্রিক টেস্ট, ইন্ট্রাডার্মাল টেস্ট, স্কিন প্যাচ টেস্ট। অ্যালার্জির ধরন নির্ণয়ের পর ডাক্তার ওষুধ ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অ্যালার্জি প্রতিরোধের উপায় : *বাড়ি সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। ধুলোময়লায় সমস্যা হলে বাড়িতে কার্পেট ব্যবহার করবেন না। *বাড়ির সব দরজা জানালা সকালে ঘুম থেকে উঠেই খুলে দিন যাতে ঘরে যথেষ্ট আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারেন। *বাড়িতে কোনো পোষা প্রাণী থাকলে তাকে শোবার ঘরে রাখবেন না। *যেসব খাবার খেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন সেগুলো যত সুস্বাদুই হোক না কেন, খাওয়া বন্ধ করুন।