
ছবি সংগৃহীত
পিতা-মাতার সাথে বেয়াদবী করার পরিণতি বিষয়ক একটি জরুরি মাসআলা
আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৬, ১৩:৪৩
প্রশ্ন : আমার বাবা স্ট্রোক করে যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তখন আমি তাঁর সেবা করতে ছিলাম। দীর্ঘদিন সেবা করার পর একদিন পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে আমি রেগে যাই এবং বাবার সাথে বেয়াদবী করে ফেলি। যদিও বাবা স্ট্রোক করে অচেতন ছিলেন, কিন্তু তিনি বেয়াদবীটা বুঝতে পেরেছিলেন। পরে আমি যথারীতি বাবার সেবা করে যাই। কিন্তু বাবার কাছ থেকে আমি ক্ষমা চাইতে পারিনি। কারণ, তিনি অজ্ঞান ছিলেন এবং ক্ষমা চাওয়ার আগেই তিনি ইন্তিকাল করেন। আমরা জানি কেউ মা-বাবার মনে কষ্ট দিলে তার দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হয় না এবং আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না। আমরা আরো জানি রাসূল (সা.)এর কাছে যখন জিবরাঈল আমীন ওহী নিয়ে আসলেন এবং বললেন, যে ব্যক্তি মা-বাবা পেয়েও নিজের গুনাহ ক্ষমা করাতে পারল না, সে যেন ধ্বংস হয়। রাসূল (সা.) বললেন, আমীন। এখন কথা হলো, যদিও আমি তার সেবা যতœকরেছি, কিন্তু তার ফাঁকে আমি বেয়াদবী করে ফেলেছি। এখন আমার হাতে মৃত বাবার কাছে ক্ষমা চাওয়ারও কোনো পথ নেই। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো রাসূল (সা.) যেখানে আমীন বলেছেন,সেখানে তো আমার ধ্বংস নিশ্চিত। এই জঘন্য অপারাধ থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারি। তার পথ কুরআন ও হাদীসের আলোকে জানতে চাই। উত্তর : কুরআন-হাদীসে পিতা-মাতার সাথে সদাচরণের জোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু আপনি আপনার পিতার সাথে বেয়াদবী করেছেন এবং ক্ষমা চাওয়ার পূর্বেই তিনি ইন্তিকাল করেছেন, এখন আপনার কর্তব্য হলো নিম্নে বর্ণিত কয়েকটি বিষয়ের উপর আমল করা। যথা- (১) তাওবা ও ইস্তিগফার করা, (২) পিতার জন্য দোয়া করা, (৩) প্রতি জুমা’র দিন পিতার কবর যিয়ারত করা। এছাড়াও- (৪) পিতার বন্ধুদের সাথে সদাচরণ করা, (৫) আত্মীয় স্বজনদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা। (৬) দান, সদকা, নামায, যিকির, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদির মাধ্যমে পিতার জন্য নেকী প্রেরণ করা। উল্লিখিত বিষয়াবলীর উপর যদি আমল করতে পারেন, আশাকরা যায় আল্লাহ তাআলা আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং নেক সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করবেন। মিশকাত- ১৫৪, ৪২১, ২০৩] গ্রন্থনা ও সম্পদানা : মাওলানা মিরাজ রহমান সৌজন্যে : মাসিক আল-কাউসার