বজ্রপাতের ছবি। ছবি: সংগৃহীত

দেশে বজ্রপাত কখন কোথায় বেশি হয়

ফারজানা মাহাবুবা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০১৮, ১৩:৪৭
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৮, ১৩:৪৭

(প্রিয়.কম) দেশে গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে বজ্রপাতে অনেকের প্রাণহানি ঘটছে। সর্বশেষ ২৯ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাতে অন্তত ১৯ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

চলতি মাসে এ নিয়ে বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫০ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। বছরের এ সময়টিতে বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে বজ্রপাতও হয় ব্যাপকহারে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তাওহিদা রশিদ বলেন, ‘বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির একটি সম্পর্ক আছে।’ 

তাওহিদা রশিদ আরও বলেন, ‘বিজ্ঞানীরা অনেকে মনে করেন বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য এটা বেশি হচ্ছে, তবে অনেক বিজ্ঞানীই আবার এ মতের সাথে একমত নন।

তবে বাংলাদেশে আমরাও ভাবছি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই তাপমাত্রা বেড়েছে এবং এর কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশে দশমিক ৭৪ শতাংশ তাপমাত্রা বেড়েছে।’

বিকেলে বজ্রপাত হওয়ার হার বেশি। এ বিষয়ে তাওহিদা রশিদের মতে বজ্রপাতের ধরনই এমন। সকালের দিকে প্রচণ্ড তাপমাত্রা হয়। আর তখন এতে অনেক জলীয় বাষ্প তৈরি করে। এ জলীয় বাষ্পই বজ্র ঝড় ও বজ্রপাতের প্রধান শক্তি। তাপমাত্রা যত বাড়বে তখন জলীয় বাষ্প বা এ ধরনের শক্তিও তত বাড়বে।

এই অধ্যাপক বলেন, ‘জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়া মানেই হলো ঝড়ের ঘনত্ব বেড়ে যাওয়া। বছরে এক ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়ার কারণে ১২শতাংশ বজ্র ঝড় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এটি কোনো কোনো বিজ্ঞানী প্রমাণ করেছেন।’

কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় বজ্রপাত বেশি হয়? এমন প্রশ্নে তাওহিদা রশিদ বলেন, ‘অঞ্চল ভেদে এটি কম বেশি হচ্ছে। বজ্রঝড় ও বজ্রপাত এপ্রিল ও মে মাসের কিছু সময় ধরে প্রতি বছরই হয়। এ বছর কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে।’

তবে এই অধ্যাপকের মতে বাংলাদেশের হাওড় অঞ্চলে বজ্রপাতের সংখ্যা বেশি। কারণ ওখানে হাওড়ের জন্য জলীয় বাষ্প বেশি হয়। সে কারণেই সিলেটের ওই অঞ্চলটিতে বজ্রপাতের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।

তাওহিদা রশিদ বলেন, ‘বজ্রপাত প্রকৃতির একটি বিষয় এবং এটি হবেই। তবে এতে প্রাণহানি কমানোর সুযোগ আছে। আর তা হল- 

বজ্র ঝড় যখন শুরু হয় এর তিনটি ধাপ আছে। প্রথম থাপে বিদ্যুৎ চমকানি বা বজ্রপাত শুরু হয় না। প্রথমে মেঘটা তৈরি হতে থাকে এবং সে সময় আকাশের অবস্থা খুব ঘন কালো হয় না। একটু কালো মেঘের মতো তৈরি হয়। সামান্য বৃষ্টি ও হালকা বিদ্যুৎ চমকায়। আর তখনি মানুষকে সচেতন হওয়া উচিত।’

তাওহিদা রশিদ বলেন, ‘প্রতিটি দুর্যোগে একটি নির্দিষ্ট সময় আছে এবং সে সম্পর্কে প্রতিটি মানুষকে সচেতন করা উচিত। বাইরে থাকলে যখন দেখা যাবে আকাশ কালো হয়ে আসছে তখনি নিরাপদ জায়গায় যেতে হবে। এ সময়টিতে অন্তত আধঘণ্টা সময় পাওয়া যায়।’ 

সূত্র: বিবিসি বাংলা

প্রিয় সংবাদ/রুহুল