
প্রতীকী ছবি।
ভূমিকম্পের সময় করণীয় এবং এর পূর্ব প্রস্তুতি
আপডেট: ১০ মে ২০১৮, ২২:০৩
(প্রিয়.কম) বাংলাদেশ বর্তমানে ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে মধ্যে রয়েছে, বিশ্বে বড় ভূমিকম্প, মাঝারি ভুমিপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার, দক্ষিণ এশিয়ার এই অংশটি বিশ্বের ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে, প্রায় মাঝারি ও মৃদু ভূমিকম্প অতিবাহিত হচ্ছে, নেপালে ২০১৫ সালে মাঝারি মানের শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল, ভুমিকম্পের সিসমগ্রাফিক প্লেট জোনে সামনে আরও কিছু মাঝারি মৃদু ভূমিকম্প ও পাঁচ বছরের মধ্যে অধিক শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এই প্লেট জোনে ৮.৫ মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হবার সম্ভাবনা খুবই কম। ৮ থেকে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্প সংঘঠিত হলে অনেক সম্পদ, প্রাণহানি হবে ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন ও সঠিকভাবে সঠিক সময়ে কিছু সিদ্ধান্ত না গ্রহণ করার ফলে। ভূমিকম্প সম্পর্কে আমাদের ভয়-ভীতি আতঙ্ক বাদ দিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে ভূমিকম্পকালে। সেই সচেতনতা, কিছু প্রস্তুতি ও ভূমিকম্পের সময়ে কীভাবে জীবন রক্ষা করা যাবে, সেটি নিয়ে এ লেখাটি।
* ভূমিকম্প যে কোনো সময় হতে পারে সে বিষয়ে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, রাতে ঘুমের সময় ভূমিকম্প আমরা বুঝতে নাও পারি সে ক্ষেত্রে ২০ লিটার বালতিতে অর্ধেকের চেয়ে একটু পানি রেখে দিতে হবে, ভূমিকম্প হলে পানির আন্দোলনে একটা শব্দ হবে সেটাতে আমরা বুঝতে পারব ভূমিকম্প হচ্ছে।
* রাতে ঘুমের সময় ভূমিকম্প হলে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন।
* ভূমিকম্প সাধারণত টানা ১ মিনিটের নিচে হলে সেটা ৭.৫ বা ৭.৮ মাত্রার ভুমিকম্পের মধ্যে থাকে, আর ১ মিনিট উপরে কিংবা ২ মিনিটে বা ৪ মিনিট হয়ে গেলে সেই ভুমিকম্পের মাত্রা তা বেশি হতে পারে, এমন ভূমিকম্প হবার সম্ভাবনা খুবই কম। তবুও একবার হতেও পারে ১ মিনিটের উপরে ২ মিনিট ভূমিকম্প রিখটার স্কেলে এর মাত্রা হতে পারে ৮.০।
* ভূমিকম্প যখনি সংঘটিত হউক না কেন ওই সময়ে কেউ রান্না ঘরে অবস্থান করবেন না, গ্যাসের চুলাটি বন্ধ করে দেবেন যদি জ্বালানো থাকে, ভূমিকম্পের সময়ে গ্যাসের পাপে লাইন গ্যাস বিস্ফোরণ হতে পারে, জাপান পেরু বিশ্বের অনেক জায়গায় ভুমিকম্পে গ্যাস বিস্ফোরণের ফলে আগুন ধরে অনেকেই মারা গিয়েছে মাঝারি মাত্রার ভুমিকম্পে।
* ভূমিকম্পের সময় যারা অনেক উচুতে অবস্থান করেন তারা ভূমিকম্পের সময়ে সিঁড়িতে আশ্রয় নেবেন না, এটা নিরাপদ নয়।
*সিড়ি থেকে নিচে নামার পর খোলা স্থানে অবস্থান করুন আসে পাশে বিল্ডিং যেন না পড়ে সেইভাবে।
* ভূমিকম্পের সময়ে লিফট কোনো অবস্থাতে ব্যবহার করবেন না বা এস্কেলেটর বা এলিভেটর ব্যবহার করবেন না।
* ভুমিকম্পের সময় বৈদ্যুতিক লাইনের আসে পাশে থাকবেন না, শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে বৈদ্যুতিক বিস্ফোরণ হতে পারে।
* ভুমিকম্পের সময় ঘরের টেবিলের নিচে বা লোহার বা কাঠের শক্তিশালী খাট থাকলে তার নিচে অবস্থান করুন, কিংবা শক্তিশালী দেয়ালের বিম থাকলে সেটি ধরে থাকুন।
* ঘরে সব সময় ২-৩ টি মোটর সাইকেলের হেলমেট রাখুন, যদি কোনো দিন বড় ভূমিকম্প হয় সেই সময় আপনি ওটা পড়ে ফেলতে পারবেন, ৮.০ বা ৮.৫ মাত্রার অধিক শক্তিশালী ভূমিকম্প যদি ১ মিনিটের চেয়ে বেশি মিনিট ধরে জোরে কাঁপে সে ক্ষেত্রে।
*ভূমিকম্পের সময় হাতে দিয়াশলাই, লাইটার ও দাহ্য কোনো বস্তু রাখবেন না।
*ভূমিকম্পের সময় জানালা থেকে দূরে অবস্থান করুন
* ঘরে সব সময় ৫ লিটার + ৫ লিটার ২ তা বিশুদ্ধ পানির বোতল সংরক্ষণ রাখুন, কমপক্ষে ১১ লিটার পানি ঘরে রাখুন সবসময়, যদি আপনি ভূমিকম্পতে আটকা পরে যান সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩-৪ দিন আপনি বেঁচে থাকতে পারবেন পরিবারসহ উদ্ধার কাজ যদি দেরি হয়।
* ঘরে কিছু শুকনো চিড়া ও আপদকালীন সহজে খাওয়া যায় এমন খাবার রাখুন, ভূমিকম্পকালীন আপনি আটকা পরে গেলে।
* একটি সাধারণ মোবাইল রাখুন (4000 mah) যেটি আপনার বিপদজনক সময়ে জরুরি কল করতে সাহায্য করবে, সেটি চার্জ সংরক্ষণ করে রাখুন, রেডিও সংযোগ চালু আছে এমন তা নিশ্চিত রাখুন, ভূমিকম্পের বিপদকালীন আপনি যাতে যোগাযোগ করতে পারেন আটকা পরে গেলে।
*রঙিন চশমা, মাস্ক ও অধিক ব্যাটারি যুক্ত ফ্লাশলাইট বা টর্চ লাইট রাখুন।
* ভূমিকম্প যদি একদিনে একাধিকবার মৃদু মানের ভূমিকম্প হতে থাকে কিছু সময় অন্তর অনুযায়ী তাহলে নিরাপদ গন্তব্যে অবস্থান করুন, এ রকম ভূমিকম্প মাঝারি বা শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে ।
* সাম্প্রতিক জাপানের ভুমিকম্পের ফলে মাটির গভীর থেকে লাভা বাষ্প ফেনার মতো বের হয়েছে এমন হলে মুখ ঢেকে রাখুন।
সূত্র: National Geographic, Red cross,UPseis
প্রিয় সংবাদ/কামরুল