
পবিত্র কুরআনের নান্দনিক ওয়েলপেপার। ছবি: সংগৃহীত
আখেরাত বা পরকাল সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে কী বর্ণিত হয়েছে?
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:১১
(প্রিয়.কম) আখেরাত একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ মৃত্যু পরবর্তী জীবন। আখেরাত বলতে মৃত্যুর পর থেকে অনন্তকালের জীবনকে বুঝায়। কবর, হাশর, হিসাব, পুলসিরাত, জান্নাত-জাহান্নামের মতো সব বিষয়ই এর অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে আখেরাতের জীবনকে দুটি পর্যায়ে বিন্যাস করা হয়েছে। ১. মৃত্যু থেকে কিয়ামত পযর্ন্ত; ২. কিয়ামত থেকে অনন্তকাল অবধি। সেখানে কোনো মৃত্যু নেই। কোনো ধ্বংস, লয় বা শেষও নেই। আখেরাত সম্পর্কে কুরআনে বেশ কিছু আয়াত আছে।
১. হে নবী ! যারা আজ কুফরির পথে খুব বেশি দৌড়াদৌড়ি করছে, তাদের তৎপরতা যেন তোমাকে মলিন বদন না করে। এরা আল্লাহর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ আখেরাতে এদের কোনো অংশ দিতে চান না। আর সবশেষে তারা কঠোর শাস্তি পাবে। (সুরা: তাওবা, আয়াত-১৭৬)
২. আর যারা আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার ও নিজেদের শপথ সামান্য দামে বিকিয়ে দেয়, তাদের জন্য আখেরাতে কোনো অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না ও তাদের পাক-পবিত্রও করবেন না। বরঞ্চ তাদের জন্য রয়েছে কঠোর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সুরা: নিসা, আয়াত-৭৭)
৩. হে ইমানদারগণ!তোমাদের কী হলো, যখনই তোমাদের আল্লাহর পথে বের হতে বলা হলো, অমনি তোমরা মাটি কামড়ে পড়ে থাকলে? তোমরা কি আখেরাতের মোকাবিলায় দুনিয়ার জীবন পছন্দ করে নিয়েছ? যদি তাই হয়, তাহলে তোমরা মনে রেখো, দুনিয়ার জীবনের এমন সাজ-সরঞ্জাম আখেরাতে খুব সামান্য বলে প্রমাণিত হবে। (সুরা: তাওবা, আয়াত-৩৮)
৪. আর যে ব্যক্তি আখেরাতের প্রত্যাশী হয় এবং সে জন্য প্রচেষ্টা চালায়, যেমন সে জন্য প্রচেষ্টা চালানো উচিত এবং সে হয় মুমিন। এ ক্ষেত্রে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির প্রচেষ্টার যথোচিত মর্যাদা দেওয়া হবে। (সূরা: বনী ইসরাইল, আয়াত-১৯)
৫. যে আখেরাতের কৃষিক্ষেত্র চায়, আমি তার কৃষিক্ষেত্রে বাড়িয়ে দিই। আর যে দুনিয়ার কৃষিক্ষেত্র চায়, তাকে দুনিয়ার অংশ থেকেই দিয়ে থাকি। কিন্তু আখেরাতে তার কোনো অংশ নেই। (সুরা:আশ শুরা, আয়াত-২০)
৬. যারা দুনিয়ার জীবনকে আখেরাতের ওপর প্রাধান্য দেয়, যারা লোকদের আল্লাহর পথ থেকে রুখে দিচ্ছে এবং চাচ্ছে এ পথটি (তাদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী) বাঁকা হয়ে যাক, ভ্রষ্টতায় এরা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। (সুরা: ইবরাহিম, আয়াত-৩)
৭. না, সত্য হচ্ছে এই যে, তোমরা যেসব জিনিসের দিকে আমাকে ডাকছো, তাতে না আছে দুনিয়াতে কোনো আবেদন, না আছে আখেরাতে কোন আহ্বান। আমাদের আল্লাহর দিকেই ফিরে যেতে হবে। আর সীমালঙ্ঘনকারী আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। এর ব্যতিক্রম হতে পারে না। (সুরা:মুমিনুন, আয়াত-৪৩)
৮. এ ধরনের লোকদের জন্য দুনিয়ার জীবনেই রয়েছে আজাব ও আখেরাতের আজাব এর চেয়েও বেশি কঠিন। তাদের আল্লাহর হাত থেকে বাঁচাবার কেউ নেই। (সুরা: আর রাদ, আয়াত-৩৪)
৯. হে ইমানদারগণ, যাদের ওপর আল্লাহ গজব নাযিল করেছেন, তাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। আখেরাত সম্পর্কে তারা ঠিক তেমনি নিরাশ যেমন কবরস্থ কাফেররা নিরাশ। (সুরা:আল মুমতাহানা, আয়াত-১৩)
১০. আর যদি তোমরা আল্লাহ, তার রাসুল ও আখেরাতের প্রত্যাশী হও, তাহলে জেনে রাখো তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল তাদের জন্য আল্লাহ মহা প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। (সুরা: আল আহজাব, আয়াত-২৯)
১১. আবার কেউ বলে, হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ায় কল্যাণ দাও এবং আখেরাতেও কল্যাণ দাও এবং আগুনের আজাব থেকে আমাদের বাঁচাও। (সুরা: বাকারাহ, আয়াত-২০১)
১২. আজাব এরূপই হয়ে থাকে। আখেরাতের আজাব এর চেয়েও বড়। হায়! যদি তারা জানত। (সুরা: আল কলম, আয়াত-৩৩)
১৩. অবশেষে আল্লাহ তাকে আখেরাত ও দুনিয়ার আজাবে পাকড়াও করলেন। (সুরা: আন নাযিয়াত, আয়াত-২৫)
প্রিয় ইসলাম