(প্রিয়.কম) পাঠকের জন্য, পাঠকেরই ভালোবাসার কাহিনী নিয়ে আমাদের আয়োজন "প্রিয় লাভ ডায়রি"। মিষ্টি একটা প্রেম বা বিয়ের গল্প সবার জীবনেই থাকে। আপনারও কি আছে এমনই একটি দুষ্টু-মিষ্টি ভালোবাসার কাহিনী? তাহলে দারুণ কিছু ছবি সহ যোগাযোগ করতে পারেন আমাদের সাথে। আপনার ভালোবাসার সেই মিষ্টি কাহিনী ছাপা হবে প্রিয়.কমের পাতায়, জানবে সারা বিশ্ব। নিজের ভালোবাসার কথা সকলকে জানাতে চাইলে ছবি সহ যোগাযোগ করুন আমাদের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। পেজ লিঙ্ক-https://www.facebook.com/priyolife

আজকের গল্পটি তাজবীর রায়হানের। আমেরিকা প্রবাসী তাজবীর বাংলাদেশি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপের সাথে যুক্ত। ২০১৭ সালের ২৪ মে নতুন একটি গ্রুপে যুক্ত হন। সেখানে নিজের পরিচয় দেবার পর তিনি অন্যান্য গ্রুপ মেম্বারদের পোস্ট দেখতে থাকেন। এভাবে দেখতে দেখতেই তার চোখ আটকে যায় এক নারীর ছবিতে। 

কী ভাবছেন? আরও দশটি ফেসবুক প্রেমের মতো একটি গল্প? মোটেই না! ফেসবুকে নক দিয়ে দিনের পর দিন প্রেম, ডেটিং আর এক সময়ে বিয়ে- তাই তো! তাজবীরের গল্পটার শুরু এমন হলেন, শেষটা একেবারেই অন্যরকম।

ফেসবুকে একে অপরের সাথে পরিচিত হওয়াটা একদিক দিয়ে যেমন কঠিন, আরেকদিন দিয়ে তেমনই সহজ। জান্নাত খান মীম নামের সেই আইডিতে ভয় ভয়ে সপ্তাহখানেক পর নক দিলেন তাজবীর। 

এরপর আর দশটি ছেলের মতো তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে পারতেন তিনি। বন্ধু হবার ছলে কাছে ঘেঁষতে পারতেন। তা না করে বরং বলে বসেন- ‘আপনি কি আপনার মায়ের ফোন নাম্বারটা একটু দেবেন? আমার মা একটু কথা বলবে।‘

এভাবেই একদম শুরু থেকে পরিবারের সম্মতি এবং অবগতির ভিত্তিতেই তাদের পরিচয় এবং ভালোলাগা, ভালোবাসা। মীম ঢাকার বাসিন্দা, আর তাজবীর সেই ১২ হাজার কিলোমিটার দূরে আমেরিকার ডাকোটায়। 

অবাক করার মতো ব্যাপার হলো, মাসের পর মাস শুধু ফোনে কথা বলেই কাটিয়েছেন দুজনে। ভিডিও কল বা স্কাইপে কথা বলার সুযোগ থাকলেও এড়িয়ে গেছেন দুজনেই। ভেবেছেন, আমাদের প্রথম দেখাটা হোক চর্মচক্ষুতেই!

যেমন কথা, তেমনই কাজ। 

তাজবীর বলেন, "আমাদের প্রথম দেখা হয় বিয়ের ঠিক আগের দিন, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৭।" তাজবীরের ছোট খালা তাদেরকে একটি পার্কে ঘুরতে যেতে বলেন। কিন্তু দুজনে গিয়ে দেখেন সেটা বাচ্চাদের শিশুপার্ক! সবাই এই জুটিকে দেখে অবাক। অপ্রস্তত হবার বদলে বরং হেসে কুটিকুটি হয়ে যান মীম। 

পরদিন, ৬ ডিসেম্বর বিয়ে। খুলনায় বিয়ে হবার কারণে ঢাকা থেকে খুলনায় বিমানে আসেন তারা দুজন। বিয়ের সাজে সজ্জিত মীম আর শেরওয়ানি পরিহিত তাজবীরকে দেখে সবাই চমকে যান। একটু পরপর প্লেনের অন্যান্য যাত্রীরা তাদের সাথে সেলফি তুলতে থাকেন। একেবারেই অন্যরকম একটি অভিজ্ঞতা ছিল, বলেন তাজবীর।  

দুরত্বের বাঁধা পেরিয়ে এখন তারা সাজিয়ে তুলছেন টোনাটুনির মিষ্টি সংসার। তাদের এই মিলনের জন্য অনেকটা কৃতিত্বই ফেসবুকের পাওনা বলে মনে করেন তাজবীর। কে ভেবেছিল, ফেসবুকীয় প্রেমটাও এমন হতে পারে!

প্রিয় লাইফ/ আর বি