
ঐতিহ্যবাহী জোড়বাংলা মন্দির। ছবি- লেখক
জোড় বাংলা মন্দির, যেখানে ইতিহাস কথা বলে!
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭, ০৭:০৫
(প্রিয়.কম) প্রিয় ভ্রমণ থেকে গিয়েছিলাম পাবনার জোড় বাংলা মন্দির পরিদর্শনে। পাবনা জোড় বাংলা মন্দিরের মুখ্য আকর্ষণটি হচ্ছে এর ছাদ। দেশে ও দেশের বাইরে অন্যান্য জোড় বাংলা মন্দিরের যে বৈশিষ্ট সেই একই বৈশিষ্ট এরও বিদ্যমান। দোচালা টিনের ঘরের চালের মতো করে তৈরি করা ছাড়া ছাদ। এপার বাংলা থেকে ওপার বাংলায় একই রকমের ছাদবিশিষ্ট বেশকিছু মন্দির দেখতে পাবেন। কান্তনগর জোড় বাংলা মন্দির, বিষ্ণুপুর জোড় বাংলা মন্দির, ঈশ্বরদী জোড় বাংলা মন্দির এরকম আরও অনেক জোড় বাংলা মন্দির আছে। প্রতিটি একই রকম দোচালা টিনের ঘরের চালের মত ছাদবিশিষ্ট। এর বেশ কিছু সংরক্ষিত হয়েছে। বাকিগুলা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
মন্দিরের কারুকার্য এবং মন্দিরের ফটক। ছবি- লেখক
এই মন্দিরটি পাবনা জেলার রাঘবপুর উপজেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এই জোড় বাংলা মন্দির। এই জোড় বাংলা মন্দিরের কোন শিলালিপি পাওয়া যায়নি বলে এর নির্মাতা, নির্মাণ সাল নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তবে স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে জোড় বাংলা মন্দির ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাণ করা হয়। আরও জনশ্রুতি আছে যে জোড় বাংলা মন্দিরের নির্মাতা ব্রজমোহন ক্রোড়ী নামের একজন তহসিলদার। যিনি ছিলেন মুর্শিদাবাদের নবাবের অধীনে।
পাবনা জোড় বাংলা মন্দিরের মালিকানা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর অধিগ্রহণ করেন। যার ফলাফলস্বরূপ পাবনার জোড় বাংলা মন্দির আজ অবধি দর্শনীয় স্থানের অবস্থান ধরে রাখতে পারছে। নির্মাণশৈলীতে অসাধারণ পাবনার জোড় বাংলা মন্দির। পুরো স্থাপনাটি একটি ইটের বেদীর উপর দাঁড় করানো। যার সাথে বিষ্ণুপুর জোড় বাংলা মন্দিরের অনেকটা মিল পাওয়া যায়।
অনন্য সব টেরাকোটা খচিত মন্দির। ছবি- লেখক
মন্দিরের সামনে রয়েছে তিনটি প্রবেশপথ আর প্রবেশ পথের দুই পাশে দু'টো বিশাল বিশাল স্তম্ভ। এই দু'টোই স্তম্ভ এবং প্রবেশপথগুলো এক সময় পুরোটাই টেরাকোটার কারুকার্যমন্ডিত ছিল। এখনও প্রায় পুরো মন্দিরটিতেই আপনি এ ধরনের টেরাকোটার অনন্য শৈলী দেখতে পাবেন। এখানে আশ্চর্যের বিষয় হলও দেয়ালের নকশা, আর টেরাকোটার কারুকার্য একেবারে পুরোপুরি ভাবে মিলে যাবে বাংলাদেশের আরেকটি ঐতিহ্য দিনাজপুরের কান্তজীউ মন্দিরের সাথে। মন্দিরের পেছন দিকে রয়েছে একটি বেরোবার পথ। মন্দিরের ভেতরে তেমন কোনো কারুকার্য দেখা যায় না।
যদি দেখতে যেতে চান পাবনার জোড় বাংলা মন্দির:
এটির অবস্থান পাবনা জেলা শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটারের উত্তর-পশ্চিমে রাঘবপুর উপজেলায়। দেশের যে কোনো জেলা থেকে পাবনার বাস করে চলে আসুন। পাবনা বাস-স্ট্যান্ডে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে পারবেন জোড় বাংলা মন্দিরে। রিক্সার ভাড়া নেবে মাত্র ২০ থেকে ২৫টাকা। আর যদি ঢাকা থেকে যেতে চান। তাহলে গাবতলি টেকনিক্যাল মোড় থেকে পাবনার বাস যেতে পারেন। পাবনার বাসের ভাড়া নন এসি ৪০০/- আর এসি বাসে যেতে পারেন ৫০০/- থেকে ৬৫০/- টাকার মধ্যে।
আনন্দময় হোক আপনার ভ্রমণ।
সম্পাদনাঃ ড. জিনিয়া রহমান,
ভ্রমণ সম্পর্কে আমাদের লেখা পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে। যে কোনো তথ্য জানতে মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। ভ্রমণ বিষয়ক আপনার যেকোনো লেখা পাঠাতে ক্লিক করুন এই লিংকে - https://www.priyo.com/post।