ছবি সংগৃহীত

শীত ফ্যাশনে ব্লেজার

শামীমা সীমা
সহ সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৭:২৮
আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৭:২৮

এবারের শীতে ফ্যাশন হোক ব্লেজারে।  মডেল: শাকিল রাজা, পোশাক: প্লাস পয়েন্ট।  ছবি: শামছুল হক রিপন, প্রিয়.কম

(প্রিয়.কম) চলছে পৌষ মাস। এখনও দেশে শীত জাঁকিয়ে বসেনি। কিন্তু তাই বলে কেনাকাটা হবে না, তা কিন্তু নয়। তরুণেরা ভারী কাপড় কিনতে শুরু করেছেন। শীত এসেছে বলে যে ফ্যাশনে ঘাটতি হবে, তা নয়। শুধু জিনস আর টি-শার্ট এই সময়ে চলবে না, ফলে বাড়তি পোশাক হিসেবে থাকতে পারে ব্লেজার। তাই বিভিন্ন মার্কেটে ও ফ্যাশন হাউজে এসেছে ফ্যাশনেবল ব্লেজার।  

ব্লেজারের যত বাহার-

তরুণদের চাহিদা মাথায় রেখে ব্লেজারেও এসেছে পরিবর্তন। ব্লেজারের কাপড়, কাট-ছাঁট, বেতাম, রং ইত্যাদি বিষয়ে এবার বৈচিত্র্যের ছোঁয়া লেগেছে বেশি। জিনস, চামড়া, সুতির বাইরে এবার নতুন এসেছে মখমলের জ্যাকেট বা ব্লেজার। যেহেতু আমাদের দেশে খুব কম সময়ের জন্যই জাঁকানো শীত পড়ে। তাই মাথা থেকে পা পর্যন্ত নিজেকে শীতের পোশাকে মুড়িয়ে রাখাটা পছন্দ করেন না ফ্যাশন-সচেতন তরুণেরা। অনেকেই ভেতরে একটা টি-শার্ট বা শার্ট পরে তার ওপরে পরেন ব্লেজার। পুরোদস্তুর আনুষ্ঠানিক ব্লেজার নয়, ক্যাজুয়াল ব্লেজারই বেশি চলে বাজারে। 

ডেনিম ব্লেজার-

ডেনিম কাপড়ের তৈরি নানা ধরনের ব্লেজার চলছে এবারও। মখমলের নকশা করা ব্লেজার এসেছে। একের ভেতর দুই অর্থাৎ অফিসে পরা যায় আবার বাইরে কোনো পার্টিতেও ঠিকমতো মানিয়ে যায়, এমন ব্লেজার কিনছেন অনেকে। জ্যাকেট বা ব্লেজারের ভেতরে আগে একটা সাধারণ কাপড় ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এবার সেখানে নকশার অংশ হিসেবেই দেখা যাচ্ছে বৈচিত্র্যময় কাপড়। অফিস, পার্টি কিংবা যেকোনো জায়গাতে বেড়াতে বের হলেই সাধারণত ব্লেজার পরছেন ছেলেরা। আবার সব সময় ফরমাল নয়, একটু ক্যাজুয়াল ধাঁচেও তৈরি হচ্ছে এখনকার ব্লেজারগুলো। 

শারীরিক গঠন বুঝে ব্লেজার- 

যেভাবে বা যেখানেই পরুন না কেন, ব্লেজারের কাটিং ও ফিটিংটা বেশ জরুরি। কাঁধ ঝুলে যাওয়া যেমন চলবে না, তেমনি আবার হাত যেখানে শেষ এর থেকে আধা ইঞ্চি মতো শার্টের কাফ দেখা যাওয়া চাই। ব্লেজারের ফ্যাশনে এখন চলছে স্লিম ফিট ফ্যাশন। দুই বা তিন বাটনের ব্লেজারই সব সময় চলছে। তবে এক বাটনের ব্লেজারও পরছেন ফ্যাশনেবল অনেকে। নিচে রাউন্ড শেপটাই এখন সবার পছন্দ।

পেছনে দুই একটি বোতাম ব্যবহার হচ্ছে এখনকার ফ্যাশনে। শারীরিক গঠন মোটা হলে এক বোতাম, চিকন ও মাঝারি গড়ন হলে দুই-তিন বোতাম দিয়ে ব্লেজার পরলে ভালো দেখাবে। তবে ব্লেজার পরার সময় শরীরের গঠন ও মুখের গড়ন বিবেচনা করা উচিত। উচ্চতা কম হলে স্ট্রাইপ ব্লেজার পরা ভালো। যাদের উচ্চতা বেশি, তাদের জন্য এক রঙের চেক ব্লেজার বেশি মানানসই । যারা মাঝারি গড়নের, তারা যে কোনোটিই পরতে পারেন। তবে মাথায় রাখতে হবে গাঢ় ব্লেজারের সঙ্গে হালকা রঙের শার্ট আর হালকা রঙের ব্লেজারের সঙ্গে গাঢ় রঙের শার্ট মানানসই। ব্লেজারের যে ভারিক্কি ভাব রয়েছে সে রকম তো আছেই; সঙ্গে রয়েছে একটু ভিন্ন ডিজাইন করা ব্লেজারও। সুতি কাপড়েও করা হচ্ছে ব্লেজার জ্যাকেট। 

ব্লেজার দর্জিবাড়ি-

কাপড় কিনে পছন্দের ডিজাইনের ব্লেজার বা কমপ্লিট বানাতে চাইলে যেতে হবে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড কিংবা রমনা ভবনে। দর্জির দোকানে কোট বানানোর ক্ষেত্রে ব্লেজারের কাপড় যাচাই-বাছাই করার অভিজ্ঞতা না থাকলে একদরের দোকানগুলো থেকেই কাপড় কেনা ভালো। স্বাভাবিক গড়নের একটি ব্লেজার বানাতে সাধারণত দুইগজ কাপড় লাগে। এক্ষেত্রে তিন হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা দামের কাপড় পাওয়া যাবে। এগুলোর মধ্যে চীনা ও ভারতীয় কাপড়েই বেশি।

এছাড়া ইতালি, ইংল্যান্ড ও অন্যান্য দেশের ব্র্যান্ডের কাপড়ও পাওয়া যায় ব্লেজার বানানোর জন্য। ঢাকার দর্জির দোকানগুলোর মধ্যে ফিট এলিগেন্স, ফপ’স, ফেরদৌস, সানমুন, রেমন্ড, টপটেনের দোকানগুলোতে পছন্দসই ব্লেজার বানাতে পারবেন। এক্ষেত্রে ব্লেজার বানানোর মজুরি গুণতে হবে সাড়ে তিন হাজার থেকে আট হাজার টাকান পর্যন্ত। কাজের মান ও জনপ্রিয়তা উপর ভিত্তি করে মজুরি কম-বেশি হতে পারে।

ব্লেজার কেনাকাটা-

বাজার ঘুরে ব্লেজার কিনতে চাইলে দরদাম সম্পর্কে একটু অভিজ্ঞতা নিয়ে গেলেই ভালো। ছেলেদের ব্লেজার এখন বাজারে মিলছে আট হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকায়। তবে কম দামের মধ্যেও অনেক ব্লেজার পাওয়া যায়। সাধারণ ফ্যাশনেবল ব্লেজারগুলো দুই হাজার টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

রাজধানীর ফ্যাশন হাউস ওটু, আর্টিস্টি, ফ্রিল্যান্ড, ক্যাটস আই, একস্ট্যাসি, স্মার্টেক্স, প্লাস পয়েন্ট, ইনফিনিটিসহ বিভিন্ন দোকানে পাবেন এগুলো। এছাড়া ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, নিউমার্কেট, বঙ্গবাজার, ইসলামপুর, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, রাজধানী সুপার মার্কেট, প্রিন্স প্লাজাসহ বিভিন্ন শপিং মলেও পাওয়া যাবে ব্লেজার।

ব্লেজার বাছাইয়ে বিবেচ্য-

- ব্লেজার বাছাইয়ে প্রথম শর্ত ফেব্রিক্স। সাধারণত উল ব্যালান্ডেড এবং রিংকেল ফ্রি ফেব্রিক্স ব্লেজার কিংবা কোটের জন্য ভালো।
- সেলাইয়ের ক্ষেত্রে ফিটিংস, ম্যাটেরিয়াল, সোলজার প্যাড, বাটন ইত্যাদি বিবেচনায় রাখতে হবে।
- কাপড়ের ববলিন আসবে কিনা? কালার প্যাড হয় কিনা? রিংকেল ফ্রি কিনা? যাচাই করে নিন।
- কেনার সময় প্রয়োজনীয়তা, কোথায় বা কোন অনুষ্ঠানে পরতে চান এবং আপনার গায়ের রঙের সঙ্গে ব্লেজারের কালারটি যায় কিনা এটাও বিবেচনা রাখতে হবে।

 সম্পাদনা: সোহেলুর রহমান