ছবি সংগৃহীত

প্রিয় সারভাইভাল টিপস: জরুরী অবস্থায় পানি বিশুদ্ধকরণ (কেমিক্যাল এর ব্যবহার) (পর্ব ৪)

খন্দকার ইশতিয়াক মাহমুদ
লেখক
প্রকাশিত: ০১ মে ২০১৭, ১৬:৩৬
আপডেট: ০১ মে ২০১৭, ১৬:৩৬

অনিরাপদ পরিষ্কার পানিতে পরিমাণ মত ট্যাবলেট আপনাকে দেবে নিরাপদ পানি। ছবি: সংগৃহীত।
 
(প্রিয়.কম): পানি বিশুদ্ধ করার নানা রকম পদ্ধতি আছে। কোনটায় সময় কম লাগে, কোনটায় বেশি, কোনটায় খরচ বেশি তো কোনটায় কম। আবার কোনটা ওজনদার পদ্ধতি, কোনটা হালকা। আপনি যখন একজন হাইকার অথবা ট্রেকার, তখন বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বিবেচনা করে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন পদ্ধতি আপনি ব্যবহার করবেন।
 
পানি বিশুদ্ধ করার জন্য বাজারে পাওয়া যায় ট্যাবলেট, যা তিন লিটার পানির জন্য একটি করে ব্যবহার করতে হয়। এই ট্যাবলেট পানিতে ছেড়ে দিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করলে আপনার পানি হয়ে যাবে যে কোন রকম অণুজীব মুক্ত। তার মানে পানিতে থাকা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া, যে কোন ক্ষতিকারক এবং রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব ধ্বংস হয়ে যাবে।
 
খাল-বিল-লেক এর পানি পরিষ্কার দেখালেও তাতে থাকতে পারে জীবাণু। ছবি: সংগৃহীত।
 
এই পানি বিশুদ্ধ করার কেমিক্যাল তরল আকারেও পাওয়া যায়, প্রতি লিটার পানিতে দুই ফোঁটা করে দিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় বিশুদ্ধ হবার জন্য।
 
এভাবে বিশুদ্ধ করা পানিতে হালকা কেমিক্যালের গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। সেটা স্বাভাবিক। এই ট্যাবলেট গুলো বানানো হয় পটাশিয়াম-পার-ম্যাঙ্গানেট অথবা আইওডিন নয়ত ক্লোরিন দিয়ে।
 
পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ট্যাবলেট একটি ভাল উপায় বটে, কিন্তু এই ট্যাবলেট সবসময় হাতের কাছে পাওয়া নাও যেতে পারে।
 
যদি জরুরী অবস্থা হয়, বা ট্যাবলেট পাওয়া না যায়, আপনি ব্যবহার করতে পারেন ব্লিচিং পাউডার। খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই, মাঝে মাঝে সাপ্লাই এর পানিতে একটা কড়া গন্ধ পাওয়া যায়, ওটাই ব্লিচিং পাউডারের গন্ধ। ব্লিচিং পাউডারে যে কেমিক্যাল থাকে, তা পানিতে মিশলে ক্লোরিন ছাড়তে থাকে এবং এই ক্লোরিন পানিতে থাকা সমস্ত অণুজীব ধ্বংস করবে। তবে এই পানিতে ব্লিচিং পাউডারের পরিমাণটা আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। বেশি হলে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আমরা ভবিষ্যতে কোন এক পোস্টে এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
 
ট্যাবলেট বা লিকুইড ড্রপ এর সুবিধা হল, আকারে ছোট, ওজনে হালকা, পরিমাপ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। সাথে থাকলে এক লিটার পানিতে একটা ট্যাবলেট ছেড়ে দিলেই হল। এক ঘণ্টা পরে আপনি চিন্তা মুক্তভাবে পানি পান করতে পারবেন।
 
পরিস্কার পানিতে মাপমত ওয়াটার পিউরিফায়ার ট্যাবলেট বা ড্রপ, ব্যাস। ছবি: সংগৃহীত।
 
প্রত্যন্ত কোন এলাকায় গেলে, যদি সুযোগ থাকে, প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত এই ট্যাবলেট বা লিকুইড ড্রপ। ওষুধের দোকান বা ফার্মেসীগুলোতে পাওয়া যেতে পারে এই জিনিস। না পাওয়া গেলে দোকানদারকে বললে আনিয়ে দেবে। কারণ জিনিসগুলো বেশি মানুষ কেনে না, তাই বিক্রি কম বলে সব দোকান এগুলো রাখে না।
 
এছাড়া ব্যবহার করতে পারেন ফিটকিরি। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই জিনিসটি পাওয়া যায়। তবে ফিটকিরির সমস্যা হল, এটা দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় অপেক্ষা করতে হয়। আর এর পরেও সবটা পানি পান করা যায় না, কেবল উপর থেকে দুই-তৃতীয়াংশ পানি নিরাপদ ভাবে সংগ্রহ করা যায়।
 
এছাড়া মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় যে মেডিসিনের পাইকারী বাজার রয়েছে, সেখানেও পাওয়া যেতে পারে এটা।
 
আগের পর্বগুলো:
 
সম্পাদনা: ড. জিনিয়া রহমান।
আপনাদের মতামত জানাতে ই-মেইল করতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়।